দুপুরের খাবার খাওয়ার পর ‘কাইলূলা’ করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত (২)
, ২১ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ৩০ ছানী, ১৩৯২ শামসী সন , ২৮ জুলাই, ২০২৪ খ্রি:, ১৩ শ্রাবণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ اُمِّ حَرَامٍ بِنْتِ مِلْحَانَ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهَا قَالَتْ اَتَانَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَالَ عِنْدَنَا فَاسْتَيْقَظَ وَهُوَ يَضْحَكُ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِاَبـِىْ وَاُمِّىْ مَا أَضْحَكَكَ؟ قَالَ رَاَيْتُ قَوْمًا مِنْ اُمَّتِىْ يَرْكَبُوْنَ هٰذَا الْبَحْرَ كَالْمُلُوْكِ عَلَى الْاَسِرَّةِ قُلْتُ ادْعُ اللهَ اَنْ يَّجْعَلَنِىْ مِنْهُمْ قَالَ فَاِنَّكِ مِنْهُمْ ثُمَّ نَامَ ثُمَّ اسْتَيْقَظَ وَهُوَ يَضْحَكُ فَسَاَلْتُهٗ فَقَالَ يَعْنِىْ مِثْلَ مَقَالَتِهٖ قُلْتُ ادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ قَالَ أَنْتِ مِنَ الْأَوَّلِيْنَ فَتَزَوَّجَهَا حَضْرَتْ عُبَادَةُ بْنُ الصَّامِتِ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ فَرَكِبَ الْبَحْرَ وَرَكِبَتْ مَعَهٗ
অর্থ: “হযরত উম্মে হারাম বিনতে মিলহান রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনার থেকে বর্ণিত। (তিনি বলেন) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের নিকট তাশরীফ মুবারক নিয়ে (খাওয়া দাওয়ার পর) কাইলূলা করলেন, এরপর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুত তাক্বরীর মুবারক (মুচকি হাসি মুবারক) প্রকাশ অবস্থায় জাগ্রত হলেন। আমি বললাম: ইয়া রসূলাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার মাতাপিতা আপনার জন্য কুরবান হোক, আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুত তাক্বরীর মুবারক প্রকাশের কারণ কী? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, আমি আমার উম্মতের একদল লোককে দেখলাম, তারা সাগরের বুকে আরোহণ (নৌ অভিযান) করছে, সিংহাসনের উপর বাদশাহদের ন্যায়। আমি বললাম, মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট দু‘আ মুবারক করুন, তিনি যেন আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন: আপনি তাদের মধ্যে থাকবেন। এরপর তিনি আবার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মুত্বমাইন্নাহ্ মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিদ্রা মুবারক-এ) গেলেন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুত তাক্বরীর মুবারক (মুচকি হাসি মুবারক) প্রকাশ অবস্থায় জাগ্রত হলেন। আমি উনাকে পুনরায় জিজ্ঞাসা করলাম এবং তিনি আগের মতই বললেন। আমি বললাম: মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট দু‘আ করুন, তিনি যেন আমাকে তাদের মধ্যে শামিল করেন। তিনি বললেন: আপনি প্রথম দলভুক্ত থাকবেন। তারপর হযরত উবাদা ইবনে ছমিত রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি উনাকে বিবাহ করলেন। এরপর তিনি সাগরে আরোহণ করে নৌ অভিযান করলেন। উনার সাথে (উনার সম্মানিতা আহলিয়া হযরত উম্মে হারাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা) তিনিও সাগরে (নৌযানে) আরোহণ করলেন। ” (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, আবূ দাঊদ শরীফ, নাসাঈ শরীফ, মুসনাদে আহমদ ৬/৩৬১, ছহীহ ইবনে হিব্বান ১৬/১৬১,সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ ৪/৩০২, মুসতাখরাজে আবী আওয়ানাহ্ ৮/৩৪৩, মু’জামুল কাবীর লিত্ব ত্ববারানী ১৮/৩০৮ ইত্যাদি)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত রয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ عُثْمَانَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ سَمِعْتُ حَضْرَتْ اِبْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُمَا اِذَا قِيْلَ لَهُ هَاجَرَ قَبْلَ أَبِيْهِ يَغْضَبُ قَالَ وَقَدِمْتُ أَنَا وَ حَضْرَتْ عُمَرُ عليه السلام عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَوَجَدْنَاهُ قَائِلًا فَرَجَعْنَا إِلَى الْمَنْزِلِ فَأَرْسَلَنِيْ حضرت الفاروق الاعظم عليه السلام وَ قَالَ اذْهَبْ فَانْظُرْ هَلْ اسْتَيْقَظَ فَأَتَيْتُهُ فَدَخَلْتُ عَلَيْهِ فَبَايَعْتُهُ ثُمَّ انْطَلَقْتُ إِلَى حضرت عُمَرُ عليه السلام فَأَخْبَرْتُهُ أَنَّهُ قَدْ اسْتَيْقَظَ فَانْطَلَقْنَا إِلَيْهِ نُهَرْوِلُ هَرْوَلَةً حَتَّى دَخَلَ عَلَيْهِ فَبَايَعَهُ ثُمَّ بَايَعْتُهُ
অর্থ: “হযরত আবূ উছমান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত ইবনে উমার রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে শুনেছি। উনাকে একথা বলা হলে যে, আপনি আপনার সম্মানিত পিতা উনার আগে হিজরত করেছেন, তিনি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করতেন। হযরত ইবনে উমার রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন, একবার আমি এবং আমার সম্মানিত পিতা সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ আমরা উভয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লøাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট হাযির হলাম। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘কাইলূলা’ করছেন এমন অবস্থায় পেলাম। এরপর আমরা আমাদের আবাসস্থলে ফিরে এলাম। কিছুক্ষন পর সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি আমাকে পাঠালেন এবং বললেন যান; গিয়ে দেখুন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জেগেছেন কিনা? আমি এসে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক-এ হাযির হলাম এবং উনার নিকট বায়’আত হলাম। তারপর সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নিকট এসে উনাকে সংবাদ দিলাম যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জেগেছেন। তখন আমরা উনার নিকট গেলাম দ্রুত বেগে। সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত হয়ে বায়’আত গ্রহণ করলেন। তারপর আমিও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাত মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক-এ) আবার বায়’আত গ্রহণ করলাম। ” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, উমদাতুল ক্বারী ১৭/৫৫, আত তাওদ্বীহ লি শরহিল জামিয়িছ ছহীহ ২০/৫৩১, আল কাওয়াকিবুদ দুরারী ১৫/১৩০, ইরশাদুস সারী ৬/২২৫, আল কাওছারুল জারী ৭/৯৯, মাছাবীহুল জামী’ ৭/৩৮৪ ইত্যাদি) (চলবে...)
-হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ঘুমানোর মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নতী তারতীব মুবারক -১
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হাত ও পায়ের নখ কাটার মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব মুবারক
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেসব দিনে গোসল করা ও গোসলে কি কি ব্যবহার করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
চিকিৎসা গ্রহণ করা খাছ সুন্নত মুবারক (২)
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
চিকিৎসা গ্রহণ করা খাছ সুন্নত মুবারক (১)
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৫)
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৪)
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৩)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (২)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইস্তিঞ্জার আদব ও ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করা সম্পর্কে (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












