পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে গরুর গোস্ত শি‘আরুল ইসলাম (১৭)
, ৩০ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
বাংলার যমীনে গরু যবেহকে কেন্দ্র করে মুসলমানদের আগমন ও জিহাদ:
১. ১১৭৮ সালে তৎকালীন আরব থেকে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে এই বাংলায় আসেন সুফি বাবা আদম শহীদ রহমতুল্লাহি আলাইহি। বিক্রমপুরে তখন কথিত শাসক বল্লাল সেনের শাসন চলছিলো, সে সময় তিনি উনার অনুসারীদের নিয়ে এক কুরবানীর ঈদে গরু যবেহ করেন। এই কথা পৌঁছে যায় কথিত শাসক বল্লাল সেনের কাছে। সে রাগান্বিত হয়ে হামলা করে সুফি বাবা আদম শহীদ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দরবার শরীফে এবং উনাকে শহীদ করে। কিন্তু সে সময় যুদ্ধের নমুনা এমন ছিলো যে কথিত শাসক বল্লাল সেনের পরিবার মনে করে সে মারা গিয়েছে। যার ফলে তার পরিবারের সবাই আগুনে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করে। যা দেখে বল্লাল সেন নিজেও সেই আগুনে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করে। পরবর্তীকালে এই ঘটনার প্রেক্ষিতে মুন্সিগঞ্জের বিক্রমপুর বিজয় হয় এবং সেখানে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়। [এ হিস্ট্রি অব সুফীজম ইন বেঙ্গল, ডঃ এনামুল হক, পৃষ্ঠা ২০৮]
২. ১২০৪ সালে ইখতিয়ারুদ্দীন মুহম্মদ বখতিয়ার খিলজি রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাধ্যমে বাংলা মুসলমানদের অধিকারে আসার পর সিলেটে মুসলমানদের জনবসতি গড়ে ওঠেছে।
ঠিক এর ১০০ বছর পর ১৩০৩ সাল তা ছিলো হযরত সুলতান শামসউদ্দীন ফিরূজ শাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার শাসন আমল। আর সেই সময় সিলেটের তথাকথিত শাসক ছিলো গৌর গোবিন্দ। তৎকালীন সময়ে সূফী বুরহানউদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি নামের এক সূফী মুসলমান নিজ ছেলের আক্বীক্বা উপলক্ষে গরু যবেহ করেন, তৎকালীন তথাকথিত হিন্দু শাসক গৌর গোবিন্দ এ কথা শুনে হিংসা ও ক্রোধের বশবর্তী হয়ে সূফী বুরহানউদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার শিশু সন্তানকে শহীদ করে এবং সূফী বুরহানউদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দু হাত কেটে ফেলে।
সূফী বুরহানউদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বাংলার তৎকালীন হযরত বাদশাহ শামসউদ্দীন ফিরোজ শাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট গিয়ে এ নিষ্ঠুর হত্যাকা- ও যুলুমের অভিযোগ করলে বাদশাহ উনার ভাগ্নে হযরত সিকান্দার গাজী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে ও উনার বাহিনীসহ সিলেটে প্রেরণ করেন, যেন উনারা সিলেট আক্রমণ করে এ যুলুমের প্রতিশোধ নেন। কিন্তু গৌর গোবিন্দের কাছে প্রথমবারের মত উনারা পরাজিত হন। কিন্তু পরবর্তীতে সেখানে ওলীয়ে কামিল, সূফী হযরত শাহজালাল ইয়ামানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ও উনার সফরসঙ্গী ৩১৩ জন হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা এসে সেই আযানের মাধ্যমে তথাকথিত শাসক গৌর গোবিন্দের প্রাসাদ মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে মুসলমান শহীদ করার প্রতিশোধ নেন এবং সিলেট বিজয় করেন এবং এর মাধ্যমেই সিলেট মুসলমানদের অধীনে আসে।
৩. শাসক আকবর “দ্বীন এ এলাহি” চালু করায় হিন্দুদের স্বার্থ রক্ষার্থে গরু যবেহ সংক্রান্ত বিধি-নিষেধ আরোপ করে।
ক্বাইয়্যূমে আউওয়াল হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সংস্কার কার্যক্রমের মধ্যে একটি ছিলো গরু যবেহ সংক্রান্ত বিধি নিষেধ আরোপকে বাতিল করা। কেননা, অন্যকে তুষ্ট করতে গিয়ে মুসলমানদের এই শি‘আর (নিদর্শন) প্রকাশ করা থেকে বিরত করা যাবে না। কিন্তু শাসক আকবর তা করেনি, পরবর্তীতে শাসক আকবরের সিলসিলায় ১৬০৬ সালে জাহাঙ্গীর বাদশাহ হয়। এবং তখন শাসক জাহাঙ্গীর কাইয়্যূমে আউওয়াল হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে গোয়ালিয়র দূর্গে বন্দী করে।
পরবর্তী সময়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বাদশাহ জাহাঙ্গীরকে স্বপ্নে দীদার মুবারক দিয়ে হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বন্দীখানা থেকে মুক্ত করে দেয়ার জন্য আদেশ মুবারক দেন। যার ফলে সে খুবই দ্রুত হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে মুক্ত করে নিয়ে আসে এবং উনার কাছে বাই‘আত হয়ে উনার মুরিদ হয়ে যায় এবং সেই সাথে হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার আদেশ মুবারক অনুযায়ী গরু যবেহ করার উপর যত নিষেধাজ্ঞা ছিলো সমস্ত কিছু বাতিল করেন।
-মুহম্মদ মুস্তাজিবুর রহমান ওয়াকি।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৪)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ঢিলা-কুলুখের বিধান
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বেপর্দা হওয়া শয়তানের ওয়াসওয়াসাকে সহজ করার মাধ্যম
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় খরচ করলে তা দ্বিগুণ-বহুগুনে বৃদ্ধি করে ফিরিয়ে দেয়া হয়
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (১)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৩)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক- ছবি তোলা হারাম
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












