ফতওয়া:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মানহানিকারীর একমাত্র শরঈ শাস্তি হচ্ছে ‘মৃত্যুদন্ড’ (৬)
, ১৮ ছফর শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১৪ ছালিছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ১৩ আগস্ট, ২০২৫ খ্রি:, ৩০ শ্রাবণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
(পূর্বপ্রকাশিতের পর)
যিনি খ্বাালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন-
وَالَّذِيْنَ يُؤْذُوْنَ رَسُوْلَ اللهِ لَـهُمْ عَذَابٌ اَلِيْمٌ
অর্থ: “আর যারা মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়, তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। ” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা তাওবা শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬১)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে কাট্টা কাফির আবূ রফেকে হত্যা করার ঘটনাটি দলীল হিসেবে উল্লেখ করা হয়। হিজাজের কুখ্যাত ইহুদী ব্যবসায়ী কাট্টা কাফির আবূ রফেও ছিলো কা’ব বিন আশরাফের মতোই দুরাচার ও কঠিন লা’নতগ্রস্ত। সে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান মুবারক উনার খিলাফ নানা অবমাননাকর ও বেআদবীমূলক কথা-বার্তা বলতো এবং অশ্লীল-অশালীন কবিতা রচনা করতো। না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! শুধু তাই নয়; প্রচুর টাকা-পয়সা খরচ করে তার বাড়িতে, হেজাজের বড় বড় মোড়ে মোড়ে, বাজারে বাজারে লোকজন জমা করে নাচ-গানের আসর করে নর্তকী ও গায়িকাদেরকে নিয়ে এই সকল কুফরীমূলক কবিতাগুলো পাঠ করতো এবং শরাব পান করতো। না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! না‘ঊযুবিল্লাহ! তাই, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তার শরঈ শাস্তি মৃত্যুদন্ড ঘোষণা করেন। সুবহানাল্লাহ! কারণ,
وَكَانَ أَبُو رَافِعٍ يُؤْذِي رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيُعِينُ عَلَيْهِ
“নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এই ইহুদী আবূ রফে কষ্ট দিতো এবং এই উনার বিরুদ্ধে লোকদের সহযোগিতা করতো। ” না‘ঊযুবিল্লাহ!
বুখারী শরীফ, বাইহাক্বী শরীফ, ফাতহুল বারী, উমদাতুল ক্বারী, শারহুয যারক্বানীসহ আরো অন্যান্য কিতাবে রয়েছে, তারপর বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আতীক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি কাট্টা কাফির আবূ রফেকে অত্যন্ত সুকৌশলে হত্যা করেন। তাকে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রতি দাওয়াতও দেননি। কেননা, সে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দিয়েছে। আর উনাকে যারা কষ্ট দিবে, তাদের একমাত্র শরঈ শাস্তি হচ্ছে মৃত্যুদন্ড। তাদের তওবার কোনো সুযোগ নেই। সুবহানাল্লাহ!
হযরত ইমাম কাযী আবুল ফযল ‘আয়ায রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন-
فَدَلَّ اَنَّ قَتْلَهٗ اِيَّاهُ لِغَيْرِ الْاِشْرَاكِ بَلْ لِلْاَذٰى وَكَذٰلِكَ قَتَلَ اَبَا رَافِعٍ قَالَ حَضْرَتْ اَلْبَرَاءُ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ وَكَانَ يُؤْذِىْ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيُعِيْنُ عَلَيْهِ
অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, কা’ব বিন আশরাফকে র্শিক করার কারণে হত্যা করা হয়নি, বরং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়ার কারণে হত্যা করা হয়েছে। ইহুদী আবূ রফেকেও একই কারণে হত্যা করা হয়েছে। হযরত বারা বিন আযিব রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু তিনি তার সম্পর্কে বলেন,
وَكَانَ يُؤْذِىْ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيُعِيْنُ عَلَيْهِ
“সে মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দিতো এবং উনার বিরুদ্ধে উনার শত্রুদেরকে সাহায্য করতো। ’ না’ঊযুবিল্লাহ! (আশ শিফা ২/২২১)
অনুরূপভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয়ের দিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইবনে খতাল ও তার দুই দাসীকে হত্যা করার জন্য সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দেন, যারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ব্যঙ্গ-বিদ্রƒপ করে কবিতা আবৃত্তি করতো। না’ঊযুবিল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার গিলাফ মুবারক উনার সাথে ঝুলন্ত থাকা সত্ত্বেও ইবনে খতালকে মৃত্যুদন্ড থেকে রেহাই দেয়া হয়নি। যেমন- বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মুয়াত্ত্বায়ে ইমাম মালেক, আবূ দাঊদ, তিরমিযীসহ আরো অন্যান্য কিাতবে এসেছে,
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ دَخَلَ مَكَّةَ عَامَ الْفَتْحِ وَعَلٰى رَاْسِهِ الْمِغْفَرُ فَلَمَّا نَزَعَهٗ جَاءَهُ رَجُلٌ فَقَالَ اِبْنُ خَطَلٍ مُتَعَلِّقٌ بِاَسْتَارِ الْكَعْبَةِ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اُقْتُلُوْهُ
অর্থ: “আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ বিজয়ের পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল হুদা মুবারক-এ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাথা মুবারক-এ) শিরস্ত্রাণ পরিহিত অবস্থায় (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে) প্রবেশ করেন। যখন তিনি তা খুলে ফেললেন, এক ব্যাক্তি এসে বলল, ইবনু খতাল মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কা’বা শরীফ উনার গিলাফ মুবারক উনার সাথে ঝুলে আছে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তাকে হত্যা করুন, তার শরঈ শাস্তি হচ্ছে মৃত্যুদন্ড, তা প্রদান করুন। ”
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে মানহানীকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৩০)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৫)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি তিনজন উনাদের মুহব্বত ফরয করে দিয়েছেন-
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩০)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৪)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইত্তিবা বা অনুসরণ করার ক্ষেত্রে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কোন মেছাল নেই
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (২৯)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৩)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মাওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (২)
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












