নিষিদ্ধ মহিলা জামায়াত নিয়ে ধর্মব্যবসায়ী উলামায়ে সূ’দের বিভ্রান্তিকর ও জিহালতী বক্তব্যের জবাব
, ০১ আগস্ট, ২০২৫ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) মহিলাদের পাতা
ডা. জাকির নায়েক এক প্রশ্নের উত্তরে বলেছে যে, কুরআনে এমন কোন দলীল নেই যা মহিলাদের মসজিদে যেতে নিষেধ করে। এমনকি কোন হাদীছও এমন নেই যেখানে বলা হয়েছে যে, মহিলারা মসজিদে যেতে পারবে না। বরং এর বিপরীতে অনেক হাদীছ আছে। সহীহ বুখারী শরীফ-এ আছে যখন তোমার স্ত্রী মসজিদে যাওয়ার অনুমতি চায় তখন তাদের নিষেধ করো না। (হাদীছ নং ৮৩২)
এমনকি সহীহ বুখারীতে আছে, যদি তোমার স্ত্রী রাতের বেলায়ও মসজিদে যেতে চায় তাহলে তাকে অনুমতি দাও। হাদীছ নং ৮২৪। মুসলিম শরীফ-এ আরও আছে, হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। মহিলাদের জন্য মসজিদে সবচেয়ে ভালো স্থান হচ্ছে তারা প্রথম কাতারে দাঁড়াবে আর পুরুষরা শেষ কাতারে দাঁড়াবে। অথবা পুরুষরা প্রথম কাতারে দাঁড়াবে আর মহিলাদের জন্য ভাল হলো শেষ কাতারে দাঁড়ানো। (বুখারী শরীফ ১ম খন্ড, হাদীছ নং ৮৮১; সূত্র ডাক্তার জাকির নায়েক উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর ৪/২৩৪, পিস পাবলিকেশন্স, ঢাকা)
জাওয়াব :
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
মহিলারা স্বীয় ঘরে একা নামায পড়ার ফযীলত সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَاةُ الْمَرْأَةِ وَحْدُهَا تَفْضُلُ عَلٰى صَلَاتِهَا فِي الْجَمْعِ خَمْسًا وَّعِشْرِينَ دَرَجَةً
অর্থ : হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন, মহিলাদের জামায়াতে নামায পড়ার চেয়ে ঘরে একা নামায পড়ার মধ্যে পঁচিশগুণ ফযীলত বেশি রয়েছে। (দায়লামী শরীফ ২য় খন্ড: ৩৮৯ পৃষ্ঠা)
সুতরাং মা-বোনেরা সাবধান! পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের বিরোধিতা করে ধ্বংস ডেকে আনবেন না।
বর্তমানে অধিকাংশ মহিলারাই পর্দা করেনা। বাড়িতে গায়রে মাহরাম এবং দেবর-ভাসুরের সাথে পর্দা করছে না, যা কিনা ফরয। অথচ তারাই আবার অধিক ছওয়াবের আশায় উৎসাহে মসজিদে, ঈদগাহে উপস্থিত হচ্ছে। যা কিনা মুস্তাহাবও নয়। তাহলে এটা কি সম্মানিত শরীয়ত উনার সাথে পরিহাসের শামিল নয়? এই স্ববিরোধিতার কী অর্থ? ফরয পর্দা বাদ দিয়ে নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি এত আগ্রহ কেন? হযরত মহিলা ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুন্না যাঁরা বেশি বেশি ছওয়াব অর্জনের জন্য প্রতিযোগিতা করতেন উনারাও হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কথা মেনে নিয়ে মসজিদে নববী শরীফ উনার মধ্যে উনার পিছনে নামায পড়া বাদ দিয়ে নিজেদের বাড়িতে নামায পড়েছেন। সেক্ষেত্রে উনাদের শান মান ও মর্যাদা মুবারক সম্পর্কে গুরুত্ব না দিয়ে এ যুগের মা বোনদের মসজিদে আর ঈদগাহে যাওয়ার প্রবণতাটা সত্যিই দুঃখজনক।
ফতওয়ার বিখ্যাত কিতাব বাদায়েউস সানা’তে মহিলাদের জুমুয়া এবং ঈদের জামায়াতে শরীক হওয়া সম্মন্ধে যা বলা হয়েছে তা প্রণিধানযোগ্য। সেখানে জুমুয়ার জামায়াতে শরীক হওয়া সম্বন্ধে বলা হয়েছে, মহিলারা জুমুয়ায় শরীক হবে না। কেননা তারা পারিবারিক কাজে মশগুল থাকে, তাছাড়া পুরুষদের সমাবেশে মহিলাদের বের হওয়াও নিষেধ। তাদের এ বের হওয়াটা ফিতনার কারণ হয়, তাই এই হুকুম। এ কারণেই তাদের জুমুয়ার এবং পাঁচ ওয়াক্তের জামায়াতে হাজির হওয়া মাফ। হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার উপর এবং ক্বিয়ামত দিবসের উপর ঈমান রাখে তার জন্য জুমুয়া ওয়াজিব কিন্তু মুসাফির, গোলাম, শিশু এবং মহিলা ও অসুস্থ ব্যক্তি ব্যতীত। (১/২৫৮) এই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে স্পষ্ট বলে দেয়া হয়েছে যে, মহিলাদের জন্য জুমুয়ার নামায নেই। ঈদের জামায়াতে শরীক হওয়া সম্বন্ধে বলা হয়েছে, এ ব্যাপারে সকলেই একমত যে, যুবতী মহিলাদের জুমুয়ার নামাযে, ঈদের নামাযে এবং অন্য যে কোন নামাযে জামায়াতে হাজির হওয়ার অনুমতি নেই। কেননা মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন-
وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ
অর্থাৎ “তোমরা স্বীয় ঘরে অবস্থান করো।” এখানে অবস্থান করার হুকুম দিয়ে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। তাছাড়া তাদের বাইরে বের হওয়াটা নিঃসন্দেহে ফিতনার কারণ। আর ফিতনা হলো হারাম, যে জিনিস হারাম পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায় সেটাও হারাম।
কেননা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, মহিলাদের নামায স্বীয় বাড়িতে তাদের মসজিদে পড়ার চেয়ে উত্তম। আর ঘরের নামায বাড়ির নামাযের চেয়ে উত্তম। আর তাদের গোপন প্রকোষ্ঠের নামায সাধারণ ঘরে নামাযের চেয়ে উত্তম। (১/২৭৫)
উল্লেখ্য যে, আলোচ্য কিতাবের লেখক আল্লামা হযরত আলাউদ্দীন কাসানী রহমতুল্লাহি আলাইহি আজ থেকে প্রায় এক হাজার বছর পূর্বে জন্মগ্রহণ করেন। ৫৮৭ হিজরীতে উনার ওফাত হয়। তিনি ছিলেন সে যুগের বিরাট বড় আলিম। উনার ইলমের এতই সুখ্যাতি ছিল যে, তিনি মালিকুল উলামা অর্থাৎ উলামায়ে কিরামের বাদশাহ উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
(মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ থেকে সংকলিত)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যারা মানহানী করবে, তাদের একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। তাদের তাওবা গ্রহণযোগ্য হবে না
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
إِنَّ الَّذِينَ يُحَادُّونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ أُولَئِكَ فِي الْأَذَلِّينَ
অর্থ: “নিশ্চয়ই যারা মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের বিরোধিতা করবে, তারা লাঞ্ছিতদের অন্তর্ভুক্ত।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা মুজাদালাহ্ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২০)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (৯)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৩)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












