পবিত্র দ্বীন ইসলামে নারীর মর্যাদা ও অধিকার
-মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ (বালিকা মাদরাসা)
, ৩০ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৭ ছানী, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৬ জুলাই, ২০২৫ খ্রি:, ১২ শ্রাবণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) মহিলাদের পাতা
মুসনাদে আহমদ শরীফে বর্র্ণিত, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ كَانَتْ لَهُ أُنْثَى فَلَمْ يَئِدْهَا، وَلَمْ يُهِنْهَا، وَلَمْ يُؤْثِرْ وَلَدَهُ عَلَيْهَا، أَدْخَلَهُ اللهُ تَعَالَى الْجَنَّةَ
অর্থ: “কোনো ব্যক্তির যদি একজন কন্যা সন্তান থাকে এবং সে তাকে হত্যা করেনি, কোনো প্রকার অবহেলা করেনি এবং পুত্র সন্তানকে কন্যা সন্তানের ওপর কোনো প্রকার প্রাধান্য দেয়নি। মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। সুবহানাল্লাহ!
লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, জান্নাতে প্রবেশ করার মাধ্যম হলো, কন্যা সন্তানকে লালন পালন করা। আবার জাহান্নাম থেকে মুক্তিও মিলবে উত্তমরূপে কন্যা সন্তানের প্রতিপালন করার দ্বারা।
কন্যা সন্তান প্রতিপালনের মোট তিনটি ফযিলত রয়েছে যা বিভিন্ন হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রতীয়মান হয়।
এক. মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিবেন।
দুই. এমন জান্নাত দান করবেন যা চিরস্থায়ী নিয়ামত ও আরাম আয়েশের স্থান।
তিন. মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে জান্নাতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গী হওয়ার সৌভাগ্য দান করবেন। যা সফলতার সর্বোচ্চ সোপান।
কন্যা সন্তান লালন পালনকারীদের জন্য নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ তিনটি ফযিলত বিশেষভাবে বর্ণনা করেছেন।
আবার হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ‘মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! আমরা জাহেলিয়াতের মধ্যে ডুবে ছিলাম। কোনো ব্যাপারেই নারীদের গুরুত্ব দিতাম না। অবশেষে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের সম্পর্কে যা নাযিল করার, তা নাযিল করলেন, আর তাদের জন্য যা বণ্টন করার তা বণ্টন করলেন। ’ এই অত্যাচারী সমাজ নারীদেরকে অন্ধকারের অতল গহ্বরে নিক্ষেপ করেছিল। সেখানে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাঠালেন, যিনি মেয়েদের প্রতি গুরুত্বারোপ করলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের মর্যাদা সমুন্নত করলেন, মানুষকে তাদের প্রতি দৃষ্টি দেওয়ার ও তাদের গুরুত্ব প্রদানের নির্দেশ দিলেন এবং কন্যা সন্তানের উত্তম তরবিয়তের প্রতি উৎসাহ প্রদান করলেন এবং সুসংবাদ প্রদান করলেন। আর মুসলিম সমাজকে সেই বিরাট প্রতিদানের প্রতি আগ্রহী করে তুললেন, যা মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন।
কিন্তু আফসুসের বিষয়, আইয়্যামে জাহেলিয়াতের ন্যায় আধুনিক জাহেলী যুগে আজো অনেক স্থানে কন্যা সন্তানের জন্ম ‘সুসংবাদ’ হিসেবে নেওয়া হয় না। তখন নারীকে জন্মের পর পুঁতে ফেলা হতো। আর এখন বিজ্ঞানের কল্যাণে জন্মের পূর্বেই তারা আল্ট্রাসোনোগ্রাফি অথবা অন্যান্য পদ্ধতির মাধ্যমে আগত শিশুকে নারী হিসেবে জানতে পেরে জন্মের আগেই তাকে পুঁতে ফেলে। নাঊযুবিল্লাহ! অর্থাৎ এবরশন করে জন্মের পূর্বেই হত্যা করে। অথবা কন্যা সন্তান জানতে পারার কারণে গর্ভাবস্থায় মাকে বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক কষ্ট দেওয়া হয়। এমনকি অনেক সময় এমনও শোনা যায় যে, কন্যা সন্তান হলে স্বামী দ্বিতীয় বিবাহ করবে অথবা তালাক দিবে। নাঊযুবিল্লাহ! কিন্তু এ বিষয়ে একবারও কি কেউ ফিকির করে দেখেছে যে, এটা সম্পূর্ণই মহান আল্লাহ পাক উনার ইচ্ছাধীন ও একক সিদ্ধান্ত। তারপরও শুধুমাত্র নারী বলেই তাকে অপদস্ত করা হয়। নাঊযুবিল্লাহ!
অধিকার আর মর্যাদা কি কাগজে কলমে আর শুধু সেøাগান দ্বারাই পাওয়া যাবে? এই বৈষম্যপূর্ণ সমাজে মানুষের হৃদয় যদি মহিলাদের অধিকার মেনে না নেয়, তাহলে কাগজ ছিড়ে যাবে, কলম ভেঙে যাবে, শ্লোগানও থেমে যাবে। কিন্তু মহিলারা তাদের অধিকার পাবে না। যুগ যুগ ধরে পবিত্র কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফে মহিলাদের অধিকার জেনেও মহিলাদেরকে তাদের সেই প্রাপ্ত অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। মানুষের অন্তরে তা রেখাপাত করে না। নাঊযুবিল্লাহ!
অথচ, কন্যা সন্তান প্রতিপালনে যেন বৈষম্য না করা হয় এবং বস্তুবাদী ব্যক্তিরা যেন হীনমন্যতায় না ভোগে। তাই স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা কন্যা সন্তান প্রতিপালনে ধৈর্য ধরার উপদেশ দিয়েছেন এবং বিশাল পুরষ্কারের ঘোষণা দিয়েছেন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (৯)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৩)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












