পবিত্র ঈদুল ফিতর সংক্রান্ত মহাসম্মানিত সুন্নতী আমল (২য় পর্ব)
, ২৯ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ৩১ আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ৩০ মার্চ, ২০২৫ খ্রি:, ১৫ চৈত্র, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
পবিত্র ঈদের নামায কোন সময় আদায় করলে তা পবিত্র সুন্নত হবে সে সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “পবিত্র ঈদ উনার দিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ফজর নামায আদায় করে পবিত্র হুজরা শরীফ উনার মধ্যে গিয়ে সকাল সকাল গোসল মুবারক করতেন এবং পবিত্র ঈদুল ফিতর হলে বিজোড় সংখ্যক (৩, ৫, ৭) খোরমা খেজুর মুবারক খেয়ে ঈদগাহে যেতেন। আর পবিত্র ঈদুল আদ্বহার দিনে কিছু না খেয়ে সরাসরি ঈদগাহে যেতেন এবং পবিত্র ঈদের নামাযের ওয়াক্ত হওয়ার সাথে সাথে পবিত্র ঈদের নামায আদায় করতেন। তারপর পবিত্র খুতবা মুবারক দিতেন এবং পবিত্র নছীহত মুবারক করতেন। ”
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرت أبي الحويرث رضى الله تعالى عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كتب إلى حضرت عمرو بن حزم رضى الله تعالى عنه وهو بنجران عجل الأضحى وأخر الفطر وذكر الناس
অর্থ: “হযরত আবুল হুয়ায়রিছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আমর ইবনে হাযম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে নাজরানের গভর্ণর থাকা অবস্থায় চিঠি মুবারক দিয়ে আদেশ মুবারক করেছেন, পবিত্র ঈদুল আদ্বহার নামায খুব সকাল সকাল পড়বেন এবং পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামায পবিত্র ঈদুল আদ্বহার চেয়ে অল্প একটু দেরিতে পড়বেন এবং পবিত্র নামায উনার পর মানুষকে নছীহত করবেন। (মিশকাত শরীফ)
কাজেই, পবিত্র ঈদের নামায সকাল সকাল পড়া খাছ সুন্নত মুবারক। পবিত্র ঈদের নামাযের সম্মানার্থে এবং পবিত্র ঈদের নামায যাতে আদায়ে দেরি না হয়, সেজন্য পবিত্র ঈদের দিন পবিত্র ঈদের নামাযের পূর্বে ইশরাকসহ অন্যান্য নফল নামায পড়া, পবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করা নিষিদ্ধ।
পবিত্র ঈদুল ফিতর উনার নামায আদায় করার মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব মুবারক
এ দিন সূর্যোদয়ের পর হতে দ্বিপ্রহরের পূর্বে জামায়াতের সাথে অতিরিক্ত ছয় তাকবীরসহ দু'রাকায়াত নামায আদায় করা ওয়াজিব। পবিত্র ঈদের নামায উনার মধ্যে খুতবা পাঠ করা সুন্নতে মুয়াক্কাদাহঃ তবে শ্রতাদের জন্য খুতবা শোনা ওয়াজিব।
পবিত্র ঈদের নামাযের পদ্ধতি স্বাভাবিক নামাযের মতো নয়। যেমনঃ ঈদের দুই রাকায়াত নামাযের কোনো আযান, ইক্বামাত নেই। এতে অতিরিক্ত ছয়টি তাকবীর রয়েছে। সেগুলো আদায়ের নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। নিম্নে সেই নিয়মগুলো তুলে ধরা হলো :
পবিত্র ঈদের নামায আদায় করার তরীক্বাহ:
পবিত্র ঈদুল ফিতর উনার নিয়ত-
نَوَيْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلّهِ تَعَالى رَكْعَتَىْ صلوة العيد الفطر مع ستة تكبيرات واجب اللهِ تَعَالى اقتديت بهذا الإمام مُتَوَجِّهًا اِلى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللهُ اَكْبَرُ.
বাংলায় নিয়ত করলে এভাবে করবে: মহান অল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক হাছিলের লক্ষ্যে পবিত্র ঈদুল ফিতর উনার দুই রাকায়াত ওয়াজিব নামায ছয় তাকবীরের সাথে কিবলামুখী হয়ে উক্ত ইমাম ছাহিব উনার সাথে আদায় করছি- আল্লাহু আকবার।
১। প্রথমত, স্বাভাবিক নামাযের মতোই তাকবীরে তাহরীমা বলে হাত বাঁধতে হবে। অত:পর ছানা পাঠ করতে হবে।
২। অতঃপর অতিরিক্ত তিনটি তাকবীর বলতে হবে। প্রথম দুই তাকবীরে হাত তুলে ছেড়ে দিতে হবে এবং তৃতীয় তাকবীরে হাত বাঁধতে হবে।
৩। অতঃপর পবিত্র আউযুবিল্লাহ শরীফ ও পবিত্র বিসমিল্লাহ শরীফ পড়ার পর ইমাম ছাহিবকে পবিত্র সূরা ফাতিহা শরীফ পড়ে এর সঙ্গে অন্য একটি সূরা শরীফ মিলাতে হবে।
৪। অতঃপর স্বাভাবিক নামাযের মতোই রুকূ-সিজদাহ করে প্রথম রাকায়াত শেষ করতে হবে।
৫। দ্বিতীয় রাকায়াতে ইমাম ছাহিবকে ক্বিরায়াত পড়া শেষ করে রুকূতে যাওয়ার আগে অতিরিক্ত তিন তাকবীর দিতে হবে। প্রতি তাকবীরের সঙ্গে হাত উঠাতে হবে এবং ছেড়ে দিতে হবে। অত:পর চতুর্থ তাকবীর বলে রুকূতে চলে যেতে হবে।
৬। অতঃপর স্বাভাবিক নামাযের মতোই নামায শেষ করতে হবে।
৭। নামায শেষ করেই ইমাম ছাহিব মিম্বরে উঠবেন। দু’টি খুতবা দিবেন। এ সময় ইমাম ছাহিবের খুতবা খুব মনোযোগ সহকারে শুনতে হবে। কোনো ধরনের কথা বলা বা অন্য কাজে ব্যস্ত হওয়া যাবে না।
৮। খুতবা শেষে পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ ও দোয়া-মুনাজাত করতে হবে।
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ওযূর একটি মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক অনিচ্ছাকৃত তরক করায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সতর্কতা মুবারক
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ঘুমানোর মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নতী তারতীব মুবারক - ২
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ঘুমানোর মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নতী তারতীব মুবারক -১
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হাত ও পায়ের নখ কাটার মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব মুবারক
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেসব দিনে গোসল করা ও গোসলে কি কি ব্যবহার করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
চিকিৎসা গ্রহণ করা খাছ সুন্নত মুবারক (২)
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
চিকিৎসা গ্রহণ করা খাছ সুন্নত মুবারক (১)
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৫)
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৪)
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৩)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (২)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












