ফতওয়া:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মানহানিকারীর একমাত্র শরঈ শাস্তি হচ্ছে ‘মৃত্যুদন্ড’ (৮)
, ১৫ আগস্ট, ২০২৫ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
(পূর্বপ্রকাশিতের পর)
সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত খিলাফতকালে কিছু মুসলিম শিশু মিলে এক খ্রিষ্টান যাজককে হত্যা করেন। কারণ, সেই যাজক নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মানহানি করেছিলো। বিষয়টি সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার কাছে পেশ করা হয়। বর্ণনাকারী বলেন,
فَوَاللهِ مَا فَرِحَ بِفَتْحٍ وَلَا غَنِيْمَةٍ كَفَرْحَتِهٖ بِقَتْلِ الْغِلْمَانِ لِذٰلِكَ الْاُسْقُفِ وَقَالَ اَلْاٰنَ عَزَّ الْاِسْلَامُ اَنَّ اَطْفَالًا صِغَارًا شُتِمَ نَبِيُّهُمْ فَغَضِبُوْا لَهٗ وَانْتَصَرُوْا فَاُهْدِرَ دَمُ الْاُسْقُفِ
“মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি কখনো কোনো বিজয় বা গনীমতের উপর এতটা আনন্দিত হননি, যতটা আনন্দিত হয়েছিলেন এই শিশুদের হাতে ঐ যাজকের হত্যার সংবাদ শুনে। সুবহানাল্লাহ! তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ‘এখন সম্মানিত দ্বীন ইসলাম পরিপূর্ণ সম্মানের অধিকারী হয়েছেন, যখন শিশু বাচ্চারাও তাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নবী-রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য শুনে তা সহ্য করেনি; বরং ক্ষুব্ধ হয়েছে ও প্রতিশোধ নিয়েছে। ’ অতঃপর তিনি সেই যাজকের রক্তকে হদর (মূল্যহীন) ঘোষণা করেন। ” সুবহানাল্লাহ! (আল মুস্তাত্বরাফ ২/৩৪, আস সাইফুল মাসলূল ইত্যাদি)
এ কারণে হযরত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম ফতওয়া দিয়েছেন,
اَجْمَعَ الْعُلَمَاءُ اَنَّ شَاتِـمَ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْمُتَنَقِّصَ لَهٗ كَافِرٌ وَالْوَعِيْدُ جَارٍ عَلَيْهِ بِعَذَابِ اللهِ لَهٗ وَحُكْمُهٗ عِنْدَ الْاُمَّةِ الْقَتْلُ وَمَنْ شَكَّ فِـىْ كُفْرِهٖ وَعَذَابِهٖ كَفَرَ
অর্থ: “সমস্ত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনারা এই বিষয়ে ইজমা’ করেছেন যে, নিঃসন্দেহে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারী, উনার মর্যাদাহননকারী, মানহানিকারী ব্যক্তি কাফির এবং তার জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। তার ব্যাপারে সমস্ত উম্মত উনাদের ফয়সালা হলো, তাকে শরঈ শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদন্ড দিতে হবে। আর যে ব্যক্তি এ ধরণের লোকদের কাফির হওয়ার ব্যাপারে এবং শাস্তিযোগ্য হওয়ার বিষয়ে (অর্থাৎ তার একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদন্ড হওয়ার বিষয়ে) সন্দেহ পোষণ করবে, সেও কাফির হবে (এবং তাকেও শরঈ শাস্তিস্বরূপ মৃত্যুদন্ড দিতে হবে)। ” সুবহানাল্লাহ! (আশ শিফা ২/২১৫, আস সাইফুল মাসলূল ১২০ নং পৃষ্ঠা, নিহায়াতুস সুওয়াল ২৬১ নং পৃষ্ঠা)
মূল ফতওয়া হলো- মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ, সম্মানিত ইজমা শরীফ এবং সম্মানিত ক্বিয়াস শরীফ উনাদের আলোকে সম্মানিত শরীয়ত মুবারক উনার ফয়সালা মুবারক হচ্ছেন, যে ব্যক্তি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, আকরামুল আউওয়ালীন ওয়াল আখিরীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নিয়ে অথবা উনার সংশ্লিষ্ট যে কোনো বিষয় মুবারক নিয়ে বিন্দু থেকে বিন্দুতমও চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করবে অর্থাৎ উনার মহাসম্মানিত শান মুবারক উনার খিলাফ কোনো বক্তব্য পেশ করবে, বা কোনো শব্দ ব্যবহার করবে অথবা কোনো কাজ করবে, অর্থাৎ যে কোনোভাবেই হোক না কেনো উনার মানহানি করার চেষ্টা করবে, সে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে গাল-মন্দকারী হিসেবে, উনার মানহানিকারী হিসেবে সাব্যস্ত হবে। না‘ঊযুবিল্লাহ! তার একমাত্র শরঈ শাস্তি হলো মৃত্যুদন্ড। সে নামধারী মুসলমান হোক বা কাফির হোক অথবা নাস্তিক হোক কিংবা যেকোনো ধর্মেরই অনুসারী হোক না কেন। তার তওবা গ্রহণযোগ্য হবে না। এমনকি যারা তাকে সমর্থন করবে, তাদেরও একমাত্র শরঈ শাস্তি মৃত্যুদন্ড। এ মৃত্যুদন্ড থেকে রেহাই পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
অতএব, ‘নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য শুনে যেই দ্বীনদার আশিকে রসূল তিনি বরদাশত করতে না পেরে ঐ কুলাঙ্গারকে আঘাত করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ’ সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে তিনি অপরাধী নন। এদেশের সরকার, আদালত ও প্রশাসনের উচিত উক্ত আশিকে রসূল উনার এই ঈমানী হিম্মতের যথাযথ মূল্যায়ন করা এবং উনার পূর্ণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা ও উনাকে বেকসুর খালাছ প্রদান করা এবং তার পাশাপাশি কথিত ইমাম নামধারী ঐ গোস্তাখে রসূল ও কুলাঙ্গারকে গ্রেফতার করে হাজতে প্রবেশ করানো ও তার শরঈ শাস্তি হচ্ছে মৃত্যুদন্ড, তা প্রদান করা। আর জনগণের ঈমানী দায়িত্ব হচ্ছে উক্ত কাজে পূর্ণ সমর্থন করা এবং সার্বিক সহযোগিতা করা।
কাজেই, প্রত্যেক মুসলমান পুরুষ-মহিলা, জিন-ইনসান, ছোট-বড়, সকলের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে উপরোক্ত বিষয়ে ইলিম অর্জন করে নিজের সম্মানিত ঈমান হিফাযত করা।
খ্বাালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সবাইকে সেই তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৬)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে ব্যবহৃত একখানা শব্দ মুবারক পবিত্র “নূরুন নাজাত” মুবারক উনার ব্যাপকতা ও বিশালতা
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে মানহানীকারীদের যুগে যুগে ভয়াবহ পরিণতি (৩০)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৫)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি তিনজন উনাদের মুহব্বত ফরয করে দিয়েছেন-
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৩০)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইজতিহাদ সংক্রান্ত মওযূ হাদীছ ও তার খন্ডনমূলক জবাব (৪)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ইত্তিবা বা অনুসরণ করার ক্ষেত্রে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কোন মেছাল নেই
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (২৯)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












