পরিভাষা, শব্দ ও বানান আগ্রাসন (২)
, ২৫ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৮ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ০৭ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ২৩ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
যা একদিকে বাংলা ভাষার উপর আগ্রাসন, অন্যদিকে মুসলমানদের ঈমান-আক্বীদার জন্য হুমকীস্বরূপ। বহিরাগত সংস্কৃতের আগ্রাসী ও ঈমানবিধ্বংসী সেসব শব্দ ও পরিভাষাগুলোর মধ্যে এখানে কিছু শব্দ ও পরিভাষা তুলে ধরা হয়েছে।
কিছু আগ্রাসী শব্দ ও পরিভাষার ব্যাখ্যা:
৪. ‘অঞ্জলি’ সংক্রান্ত শব্দ:
জলাঞ্জলি, পুষ্পাঞ্জলি, শ্রদ্ধাঞ্জলি ইত্যাদি পরিভাষাগুলো ব্যবহার করা যাবে না। কারণ এই পরিভাষাগুলো হিন্দুয়ানি কালচার থেকে উৎপন্ন।
জলাঞ্জলি শব্দটি অপচয় অর্থে ব্যবহৃত হলেও এটি হিন্দুদের একটি পুজা অনুষ্ঠানের নাম। হিন্দুদের বিশ্বাস অনুযায়ী, হিন্দুরা মারা গেলে চিতায় পুড়ে ফেলার পর প্রেতাত্মার উদ্দেশ্যে আঁজলাপূর্ণ পানি চিতায় ছিটিয়ে দেয়। এটাকেই তারা বলে জলাঞ্জলি। , এর অন্য নাম বিসর্জন। এরকম পুষ্পাঞ্জলি ও শ্রদ্ধাঞ্জলিও হিন্দুদের মৃত ব্যক্তিদের সাথে সম্পৃক্ত যজ্ঞানুষ্ঠান ও পুজানুষ্ঠানের নাম।
মুসলমানগণ কখনও মাইয়্যেত বা মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে জলাঞ্জলী, পুষ্পাঞ্জলি বা শ্রদ্ধাঞ্জলি দেন না এবং ব্যবহারও করেন না। অতএব মুসলমানদের ক্ষেত্রে এসব হিন্দুয়ানী পরিভাষা ব্যবহার করা কখনই জায়েজ হবে না। মুসলমানগণ মাইয়্যেতের উদ্দেশ্যে দোয়া, জানাযা নামায, মাগফিরাত কামনা এবং ইসালে সওয়াবের অনুষ্ঠান করে থাকেন।
৫. বিশ্বব্রহ্মা-:
সৃষ্টি জগত বা ত্রিভূবন অর্থাৎ পৃথিবী, আকাশ ও পাতাল বুঝাতে বিশ্বব্রহ্মা- শব্দটি অনেকেই ব্যবহার করে থাকে। অথচ বিশ্বব্রহ্মা- অর্থ হচ্ছে ব্রহ্মার অ-কোষ থেকে তৈরি সৃষ্টিজগৎ। নাউযুবিল্লাহ!
ব্রহ্মা, ব্রহ্মা-, বিশ্বব্রহ্মা- ইত্যাদি ব্রাহ্মণদের বানানো শব্দ যা সংস্কৃত ভাষা থেকে এসেছে। কাজেই এগুলো মুসলমানদের জন্য কোনভাবেই ব্যবহার করা জায়েজ হবে না।
৬. উৎসর্গ:
এটি সংস্কৃত ভাষার শব্দ। হিন্দুরা তাদের কথিত দেব-দেবীদের ক্ষেত্রে ‘উৎসর্গ’ পরিভাষাটি ব্যবহার করে থাকে। সূতরাং মুসলমানদের জন্য ‘উৎসর্গ’ শব্দটি ব্যবহার করা অনুচিত। মুসলমানকে ব্যবহার করতে হবে- কুরবান, ত্যাগ, নিবেদন, নজরানা, হাদিয়া, তোহফা ইত্যাদি।
৭. উপাস্য, উপাসনা:
উপাস্য ও উপাসনা পরিভাষা দুটি এটি মুশরিকদের ধর্মীয় শব্দ যা সংস্কৃত ভাষা থেকে আগত। অনেকে মহান আল্লাহ পাক উনাকে বুঝাতে ‘উপাস্য’ এবং উনার ইবাদত-বন্দেগী করা বুঝাতে ‘উপাসনা’ পরিভাষা ব্যবহার করে থাকে, যা মারাত্মক ভুল। আবার অনেকে কালিমা তাইয়্যিবার অর্থ করতে গিয়ে ‘উপাস্য’ শব্দটি নিয়ে আসে।
মুসলমানগণকে ব্যবহার করতে হবে ‘ইলাহ, মাবুদ, ইবাদত-বন্দেগী ইত্যাদি। অতএব মহান আল্লাহ পাক উনার শান মুবারকে উপাস্য ও উপাসনা পরিভাষা ব্যবহার করা যাবে না।
৮. ‘ঈশ্বর’ সংক্রান্ত শব্দ:
একেশ্বরবাদ, ঈশ্বর, ঈশ্বরী, ঐশিবাণী, ঐশীশক্তি, ঐশ্বরিক, ইত্যাদি এই প্রত্যেকটি শব্দই পরিত্যাজ্য। এগুলো ব্যবহার করা হারাম। বলতে হবে তাওহীদ, ওয়াহিদিয়াত, ওয়াহদানিয়াত, একক ও অদ্বিতীয় সত্ত্বা মুবারক, একত্ববাদ ইত্যাদি।
৯. উপোস, উপবাস:
পরিভাষা দুটি হিন্দুয়ানি সংস্কৃত ভাষার পরিভাষা। এগুলো ব্যবহার করা যাবে না। বলতে হবে সিয়াম, রোযা ইত্যাদি।
১০. অর্ঘ্য:
অর্ঘ্য শব্দটি হচ্ছে হিন্দু সম্প্রদায়ের হিন্দুদের পূজার উপকরণ এবং ও কায়দা কানুন। বিভিন্ন মূর্তি এবং তাদের কথিত সম্মানিতদেরকে তারা অর্ঘ্য নিবেদন করে থাকে। কাজেই মুসলমানদের জন্য ‘অর্ঘ্য’ পরিভাষা ব্যবহার করা জায়েজ হবে না। (চলবে)
-মুহম্মদ জিয়াউল হক্ব।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُونَ
২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সারাবিশ্বে একই দিনে ঈদ পালন ও রোযা শুরু করার কথা বলার উদ্দেশ্য পবিত্র ঈদ ও পবিত্র রোযাকে নষ্ট করা, যা মূলত মুনাফিকদের একটি ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত (৩১)
২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র কুরবানী ও কুরবানীদাতার ফযীলত (২)
২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ছাহিবু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াজ শরীফ (৮)
২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দাড়ি ও গোঁফের আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৬)
২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জীবানু অস্ত্র ও সাম্রাজ্যবাদীদের জাতি নিধনের ষড়যন্ত্র (২)
২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ত্বাহারাতের ইস্তিব্রা ও ইস্তিন্ক্বার আহকাম
২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ছাহিবু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াজ শরীফ (৭)
২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সম্মানিত হাম্বলী মাযহাব উনার প্রতিষ্ঠাতা ও ইমাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সংক্ষিপ্ত সাওয়ানেহ উমরী মুবারক (৩)
২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
“আত তাক্বউইমুশ শামসী”একটি নতুন সৌর সন (২)
২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাদেরকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৬)
২৫ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ছাহিবু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আস সাফফাহ, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, হাবীবুল্লাহ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওয়াজ শরীফ (৫)
২৫ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)