পবিত্র “মাক্বামে মাহমূদ” উনার বেমেছাল তাফসীর বিষয়ে খারেজী জাহমিয়া ফিরকার মুখোশ উম্মোচন (৬)
, ৯ই রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৩ ছামিন, ১৩৯২ শামসী সন , ১০ জানুয়ারী, ২০২৫ খ্রি:, ২৫ পৌষ , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এ বিশেষ আসনে রব তায়ালা উনার পাশে বসার পক্ষে দলীল এবং এর বিরোধিদের দাঁতভাঙ্গা জবাব অনেক ইমামই দিয়েছেন তেমনি একজন হচ্ছেন হযরত আবু বকর ইবনু খল্লাল রহমতুল্লাহি আলাইহি (ওফাত ৩১১ হিজরী)। তিনি হাম্বলী মাযহাব উনার বড় ফক্বীহ ছিলেন। তিনি উনার কিতাব ‘আস সুন্নাহ’ উনার মধ্যেও এ বিষয়ের উপর বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। এ বিষয়ে অনেক ইমাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের ফতওয়া জমা করেছেন। যেমন তিনি এ বিষয়ে হযরত ইসহাক ইবনে রাহাওয়াই রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মত উল্লেখ করেন
وَقَالَ إِسْحَاقُ بْنُ رَاهَوَيْهِ: اَلْإِيْمَانُ بِـهٰذَا الْحَدِيْثِ وَالتَّسْلِيْمُ لَهٗ
হযরত ইসহাক ইবনে রাহাওয়াই রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, এই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার উপরই ঈমান এবং স্বীকৃত বিষয়। (আস সুন্নাহ লি আবি বকর ইবনে খাল্লাল ১/২১৭)
তিনি আরো উল্লেখ করেন
وَقَالَ عَبْدُ الْوَهَّابِ الْوَرَّاقُ لِلَّذِيْ رَدَّ فَضِيْلَةَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقْعِدُهٗ عَلَى الْعَرْشِ فَهُوَ مُتَّهَمٌ عَلَى الْإِسْلَامِ، وَقَالَ إِبْرَاهِيْمُ الْأَصْبَهَانِيُّ: هٰذَا الْحَدِيْثُ حَدَّثَ بِهِ الْعُلَمَاءُ مُنْذُ سِتِّيْنَ وَمِائَةِ سَنَةٍ، وَلَا يَرُدُّهٗ إِلَّا أَهْلُ الْبِدَعِ، قَالَ: وَسَأَلْتُ حَمْدَانَ بْنَ عَلِيٍّ عَنْ هٰذَا الْحَدِيْثِ، فَقَالَ: كَتَبْتُهُ مُنْذُ خَمْسِيْنَ سَنَةً، وَمَا رَأَيْتُ أَحَدًا يَرُدُّهُ إِلَّا أَهْلُ الْبِدَعِ، وَقَالَ إِبْرَاهِيْمُ الْحَرْبِيُّ: حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ مَعْرُوفٍ، وَمَا يُنْكِرُ هَذَا إِلَّا أَهْلُ الْبِدَعِ، قَالَ هَارُونُ بْنُ مَعْرُوفٍ: هَذَا حَدِيْثٌ يُسَخِّنُ اللهُ بِهٖ أَعْيَنَ الزَّنَادِقَةِ، قَالَ: وَسَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ إِسْمَاعِيْلَ السُّلَمِيَّ يَقُوْلُ: مَنْ تَوَهَّمَ أَنَّ مُحَمَّدًا صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمْ يَسْتَوْجِبْ مِنَ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ مَا قَالَ مُجَاهِدٌ فَهُوَ كَافِرٌ بِاللهِ الْعَظِيْمِ، قَالَ: وَسَمِعْتُ أَبَا عَبْدِ اللهِ الْخَفَّافَ يَقُوْلُ: سَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ مُصْعَبٍ يَعْنِي الْعَابِدَ يَقُوْلُ: نَعَمْ، يُقْعِدُهُ عَلَى الْعَرْشِ لِيَرَى الْخَلَائِقُ مَنْزِلَتَهٗ
হযরত আব্দুল ওয়াহাব ওয়াররাক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, যারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ফযীলত কুদরতী আরশে রব তায়ালা উনার পাশে বসবেন এটা অস্বীকার করতে চায় তারা দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে অভিযুক্ত। হযরত ইব্রাহীম আছবাহানী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, এই হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন একশ ষাট শতকের উলামায়ে কিরামগণ। সেসময় বিদয়াতিরা (বিদয়াতি বলতে সেসময় বাতিল ফিরকাদের বোঝানো হতো) ছাড়া কেউ এই হাদীছ শরীফ রদ করার চেষ্টা করেনি। হযরত হারূন ইবনে মারূফ থেকে বর্ণিত, বিদয়াতিরা ছাড়া এটা কেউ অস্বীকার করেনি। হযরত হারূন ইবনে মারূফ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, এই হাদীছ শরীফ দ্বারা আল্লাহ পাক যিন্দীকদের চক্ষুজ্বালার কারণ করে দিয়েছেন।.. মুহম্মদ ইবনে মুসাইয়াব (ওফাত ২২৮) থেকে বর্ণনা এসেছে, তিনি বলেন, হ্যাঁ, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কুদরতি আরশে বসানো হবে যাতে সমগ্র সৃষ্টি তাদের অবস্থান থেকে এই শান মুবারক দেখতে পারে। (আস সুন্নাহ লি আবি বকর ইবনে খল্লাল ১/২১৭)
আরো বর্ণিত আছে
مَنْ رَدَّ هٰذِهِ الْأَحَادِيْثَ فَهُوَ مُبْتَدِعٌ ضَالٌّ. قَالَ: مَا أَدْرَكْنَا أَحَدًا يَرُدُّهٗ إِلَّا مَنْ فِي قَلْبِهٖ بَلِيَّةٌ، يُهْجَرُ وَلَا يُكَلَّمُ
যারা এই পবিত্র হাদীছ শরীফ সমূহ অস্বীকার করতে চায় তারা বিদয়াতি, পথভ্রষ্ট। আমরা এমন একজনও দেখি নাই যাদের অন্তরে রোগ আছে তারা ছাড়া কাউকে এটা অস্বীকার কিংবা বর্জন করতে। (আস সুন্নাহ লি আবি বকর ইবনে খল্লাল ১/২৫৯)
হযরত আবু বকর ইবনু খল্লাল রহমতুল্লাহি আলাইহি (ওফাত ৩১১ হিজরী) তিনি উনার কিতাবে এত ব্যাপক আলোচনা করেছনে যে অস্বীকারকারীদের তিনি ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছেন-
قَالَ: يُقْعِدُهُ مَعَهُ عَلَى الْعَرْشِ ، قَالَ أَبُوْ بَكْرِ بْنُ أَبِيْ طَالِبٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ: مَنْ رَدَّهُ فَقَدْ رَدَّ عَلَى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ، وَمَنْ كَذَّبَ بِفَضِيْلَةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَدْ كَفَرَ بِاللهِ الْعَظِيْمِ
হযরত আবু বকর ইবনে আবী ত্বালিব রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, যারা মাহান আল্লাহ পাক উনার সাথে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কুদরতী আরশ মুবারকে বসা অস্বীকার করতে চায় তারা মূলত মহান আল্লাহ পাক উনাকেই অস্বীকার করে। যারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ফযীলত মুবারক অস্বীকার করে তারা মূলত আল্লাহ পাক উনার সাথে কুফরী করে। (আস সুন্নাহ লি আবি বকর ইবনে খল্লাল ১/২১৫)
সূতরাং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এই সুমহান শান মুবারক অস্বীকার কারীরা কি পরিমাণ ভ্রান্তিতে নিমজ্জিত সেটা চিন্তা ও ফিকিরের বিষয়।
-খাজা মুহম্মদ আবু সালাহুদ্দীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পুরুষের জন্য কমপক্ষে একমুষ্ঠি পরিমাণ দাড়ি রাখা ফরয
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (২)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (২)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা পালন করা নারী-পুরুষ সকলের জন্যই শান্তি ও পবিত্রতা হাছিলের কারণ
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সীমালঙ্ঘনকারী কাফির-মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












