পবিত্রতা সম্পর্কিত মাসয়ালা-মাসায়িল
, ০৩ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১১ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ০৯ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ২৫ শ্রাবণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
ঢেলা-কুলুখ ব্যবহার করা এবং পানি দিয়ে ধোয়া উভয়টিই সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ:
বড় ইস্তিন্জা এবং ছোট ইস্তিন্জা করার পর ঢেলা-কুলুখ ব্যবহার করা এবং পানি দিয়ে ধুয়ে পরিস্কার হওয়া উভয়টি সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ্। অর্থাৎ ঢেলা-কুলুখ ব্যবহার করা যেমন সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ্ তেমনিভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে পরিস্কার করাও সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ্। কেননা শরীরের মধ্যে একটা গরম ভাব আছে। বড় ইস্তিন্জা বের হয়ে চামড়ার উপর লাগলে শরীরের গরমে ময়লার (পায়খানার) কিছুটা চামড়ায় শোষণ করে নেয়। ঢেলা-কুলুখে সেই শোষিত ময়লা (পায়খানা) দুর হয় না। তাই ঢেলা-কুলুখ ব্যবহার করার পর পানি দিয়ে ধোয়া অবস্থাভেদে ফরয, ওয়াজিব, সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ। তাছাড়া মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সর্বদা ঢেলা-কুলুখ ব্যবহার করেছেন এবং ঢেলা-কুলুখ ব্যবহার করার পর পানি দিয়ে ধুয়েছেন অর্থাৎ আমাদেরকে তালীম দিয়েছেন। তাই ঢেলা-কুলুখ ব্যবহার করা এবং পানি দিয়ে ধোয়া উভয়টিই আমভাবে সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ।
ইস্তিন্জা (প্রস্রাব,পায়খানা) করার সুন্নাত তরীকা:
ইস্তিন্জার চাপ ধরে রাখা যাবে না। সঙ্গে সঙ্গে করতে হবে। হাতে কলমের কালি লেগে থাকলে তা ধুয়ে নিয়ে প্রবেশ করবে। যেমন হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি একবার বাথরুমে প্রবেশ করে দেখলেন উনার হাতে কলমের কালি লেগে আছে। তাই তিনি বাথরুম থেকে বের হয়ে উনার হাতে লেগে থাকা কালি পরিষ্কার করে এরপর বাথরুমে প্রবেশ করলেন। কেননা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
مِدَادُ الْعُلَمَاءِ خَيْرٌ مِّنْ دِمَاءِ الشُّهَدَاءِ
অর্থাৎ শহীদের পবিত্র রক্তের চেয়েও উলামায়ে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের কলমের কালি বেশী পবিত্র। তাই হাতে কলমের কালি নিয়ে ইস্তিন্জাখানায় প্রবেশ করা যাবে না। মহান আল্লাহ্্ পাক উনার পবিত্র নাম মুবারক লিখিত তাবিজ প্রকাশ্যে থাকলে খুলতে হবে। আর আবৃত থাকলে জায়েয আছে। তবে না নেয়াই উত্তম। সামর্থ থাকলে নামাযের কাপড় খুলে রেখে অন্য কাপড় পরিধান করে ইস্তিন্জাখানায় যাওয়া মুস্তাহাব। নামাযের কাপড় পরিধান করে ইস্তিন্জাখানায় যাওয়া জায়িয আছে। তবে বিশেষ ইহতিয়াত বা সাবধান থাকতে হবে যেন মুস্তামাল পানি (ব্যবহৃত পানি) কাপড়ে না লাগে।
ইস্তিন্জাখানায় প্রবেশের নিয়ম:
যখন ইস্তিন্জার হাজত হবে, তখন টুপি মাথায় দিয়ে, টুপি না থাকলে অন্যকোনো কাপড় অর্থাৎ তোয়ালে বা গামছা দিয়ে মাথা ঢেকে ঢেলা-কুলুখ ও পানি সাথে নিয়ে যাবে, যদি ইস্তিন্জাখানায় ঢিলা-কুলুখ ও পানি না থাকে। আর ইস্তিন্জাখানায় প্রবেশের পূর্বে بِسْمِ اللهِ اَللّٰهُمَّ اِنِّىْ اَعُوْذُبِكَ مِنَ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ (“বিস্মিল্লাহি আল্লাহুম্মা ইন্নি আঊযুবিকা মিনাল খুবুছি ওয়াল খ্বাবায়িছ”)-এ দোয়া পড়ে সেন্ডেল ব্যবহার করে বাম পা দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। ঢেলা-কুলুখ ও পানির বদনা ডান পাশে রাখবে। বসার পূর্বে মনে মনে بِسْمِ اللهِ (বিসমিল্লাহ্) বলে কাপড় খোলা শুরু করবে। অর্থাৎ আস্তে আস্তে বসবে আস্তে আস্তে কাপড় খুলবে। দাড়ান অবস্থায় কাপড় খুলবে না। বসার সঙ্গে সঙ্গে সম্পূর্ণ কাপড় খুলবে (সুন্নত)। বাম পায়ের উপর ভর দিয়ে ফারাগাত মত বসবে। তাহলে সহজে ইস্তিন্জা হবে। চাপাভাবে বসবে না। উভয় হাটু ঢেকে দিয়ে কাপড় গুছিয়ে নিবে। ছোট ইস্তিন্জা (প্রস্রাব) করার সময় পুরুষ হলে বাম হাত দিয়ে পুরুষলিঙ্গটি ধরবে এবং আস্তে আস্তে ছোট ইস্তিন্জা করবে, যাতে ইস্তিন্জার (প্রস্রাবের) ছিটা পায়ে, শরীরে ও কাপড়ে না লাগে সে ব্যপারে সাবধান থাকতে হবে। দাঁড়িয়ে এবং ক্বিবলার দিকে মুখ বা পিঠ করে ইস্তিন্জা করবে না। উঁচু স্থানে বসে নীচু স্থানের দিকে প্রস্রাব করতে বসবে। বাতাসের দিকে মুখ করে বসবে না। শক্ত স্থানে প্রস্রাব করবে না। অন্যথায় প্রস্রাবের ছিটা শরীরে বা কাপড়ে লাগার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময়ে হাঁচি আসলে মনে মনে اَلْحَمْدُ لِلّهِ(আল্হামদু লিল্লাহ্) বলবে। বিশেষ স্থান বিনা ওজরে দেখবে না। বড় ইস্তিন্জা (পায়খানা) এবং ছোট ইস্তিন্জার (প্রস্রাবের) উপর থু থু ফেলবে না, নাক ঝাড়বে না। বড় ইস্তিন্জা এবং ছোট ইস্তিন্জার দিকে বিনা ওজরে তাকাবে না।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুনা হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন হাসান চীশতী আজমিরী সাঞ্জারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (৪০)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে পুরুষ ও মহিলা ব্যতীত তৃতীয় কোনো লিঙ্গের অস্থিত্ব নেই
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কথিত স্বজন-পরিজন হলেও কাফিরদেরকে বন্ধু বা অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
০২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ শরীয়তসম্মত, নিখুঁত, ব্যবহারে সহজ এবং রহমত, বরকত, সাকীনা লাভের কারণ (৭)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কাফির-মুশরিকদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করা জায়েয নেই
০১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের বিশাল সৈন্যবাহিনী এবং উনাদের শান-জৌলুশ, শক্তি-সামর্থ্য, রণকৌশল, রণসজ্জা, সুশৃঙ্খলতা, কাতারবদ্ধতা অপরাজেয় বীরত্বপূর্ণ মনোবল মুবারক
০১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে বাতিল ফিরক্বা কর্তৃক উত্থাপিত সমালোচনা সমূহের দলীলসম্মত জাওয়াব (৩১)
০১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ মহিলা সবার জন্য ফরজ
০১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)