পবিত্র শবে বরাত শরীফ পালন করা খাছ সুন্নত মুবারক
, ১৪ শা’বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৭ তাসি’, ১৩৯২ শামসী সন , ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রি:, ৩১ মাঘ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ الصِّدِّيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ قَالَتْ فَقَدْتُ النَّبِيَّ صَلَّى الله عَليْهِ وسَلَّمَ ذَاتَ لَيْلَةٍ فَخَرَجْتُ أَطْلُبُهُ فَإِذَا هُوَ بِالْبَقِيعِ ,رَافِعٌ رَأْسَهُ إِلَى السَّمَاءِ ,فَقَالَ يَا حضرت عَائِشَةُ عليها السلام أَكُنْتِ تَخَافِينَ أَنْ يَحِيفَ اللَّهُ عَلَيْكِ وَرَسُولُهُ ؟ قَالَتْ ، قَدْ قُلْتُ : وَمَا بِي ذَلِكَ وَلَكِنِّي ظَنَنْتُ أَنَّكَ أَتَيْتَ بَعْضَ نِسَائِكَ فَقَالَ إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى يَنْزِلُ لَيْلَةَ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا فَيَغْفِرُ لأَكْثَرَ مِنْ عَدَدِ شَعَرِ غَنَمِ كَلْبٍ.
অর্থ: সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক রাতে আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হুজরা শরীফে না পেয়ে তালাশ করতে বের হলাম। অতঃপর আমি উনাকে সম্মানিত জান্নাতুল বাক্বীতে আসমানের দিকে মহাসম্মানিত নূরুল হুদা মুবারক (মাথা মুবারক) উত্তোলনরত অবস্থায় পেলাম। অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত জান্নাতুল বাক্বীতে দোয়া মুবারক করছিলেন। (আমাকে দেখতে পেয়ে) তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনি কি এই আশংকা করছেন যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব ও মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা আপনার প্রতি ব্যতিক্রম করবেন? সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! বিষয়টা এমন নয়। তবে আমি ভেবেছিলাম, আপনি হয়তো অন্য কোন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের হুজরা শরীফে তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন। এরপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি মধ্য শা’বানের রাতে দুনিয়ার নিকটবর্তী আকাশে অবতরণ করেন এবং কালব গোত্রের মেষপালের পশমের চাইতেও অধিক সংখ্যক লোকের গুনাহ মাফ করে দেন। (তিরমিযী শরীফ : পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৭৪৪, ইবনে মাজাহ শরীফ : পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ১৩৮৯)
উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণীত হয় যে, পবিত্র শবে বরাত উনার রাতে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত জান্নাতুল বাক্বীতে দোয়া মুবারক (ইবাদত-বন্দেগী মুবারক) করেছিলেন। অর্থাৎ উম্মতকে এ পবিত্র রাতে ইবাদত-বন্দেগী করার জন্য তা’লীম মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حضرت أَبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ رضى الله تعالى عنه عَنْ رَسُولِ اللهِ صَلَّى الله عَليْهِ وسَلَّمَ قَالَ إِنَّ اللَّهَ لَيَطَّلِعُ فِي لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ فَيَغْفِرُ لِجَمِيعِ خَلْقِهِ إِلاَّ لِمُشْرِكٍ أَوْ مُشَاحِنٍ.
অর্থ: হযরত আবূ মূসা আশআরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি মধ্য শা’বানের রাত অর্থাৎ শবে বরাতে রহমতে খাছ নাযিল করেন এবং মুশরিক ও হিংসুক ব্যতীত উনার সৃষ্টির সকলকে ক্ষমা করে দেন। (ইবনে মাজাহ শরীফ : পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ১৩৯০, আল জামিউছ ছহীহ লিস সুনান ওয়াল মাসানীদ ৬/২১০, ৯/৩৪২, মিছবাহুয যুজাজাহ ফী যাওয়ায়িদে ইবনে মাজাহ ২/১০, ফাদ্বায়িলুল আওক্বাত লিল বায়হাক্বী ১/১২০)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حضرت أَبِي بَكْرٍ عليه السلام قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا كَانَ لَيْلَةُ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ يَنْزِلُ اللَّهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى إِلَى سَمَاءِ الدُّنْيَا فَيَغْفِرُ لِعِبَادِهِ إِلاَّ مَا كَانَ مِنْ مُشْرِكٍ أَوْ مُشَاحِنٍ لأَخِيهِ.
অর্থ: সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি মধ্য শাবানের রাতে অর্থাৎ শবে বরাতে দুনিয়ার আসমানে নাযিল হন অর্থাৎ রহমতে খাছ নাযিল করেন এবং মুশরিক ও মুসলিম ভাইয়ের সাথে হিংসাকারী ব্যতীত সমস্ত বান্দাদেরকে ক্ষমা করে দেন। সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদুল বায্যার ১/১৫৭, মাজমাউয যাওয়ায়িদ ৭/৩৭৯)
উল্লেখ্য, অসংখ্য দলীল-আদিল্লা দ্বারা সাব্যস্ত হয় যে পবিত্র শবে বরাত শরীফ পালন করা খাছ সুন্নত মুবারক। তাই সকলের দায়িত্ব-কর্তব্য হলো পবিত্র শবে বরাত শরীফ খাছ সুন্নতী তারতীবে পালন করা। মহান আল্লাহ পাক তিনি সকলকে খাছ সুন্নতী তারতীবে পবিত্র শবে বরাত শরীফ পালন করার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একখানা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক হচ্ছে, বিবাহ-শাদী করা। যার দ্বারা রিযিক বৃদ্ধি পায়
১৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নতী তরীক্বায় বিবাহের মোহর
১২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বিবাহের পূর্বে বরকে ও কনেকে দেখার সম্মানিত শরয়ী অর্থাৎ মহাসম্মানিত সুন্নতী তরীক্বাহ
১১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বিবাহের ক্ষেত্রে কুফু বা সমকক্ষতা রক্ষা করা পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত
১০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বিবাহের প্রস্তাব দেয়া এবং সম্মতি জ্ঞাপন করার মহাসম্মানিত সুন্নতী তরীক্বাহ
০৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (৩)
০৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (২)
০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম সুন্নত মুবারক অনুসরণে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের বেমেছাল দৃষ্টান্ত
০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক জিন্দা করার বেমেছাল ফযীলত
০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (১)
০৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নতী আসবাবপত্রের পরিচয় ও ব্যবহার করার গুরুত্ব-ফযীলত মুবারক
০৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
অত্যন্ত বরকতময় মহাসম্মানিত সুন্নতী খাদ্য “সিরকা” (৪)
০৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












