পবিত্র মীলাদ শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ বিষয়ক “আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম বি মাওলিদি সাইয়্যিদি বানী আদাম” কিতাব নিয়ে বাতিলপন্থী ওহাবী ফিরকার মিথ্যাচারিতা ও ষড়যন্ত্রের মুখোশ উন্মোচন-পর্ব-৩
, ০৭ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ৩০ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ৩০ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ১৬ চৈত্র, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) মহিলাদের পাতা
ওহাবীদের এ ইবারত কারচুপির বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
فَوَيْلٌ لِّلَّذِينَ يَكْتُبُونَ الْكِتَابَ بِأَيْدِيهِمْ ثُمَّ يَقُولُونَ هَٰذَا مِنْ عِندِ اللَّهِ لِيَشْتَرُوا بِهِ ثَمَنًا قَلِيلًا ۖ فَوَيْلٌ لَّهُم مِّمَّا كَتَبَتْ أَيْدِيهِمْ وَوَيْلٌ لَّهُم مِّمَّا يَكْسِبُونَ
অর্থ: ঐসকল লোকদের জন্য ওয়ায়েল, ধ্বংস বা জাহান্নাম যারা নিজেরা স্ব হস্তে কিতাবাদী লিখে, অতঃপর তারা বলে, এটা মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে। সামান্য মূল্যে তারা উহাকে ক্রয় বিক্রয় করে। তারা যা স্বহস্তে লিখেছে এবং তার দ্বারা যা কিছু কামাই করেছে তার সবকিছুর জন্যই ওয়ায়েল, জাহান্নাম বা আফসূস। (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ ৭৯)
আরো একটি লক্ষ্যনীয় বিষয় হচ্ছে, إتمام ‘ইতমাম’ শব্দটির অর্থ হচ্ছে চূড়ান্ত, পরিপূর্ণ, পূর্ণকরণ ইত্যাদি। কোন একজন লেখক যখন একটা কিতাব লিখবেন তখনি শুরুতেই কি চূড়ান্ত বা পরিপূর্ণ করে লেখার কোন কারণ আছে? মূলত: প্রথমেই কেউ চূড়ান্ত বা পরিপূর্ণ করে কিতাব লিখেন না। পূর্ণ করা বা সংক্ষিপ্ত করা সাধারণত: পরেই হয়ে থাকে। কিতাবাদি যারা বুঝেন তারা জানেন, একজন লেখক একটা কিতাব লেখার পর একটা সময় মনে করেন এই কিতাবে আরো কিছু বিষয় বা দলীল সংযুক্ত করা দরকার তখন তিনি আগের কিতাবকে পূর্ণতা দেয়ার জন্য ‘ইতমাম’ বা তাকমিলাহ ইত্যাদি নাম দিয়ে আরেকটা সংস্করণ করেন। অথবা লেখক যদি চান আগের কিতাবের সংক্ষিপ্ত রূপ তৈরী করবেন তিনি তখন পরবর্তী একটা সময়ে গিয়ে মুখতাসার বা সংক্ষিপ্ত আকারে লিখেন। আর ক্ষেত্র বিশেষে এই কাজটা স্বয়ং মূল লেখক করেন না বরং ভিন্ন কোন লেখক কাজটা করে থাকেন।
যেমন- হযরত ইমাম বাগবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কিতাবুল মাসাবীহ থেকে হযরত ইমাম ওলীঊদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মিশকাতুল মাসাবীহ হয়েছে, ইত্যাদি। শুরুতেই নতুন একটা কিতাবে ইতমাম লেখাটা হাস্যকর একটা বিষয়। আর হযরত ইবনে হাজার হায়তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এ কাজটি করেনওনি তা শুরুতেই আমরা প্রমাণ করেছি।
তাহলে ওহাবী মতবাদের লোকেরা কেন এই কাজ করলো? ‘ইতমামু নি’মাতুল কুবরা’ কিতাব রচনা করা, প্রচার করা এবং ‘মাওলিদুন্নবী’ কিতাবের মধ্যে ইতমাম শব্দে ইবারত চুরি করে ঢোকানোর কারণ কি?
কারণটা খুবই পরিষ্কার। আর সেটা বুঝতে হলে হযরত ইবনে হাজার হায়তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ‘মাওলিদুন্নবী’ কিতাবের ওই অংশের সম্পূর্ণ ইবারতখানা পড়লে বিষয়টা পানির মত পরিষ্কার বোঝা যাবে। হযরত ইমাম ইবনে হাজার হায়তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ‘মাওলিদুন্নবী’ কিতাবের পা-ুলিপির ভূমিকায় النعمة الكبري علي العالـم কিতাব সম্পর্কে লিখেছেন-
ولو لم يكن من ذالك الا ماظهر عند حمله و قبيله ووقت ولادته وَفِيْ اَيَّامِ رَضَاعَتِه وَتَرْبِيَّتِه لكفي , كَمَا جَـمَعْتُ ذٰلِكَ في كِتَاب سميته "الِنعْمَة الْكُبْرٰي عَلَى الْعَالَـمِ بِـمَوْلِدِ سَيِّدِ بني اٰدَمَ" - بِاَسَانِيْدِه الَّتِيْ نَقَلَهَا اِئِمَّةُ السُّنَنِ وَاَحَدِيْث الْـمَوْصُوْفُوْنَ بِالْـحِفْظِ وَالْاِتْقَانِ وَالْـجَلَالَةِ وَالْبُرْهَانِ فِي الْقَدِيْـمِ وَالْـحَدِيْثِ - مِـمَّا هُوَ سَالِـمٌ مِّنْ وَضْعِ الْوَضَاعِيْنَ وَاِنْتِحَالِ الْـمُلْحِدِيْنَ وَالْـمُفْتِرِيْنَ - لَا كَاَكْثَرِ الْـمَوَالِيْدِ الَّتِيْ بِاَيْدِي النَّاسِ فَاِنَّ فِيْهَا كَثِرًا مِّنَ الْـمُوْضُوْعِ الْكَذِبِ الْـمُخْتَلِقِ الْـمَصْنُوْعِ - لٰكِن فِيْ ذٰلِكَ الْكِتَابِ بَسْط لَايُتَمَّ معه قِرَأَتُه فِىْ مَـجْلِسٍ وَاحِدٍ - فَاخْتَصَرْتُه هُنَا بِـحَذْفِ اَسَانِيْدِه وَغَرَائِـبِه وَاقْتَصَرْتُ مِنْهُ عَلٰى مَا يُسَنِّدُه مُتَابِع اَوْ عَاضِد
অর্থ: যদি বিষয়গুলি এরুপ না হতো তাহলে “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র রেহেম শরীফে থাকা অবস্থায় যেসকল মুজিযাহ শরীফ প্রকাশিত হয়েছে এবং পবিত্র রেহেম শরীফে তাশরীফ মুবারক নেয়ার পূর্বে, পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক গ্রহনের সময়, দুধ মুবারক পান করার দিনসমূহে এবং উনার প্রতিপালন মুবারক হওয়ার দিনসমূহে যেসকল মুজিযাহ শরীফ প্রকাশিত হয়েছে, সেসকল বিষয়ে সঠিক ও যথার্থভাবেই বর্ণিত হয়েছে। যেমন ঐ সমস্ত বিষয়গুলো আমি একটি কিতাবে জমা’ তথা একত্রিত করেছি, যে কিতাবের আমি নাম রেখেছি “আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আলাম বি মাওলিদি সাইয়্যিদি বানী আদম”। (চলবে)
-হাফিজুল হাদীছ মুহম্মদ ফযলুল হক
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
তিন ধরনের লোক বেহেশতে প্রবেশ করবে না
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
হযরত উম্মে সুরাইকা দাওসিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সর্বক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রাধান্য দিতে হবে
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (৩)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (১০)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৪)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












