পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার যে কোন বিষয়ে কার ফতওয়া সঠিক এবং গ্রহণ করা ফরয ও কার ফতওয়া গ্রহণ করা হারাম
, ২৫ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৫ ছানী আ’শার, ১৩৯২ শামসী সন , ২৪ মে, ২০২৫ খ্রি:, ১১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনার আলোকে দুইজনের ফতওয়ার সাথে বিপরীত বা পরস্পর বিরোধী হলে, তাদের দুই জনের বাহ্যিক আমলকে যাঁচাই করা ও তল্লাশী করা ফরয। তা হলো-
১। প্রথমেই তাদের দুই জনের, কে ফাসিক ও কে মুত্তাক্বী এটা বের করতে হবে। কেননা ফাসিকের ফতওয়া মান্য করা হারাম, আর মুত্তাক্বী বা পরহেযগার উনার ফতওয়া গ্রহণ করা ফরয। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
ان الله لا يهدى القوم الفاسقين ـ
অর্থাৎ নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি ফাসিক সম্প্রদায়কে সঠিক পথে পরিচালিত করেন না। (পবিত্র সূরাতুল মুনাফিকূন শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)
যে বা যারা ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নতে মুয়াক্কাদা আমল তরক করে। এছাড়া প্রকাশ্যে কোন কবীরা গুনাহ করে যেমন: বেপর্দা হয়, হারাম ছবি তোলে, টিভি চ্যানেলে প্রোগ্রাম করে, হাতে তালি দেয়, গান-বাজনা করে ও শোনে, খেলাধুলা করে ও দেখে, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র তথা সমস্ত প্রকার তন্ত্র-মন্ত্র করে, সুদ-ঘুষ খায় ইত্যাদি। এদেরকে ফাসিক বলা হয়।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
لَا تُطِعْ مِنهُمْ اٰثِمًا أَوْ كَفُوْرًا
অর্থ: তোমরা তাদেরকে অনুসরণ করো না, যারা পাপ কাজে লিপ্ত অথবা কুফরী কাজ করে। (পবিত্র সূরা দাহর শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ ২৪)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
يا أَيُّهَا الَّذينَ آمَنوا إِن جاءَكُم فاسِقٌ بِنَبَإٍ فَتَبَيَّنوا
অর্থ: হে মু’মিনগণ যদি তোমাদের নিকট ফাসিকরা কোন কথা বা ফতওয়া নিয়ে আসে তখন তা সঠিক কিনা যাচাই না করে মান্য করবে না। (পবিত্র সূরা হুজুরাত শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
يُضِلُّ بِهِ كَثيرًا وَيَهدي بِهِ كَثيرًا وَما يُضِلُّ بِهِ إِلَّا الفاسِقينَ
অর্থ: পবিত্র কুরআন শরীফ দ্বারা অনেকেই পথভ্রষ্ট হয় আবার অনেকেই হিদায়াত প্রাপ্ত হয়। একমাত্র ফাসিকরাই এই পবিত্র কুরআন শরীফ দ্বারা গোমরাহ বা পথভ্রষ্ট হয়। (পবিত্র সূরা বাকারাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৬)
২। দুইজনেই ফাসিক হলে দুইজনের ফতওয়াই পরিত্যাগ করা ফরয ও মুত্তাক্বী পরহেজগার, ওলীআল্লাহ উনাকে তালাশ করে উনার কাছ থেকে ফতওয়া গ্রহণ করা ফরয। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
فَاسْأَلُوْا أَهْلَ الذِّكْرِ اِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُوْنَ
অর্থ: যদি তোমাদের কোন বিষয় জানা না থাকে, তাহলে যারা আহলে যিকির তথা খালিছ ওলীআল্লাহ উনাদের কাছে জিজ্ঞাসা করে জেনে নাও। (পবিত্র সূরা নহল শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ ৪৩)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরও ইরশাদ মুবারক করেন-
ذٰلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَ فِيهِ هُدًى لِّلْمُتَّقِيْنَ
অর্থ: এই কিতাব (পবিত্র কুরআন শরীফ) যাতে কোন সন্দেহের অবকাশ নাই। তা মুত্তাক্বী পরহেজগারদেরকে সঠিক পথে পরিচালিত করে। (পবিত্র সূরা বাকারাহ শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ ২)
৩। দুইজনেই যদি মুত্তাক্বী হয় তাহলে তুলনামূলক যার আমল বেশি তাক্বওয়াপূর্ণ ও উত্তম উনার ফতওয়াকেই গ্রহণ করা ফরয।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللهِ أَتَقَاكُمْ
অর্থ: নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক পরহেজগার ব্যক্তিই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট অধিক সম্মানিত। (পবিত্র সূরা হুজুরাত শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩)
আর পবিত্র শাজরায়ে ত্বইয়্যিবাহ বা সনদে মুতাওয়াতিরাহ উনার অন্তর্ভুক্ত প্রত্যেক যুগে যুগে আগত সত্যিকারের যিনি ওলীআল্লাহ, ইমাম, মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদ উনারাই প্রত্যেক যামানার সর্বাধিক পরহেজগার মুত্তাক্বী ও মহান আল্লাহ পাক উনার নৈকট্যপ্রাপ্ত মহান ব্যক্তিত্ব মুবারক, যার কারণে একমাত্র উনাদের ফতওয়াই গ্রহণযোগ্য।
৪। দুই জনের মধ্যে কেউ যদি কুফরী করে তাহলে ঐ ব্যক্তিকে পরিত্যাগ করা ফরজে আইন। কারণ চোরের কাছে মহামূল্যবান ঈমান ও আমল কোনটাই নিরাপদ নহে বরং ধ্বংসাত্মক।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
لَا تُطِعْ مِنهُمْ اثِمًا أَو كَفُوْرًا
অর্থ: তোমরা তাদেরকে অনুসরন করো না, যারা পাপ কাজে লিপ্ত অথবা কুফরী কাজ করে। (পবিত্র সূরা দাহর শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ ২৪)
-মুহম্মদ মুফীযুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পুরুষের জন্য কমপক্ষে একমুষ্ঠি পরিমাণ দাড়ি রাখা ফরয
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (২)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (২)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা পালন করা নারী-পুরুষ সকলের জন্যই শান্তি ও পবিত্রতা হাছিলের কারণ
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সীমালঙ্ঘনকারী কাফির-মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












