নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি মুহব্বত, আদব, তা’যীম-তাকরীম মুবারক উনার কতিপয় দৃষ্টান্ত (১)
, ৩০ ছফর শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৬ ছালিছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৫ আগস্ট, ২০২৫ খ্রি:, ১০ ভাদ্র, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
মহাসম্মানিত হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهَ وَسَلَّمَ لَا يُؤْمِنُ اَحَدُكُمْ حَتّٰى اَكُوْنَ اَحَبَّ اِلَيْهِ مِنْ وَّالِدِهِ وَوَلَدِهِ وَالنَّاسِ اَجْمَعِيْنَ
অর্থ: “খাদিমু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা কেউই ততক্ষণ পর্যন্ত মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তোমাদের নিকট তোমাদের সন্তান-সন্ততি, পিতা-মাতা এবং অন্য সমস্ত লোকদের চেয়ে অধিক প্রিয় না হবো। ” (বুখারী শরীফ: হাদীছ শরীফ নং ১৫, মুসলিম শরীফ: হাদীছ শরীফ নং ১৭৮, মুসনাদে আহমদ, মুসনাদে আবী ইয়া’লা ইত্যাদি)
অন্য বর্ণনায় রয়েছে, নিজের মাল-সম্পদ ও জান থেকেও বেশি মুহব্বত করতে হবে। মূল কথা হচ্ছে একজন ব্যক্তিকে তার সমস্ত কিছু- অর্থাৎ পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি, আত্মীয়-স্বজন, সমস্ত মানুষ, নিজের ধন-সম্পদ এমনকি নিজের জান থেকেও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বেশি মুহব্বত করতে হবে। অন্যথায় কস্মিনকালেও কেউ ঈমানদার হতে পারবে না।
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা ছিলেন এই হাদীছ শরীফ উনার হাক্বীক্বী মিছদাক্ব। সুবহানাল্লাহ! উনাদের জবান এবং অন্তর মুবারক এক ছিলেন। অর্থাৎ উনারা জবানে যা বলতেন তাই বাস্তবায়ন করতেন। উনাদের মাঝে কোনো বানোয়াটি ছিলো না। সুবহানাল্লাহ!
তাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি মুহব্বত, আদব, তা’যীম-তাকরীম মুবারক উনার দৃষ্টান্ত বর্ণনা করতে গেলে উনারাই হবেন অগ্রগামী। নিম্নে এ বিষয়ে কিছু দৃষ্টান্ত উল্লেখ করা হলো-
ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে একবার জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি আপনাদের মুহব্বত মুবারক কেমন ছিলো? তিনি জবাবে বলেন-
وَاللهِ اَحَبُّ اِلَيْنَا مِنْ اَمْوَالِنَا وَاَوْلَادِنَا وَاٰبَائِنَا وَاُمَّهَاتِنَا وَمِنَ الْمَاءِ الْبَارِدِ عَلَى الظَّمَأِ
অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! আমাদের ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি, পিতা-মাতার চেয়েও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাদের কাছে অধিক মুহব্বতের ছিলেন। এমনকি একজন পিপাসার্তের নিকট ঠা-া পানি যেমন প্রিয় তার চেয়েও বেশি প্রিয় ছিলেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! (শিফা শরীফ ২/৫৬৮)
সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ সুফিয়ান আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত ইসলাম গ্রহণের পূর্বেই বলেছিলেন-
مَا رَاَيْتُ مِنَ النَّاسِ اَحَدًا يُحِبُّ اَحَدًا كَحُبِّ اَصْحَابِ سَيِّدِنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَيِّدَنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
অর্থ “আমি মানুষদের মধ্যে কাউকে এতটা মুহব্বত করতে দেখিনি, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা যতটা মুহব্বত মুবারক করেন। ” সুবহানাল্লাহ! (মা’রিফাতুছ ছাহাবা ৮/২৭৮, আর রওদ্বুল উন্ফ, সীরাতে ইবনে হিশাম ২/১৭২, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৪/৬৫, শিফা শরীফ ২/২৩ ইত্যাদি)
বাস্তবে ছিলোও তাই। হযরত উরওয়া ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি (সম্মানিত ইসলাম গ্রহণের পূর্বে) হুদাইবিয়ার সন্ধির সময় কুরাইশ মুশরিকদের পক্ষ থেকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট দূত হিসেবে আসেন। তখন তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের যেই বেমেছাল সম্মান, তা’যীম-তাকরীম ও মুহব্বত মুবারক দেখেন। (অসমাপ্ত)
-মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সর্বাবস্থায় ছাহিবু লাওলাক, ছাহিবু ক্বাবা ক্বওসাইনি আও আদনা, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত আহবান মুবারক-এ সাড়া দেয়া প্রত্যেক উম্মতের জন্য ফরয; এমনকি পবিত্র নামাযে থাকাকালীন সময়েও
১১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (১১)
১১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আল হাদিয়্যাতুল ইলাহিয়্যাহ ফী সীরাতি হাবীব ওয়া মাহবূবিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (পর্ব- ৯৫)
১১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (১০)
১০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল হাদিয়্যাতুল ইলাহিয়্যাহ ফী সীরাতি হাবীব ওয়া মাহবূবিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (পর্ব- ৯৪)
১০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
১০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র নূরানী হুলিয়া মুবারক (১ম পর্ব)
১০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিভিন্ন জিহাদে ব্যবহৃত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সমরাস্ত্রসমূহ এবং বাহন মুবারক উনাদের পরিচিতি মুবারক (১)
০৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৯)
০৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় জীবনী মুবারক আল হাদিয়্যাতুল ইলাহিয়্যাহ ফী সীরাতি হাবীব ওয়া মাহবূবিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (পর্ব- ৯৩)
০৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত সম্বোধন মুবারক করার বিষয়ে কতিপয় মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র লফ্য বা পরিভাষা মুবারক
০৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা ও বাক্বা সারা কায়িনাত (৮)
০৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












