নিষিদ্ধ মহিলা জামায়াত নিয়ে ধর্মব্যবসায়ী উলামায়ে সূ’দের বিভ্রান্তিকর ও জিহালতী বক্তব্যের জবাব
, ১৩ ছফর শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ০৯ ছালিছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ০৮ আগস্ট, ২০২৫ খ্রি:, ২৫ শ্রাবণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) মহিলাদের পাতা
সুওয়াল :
ডা. জাকির নায়েক এক প্রশ্নের উত্তরে বলেছে যে, কুরআনে এমন কোন দলীল নেই যা মহিলাদের মসজিদে যেতে নিষেধ করে। এমনকি কোন হাদীছও এমন নেই যেখানে বলা হয়েছে যে, মহিলারা মসজিদে যেতে পারবে না। বরং এর বিপরীতে অনেক হাদীছ আছে। সহীহ বুখারী শরীফ-এ আছে যখন তোমার স্ত্রী মসজিদে যাওয়ার অনুমতি চায় তখন তাদের নিষেধ করো না। (হাদীছ নং ৮৩২)
এমনকি সহীহ বুখারীতে আছে, যদি তোমার স্ত্রী রাতের বেলায়ও মসজিদে যেতে চায় তাহলে তাকে অনুমতি দাও। হাদীছ নং ৮২৪। মুসলিম শরীফ-এ আরও আছে, হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। মহিলাদের জন্য মসজিদে সবচেয়ে ভালো স্থান হচ্ছে তারা প্রথম কাতারে দাঁড়াবে আর পুরুষরা শেষ কাতারে দাঁড়াবে। অথবা পুরুষরা প্রথম কাতারে দাঁড়াবে আর মহিলাদের জন্য ভাল হলো শেষ কাতারে দাঁড়ানো। (বুখারী শরীফ ১ম খ-, হাদীছ নং ৮৮১; সূত্র ডাক্তার জাকির নায়েক উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর ৪/২৩৪, পিস পাবলিকেশন্স, ঢাকা)
জাওয়াব : (পূর্ব প্রকাশিতের পর)
বিরুদ্ধবাদীদের সমালোচনার জাওয়াব :
বর্তমানে আমাদের সমাজে কিছু পথভ্রষ্ট ব্যক্তি রয়েছে যারা মহিলাদেরকে মসজিদে নিয়ে যাওয়ার জন্য খুবই উৎসাহী। যেসব মহিলা পর্দা করে না তাদেরকে তারা পর্দার জন্য বলে না। কিন্তু যারা পর্দা করেন উনাদেরকে পর্দা থেকে বের করে পুরুষদের মাহফিলে নিয়ে যেতে যারপর নাই তৎপর। তারা মহান ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সমালোচনা করে বলে থাকে যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন মহিলাদেরকে মসজিদে যেতে বাধা প্রদান করতে নিষেধ করেছেন এবং কারো কাছে অনুমতি চাইলে তাকে অনুমতি দিতে বলেছেন। এখন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের এই ভিন্ন মত পোষণ করা গ্রহণীয় নয়। নাঊযুবিল্লাহ! সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যুগে যে সুন্নতটি চালু ছিল তার বিপরীতে কোন আলিম-উলামার কথা, কোন ফিকাহ বা ফতওয়ার কিতাবের ফতওয়া গ্রহণ করার অর্থ হবে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদর্শকে বাদ দিয়ে তাদেরকে বড় মনে করা। তাই আমরা এসব ফতওয়া মানি না। নাঊযুবিল্লাহ!
বিরুদ্ধবাদীদের এসব প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা করা যাক। এসব ব্যক্তিরা সুন্নতকে মুহব্বতকারীর দাবিদার বলেই এই অভিযোগ উত্থাপন করেছে। তারা চায়না যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সরাসরি হাদীছ শরীফ বা পবিত্র সুন্নত মুবারক বাদ দিয়ে অন্য কারো কথা মানা হোক। আর এটা কোন মু’মিন মুসলমানও চাইতে পারে না। কিন্তু কথা হলো, এই প্রশ্ন উত্থাপন করার আগে পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার সংজ্ঞা এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে জানতে হবে।
স্মরণ রাখা দরকার যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ক্বওল, ফে’ল ও তাকরীর দ্বারা যা প্রমাণিত সবই পবিত্র সুন্নত মুবারক বলে গণ্য এবং উনার অনুসরণ করা ওয়াজিব। কেননা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একটা ছহীহ হদীছ শরীফ যা আবূ দাঊদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমদ ইত্যাদি হাদীছ শরীফ উনাদের কিতাবসমূহে বর্ণিত হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, আমার পর যারা জীবিত থাকবে তারা অনেক মতবিরোধ দেখতে পাবে এমতাবস্থায় তোমাদের জন্য জরুরী হলো তোমরা আমার পবিত্র সুন্নত মুবারক উনাকে এবং আমার পরে খুলাফায়ে রাশেদীন আলাইহিমুস সালাম উনারা যেসব পবিত্র সুন্নত মুবারক জারি করবেন সেগুলিকে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরবে যেমন নাকি মাড়ির দাঁত দিয়ে কোন জিনিস মজবুতভাবে ধরা হয়। (আবূ দাঊদ শরীফ- ২/৬৩৫)
তিরিমিযী শরীফ উনার মধ্যে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণিত হয়েছে। বর্ণনাকারী হযরত হুযাইফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, জানিনা আমি কতদিন তোমাদের মধ্যে থাকব। আমার পরে তোমরা সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম এবং হযরত ফারুক্বে আযম আলাইহিস সালাম উনাদের তরীক্বা অনুসরণ করবে।
এখানে লক্ষণীয় যে, প্রথম পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খুলাফায়ে রাশিদীন আলাইহিমুস সালাম উনাদের অনুসরণ করাকে নিজের অনুসরণ করা বলে ঘোষণা করেছেন। আর দ্বিতীয় পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বিশেষভাবে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীকে আকবর আলাইহিস সালাম এবং হযরত ফারুক্বে আযম আলাইহিস সালাম উনাদের অনুসরণ করার আদেশ মুবারক দিয়েছেন।
অনুরূপভাবে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম, হযরত তাবিয়ীনে কিরাম, হযরত তাবি-তাবিয়ীন, ইমাম-মুজতাহিদ, ফুক্বাহায়ে কিরাম, আওলিয়ায়ে কিরাম উনারাও যদি কোন একটি বিষয়ের উপর ইজমা করেন তাহলে সেটাও সুন্নত বলে বিবেচিত হবে। নাজাতের জন্য সেটার উপর আমল করাও জরুরী। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে মুক্তি প্রাপ্ত জামায়াতের পরিচয় দিতে যেয়ে বলা হয়েছে, আমি এবং আমার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম যে তরীক্বার উপর আছি সে তরীক্বা অনুসরণ করলেই মুক্তি পাওয়া যাবে। (তিরমিযী শরীফ- ২/১০২)
তাছাড়া হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম এবং হযরত তাবিয়ীনে কিরাম উনাদের যুগকে খইরুল কুরুন তথা শ্রেষ্ঠ যুগ বলে অভিহিত করা হয়েছে।
(মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ থেকে সংকলিত)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (১)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












