বুলন্দী শান মুবারক
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সাখাওয়াতী বা দানশীলতা মুবারক
(গত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফের পর)
, ১২ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৩ হাদী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ২২ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রি:, ০৯ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ

খ্বালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার যেমন অসংখ্য-অগণিত ছিফত মুবারক রয়েছেন, ঠিক একইভাবে উনার মহাসম্মানিত মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারও অসংখ্য-অগণিত ছিফত মুবারক রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার অসংখ্য ছিফত মুবারক উনাদের মধ্যে একখানা মহাসম্মানিত ছিফত মুবারক হচ্ছেন ‘আজওয়াদুন নাস’ বা সর্বশ্রেষ্ঠ দানশীল। সুবহানাল্লাহ! তিনি বিক্ষিপ্ত বাতাসের চেয়েও অধিক গতিতে দান করতেন। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্পৃক্ত কোন বিষয়ই কায়িনাতের কারো পক্ষে বর্ণনা করা সম্ভব নয়। যিনি যখনই উনার সাথে সম্পৃক্ত কোন বিষয় আলোচনা করেছেন, বর্ণনা করেছেন তিনিই সম্মানিত হয়েছেন, সম্মান লাভ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তাই নিম্নে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার আলোকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সাখাওয়াতী বা দানশীলতা মুবারক উনার কিঞ্চিত পরিমাণ বর্ণনা করা হলো:
তিনি এতো অধিক দান করতেন যে, বিদ্বেষ পোষণকারীর কাছেও সবচেয়ে মুহব্বতের ব্যক্তিত্ব মুবারক হয়ে যেতেন:
পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتِ ابْنِ شِهَابٍ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ غَزَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ غَزْوَةَ الْفَتْحِ فَتْحِ مَكَّةَ ثُـمَّ خَرَجَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِـمَنْ مَعَهٗ مِنَ الْمُسْلِمِينَ فَاقْتَتَلُوا بِـحُنَيْنٍ فَنَصَرَ اللهُ دِيْنَهٗ وَالْمُسْلِمِيْنَ وَاَعْطَى رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَئِذٍ حَضْرَتْ صَفْوَانَ بْنَ أُمَيَّةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ مِائَةً مِّنَ النَّعَمِ ثُـمَّ مِائَةً ثُـمَّ مِائَةً قَالَ اِبْنُ شِهَابٍ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ حَدَّثَنِـىْ حَضْرَتْ سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ رَضِىَ اللهُ تعالى عَنْهُ اَنَّ حَضْرَتْ صَفْوَانَ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ وَاللهِ لَقَدْ اَعْطَانِـىْ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا اَعْطَانِـىْ وَاِنَّهٗ لَاَبْغَضُ النَّاسِ اِلَـىَّ فَمَا بَرِحَ يُعْطِينِـىْ حَتَّى اِنَّهٗ لَاَحَبُّ النَّاسِ اِلَـىَّ.
অর্থ: “হযরত ইবনে শিহাব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মক্কা শরীফ বিজয় করেন। এরপর উনার সাথে যে সব মুসলিম (হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম) উনারা ছিলেন উনাদেরকে নিয়ে তিনি বের হন এবং উনারা হুনাইনের যুদ্ধ করেন। এ যুদ্ধে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার সম্মানিত দ্বীন এবং মুসলমানদেরকে সাহায্য করেন (উনারা বিজয় লাভ করেন)। আর সেদিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত সাফওয়ান ইবনে উমাইয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে একশত উট দান করেন। এরপর একশ’ উট, পুনরায় আরও একশত উট প্রদান করেন। সুবহানাল্লাহ! বর্ণনাকারী হযরত ইবনে শিহাব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত সা’ঈদ ইবনে মুসাইয়্যাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি আমাকে বলেছেন যে, হযরত সাফওয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে দান করলেন এবং এমন পরিমাণে আমাকে দান করলেন যে, তিনি আমার কাছে (ঈমান গ্রহণের পূর্বে) সবচেয়ে অপছন্দনীয় ব্যক্তিত্ব মুবারক ছিলেন। অতঃপর তিনি আমাকে অবিরাম দান করতে থাকলেন এমনকি আমার নিকটে সবচেয়ে মুহব্বতের ব্যক্তিত্ব মুবারক হয়ে গেলেন। সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ, হাদীছ শরীফ নং ৫৯১৬)
তিনি বিক্ষিপ্ত বাতাসের চেয়েও অধিক দ্রুত দান করতেন:
পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُمَا قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَجْوَدَ النَّاسِ بِالْـخَيْرِ وَكَانَ اَجْوَدَ مَا يَكُوْنُ فِـىْ شَهْرِ رَمَضَانَ اِنَّ جِبْرِيْلَ عَلَيْهِ السَّلاَمُ كَانَ يَلْقَاهُ فِـىْ كُلِّ سَنَةٍ فِـىْ رَمَضَانَ حَتَّى يَنْسَلِخَ فَيَعْرِضُ عَلَيْهِ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْقُرْانَ فَإِذَا لَقِيَهُ جِبْرِيلُ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَجْوَدَ بِالْـخَيْرِ مِنَ الرِّيحِ الْمُرْسَلَةِ
অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কায়িনাত মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ দানশীল ছিলেন। তবে পবিত্র মাহে রমাদ্বান শরীফ মাসে উনার দানের মাত্রা আরো বেড়ে যেতেন। কারণ হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি প্রতি বছর রমাদ্বান শরীফ মাসে উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারকে আসতেন। আর পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস শেষ হওয়া পর্যন্ত তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত মুবারক শুনতেন। যখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র ছোহবত মুবারকে আসতেন তখন তিনি বিক্ষিপ্ত বাতাসের চাইতেও অধিক দ্রুত দান মুবারক করতেন। ” সুবহানাল্লাহ! (মুসলিম শরীফ, হাদীছ শরীফ নং ৫৯০৩)
বর্তমান যামানায়ও আমরা দেখতে পাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অদ্বিতীয় কায়িম-মাক্বাম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আখাছ্ছুল খাছ আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনিও অবারিত ধারায় দান মুবারক করে যাচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদের মুবারক অনুসরণে আমাদেরকেও অনুরূপ দান করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
-মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
১৩ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের জন্য আক্বীক্বাহ্ মুবারক করা খাছ সুন্নত মুবারক (১৩)
১৩ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
১২ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহাসম্মানিত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের জন্য আক্বীক্বাহ্ মুবারক করা খাছ সুন্নত মুবারক (১২)
১২ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
১১ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহাসম্মানিত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের জন্য আক্বীক্বাহ্ মুবারক করা খাছ সুন্নত মুবারক (১১)
১১ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করতে হবে অনন্তকালব্যাপী
১১ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বতামুন নাবিয়্যীন, নূরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
১০ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহাসম্মানিত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের জন্য আক্বীক্বাহ্ মুবারক করা খাছ সুন্নত মুবারক (১০)
১০ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তরফ থেকে সম্মানিত কুরবানী মুবারক দেয়া প্রত্যেক উম্মতের জন্য ফরযে আইন (১১)
১০ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ৬ খানা বিশেষ বুলন্দী শান মুবারক
১০ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বতামুন নাবিয়্যীন, নূরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০৯ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)