পবিত্র হাদীছ শরীফ অনুযায়ী আমল করার ক্ষেত্রে হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিশেষ গুরুত্বারোপ
, ২০ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৬ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পক্ষান্তরে কোন কোন ইমামের মাযহাব হলো- হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের আছার বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও উনারা ক্বিয়াস অনুযায়ী আমল করতেন। তাছাড়া উনার আরেকটি নীতি হলো, উনার নিকট যদি নির্ধারিত শর্তসহ কোনো হাদীছ শরীফ প্রমাণিত হতো, তাহলে তিনি অন্য কোন দিকে ঝুকতেন না, যদিও তা ক্বিয়াসের পরিপন্থী হয়। এমনকি জঈফ হাদীছ শরীফ উনাকে পর্যন্ত বিশুদ্ধ ক্বিয়াসের উপর প্রাধান্য দিতেন। এক কথায় পবিত্র হাদীছ শরীফ হলো উনার মাযহাবের দ্বিতীয় প্রধান উৎস। যারা হাদীছ শরীফ অনুযায়ী আমল করা থেকে সরে যান তিনি তাদের তিরস্কার করেছেন। (তারিখুল ইসলাম, আল্লামা যাহাবী-৬/১৩৮ পৃষ্ঠা)
হযরত হাসান ইবনে ছালেহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নিকট যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে কোন হাদীছ শরীফ বিশুদ্ধ বলে প্রমাণিত হয়, তাহলে তিনি তা ছেড়ে অন্য দিকে যান না। (ইকমালু তাহজীবিল কামাল-১২/৫৬ পৃষ্ঠা)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে একথা বলতে শুনেছি, কোনো পবিত্র হাদীছ শরীফ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে এলে তা অবশ্যই পালনীয়। আর যদি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের থেকে আসে তবুও তা গ্রহণ করি। উনাদের বক্তব্য থেকে সরে যাই না। আর যদি হযরত তাবিয়ীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের থেকে আসে তাহলে উনাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হই। (সিয়ারু আলামীন নুবালা- ৬/৮০১)
হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার এই উক্তি এতটাই প্রসিদ্ধ যে, যে সকল মুজতাহিদ হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাযহাবের উছূল বিষয়ে দু’ কলম লিখেছেন, উনাদের প্রত্যেকেই তা বর্ণনা করেছেন। এমনকি এটি তাওয়াতুর এর পর্যায়ে চলে গেছে।
ইমাম ইবনুল কায়্যিম হাম্বলী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, শুধু হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিই নন, বরং উনার সমস্ত আছহাব এ কথার ওপর একমত যে, জঈফ হাদীছ শরীফ কিয়াসের ওপর অগ্রাধিকার রাখে। (ইলামুল মুআক্কায়ীন -১/৯৯ পৃষ্ঠা)
এতদসত্ত্বেও একথা বলা যে, হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ ছেড়ে শুধু ক্বিয়াস শরীফ উনার উপর আমল করেন, এটা নিঃসন্দেহে উনার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ, যা কোনো ঈমানদার আহলে ইলমের জন্য বলা সমীচীন নয়। তাছাড়া নছ বিদ্যমান থাকা অবস্থায় ক্বিয়াস করার বিষয়ে হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা বর্ণিত হয়েছে।
যেমন, হযরত ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, কিতাবুল্লাহ বা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হাদীছ শরীফ বা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ঐক্যমত বিদ্যমান থাকা অবস্থায় ব্যক্তিগত মতামত প্রদান করা কারো জন্য জায়িয নেই। (আওজাযুল মাসালিক ভূমিকা- ১/৫৯ পৃষ্ঠা)
তিনি আরো বলেন, সাবধান! তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার দ্বীনের ব্যাপারে ব্যক্তিগত রায় দেয়া থেকে বিরত থেকো। তোমাদের ওপর আবশ্যক হলো পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার ইত্তেবা করা। কারণ যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক থেকে বেরিয়ে যাবে সে গুমরাহ হয়ে যাবে। (আওজাযুল মাসালিক ভূমিকা- ১/৫৯ পৃষ্ঠা)
একদা উনার নিকট কূফার একজন অধিবাসী প্রবেশ করলো। তখন উনার দরবার শরীফে হাদীছ শরীফ পাঠ করা হচ্ছিল। লোকটি বলে উঠলো, আমাদের সামনে এসব হাদীছ শরীফ? একথা শুনে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি তাকে কঠিনভাবে শাসালেন এবং বললেন, যদি পবিত্র সুন্নত না হতো তাহলে আমাদের কেউ পবিত্র কুরআন শরীফ বুঝতে সক্ষম হতো না। তিনি আরো বলেন, মানুষের মধ্যে যতক্ষণ পর্যন্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ অন্বেষণকারী বিদ্যমান থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত তারা সঠিক পথে থাকবে। আর তারা যখন পবিত্র হাদীছ শরীফ ছাড়া অন্য কোন ইলিম অন্বেষণ করবে তখন তারা বিপদগামী হবে। তিনি আরো বলেন, তাদের জন্য ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো কথা বলা উচিত নয়, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা জেনে না নেয় যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত শরীয়ত তা অনুমোদন করে। (মাকানাতুস সুন্নাহ- ৭৭-৭৮ পৃষ্ঠা)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












