পানির মশক ব্যবহার করা খাছ সুন্নত মুবারক
, ২১ শা’বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৪ তাসি’, ১৩৯২ শামসী সন , ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রি:, ০৭ ফালগুন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম

পানির মশক ব্যবহার করা খাছ সুন্নত এমনকি কাউকে সেটা হাদিয়া দেয়াও পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত। এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ امام الاول كرم الله وجهه عليه السلام اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمُ اَتَى حَضْرَتْ عَلِيًّا عَلَيْهِ وَسَلَّمُ وَحَضْرَتْ فَاطِمَةَ عَلَيْهَا وَسَلَّمُ وَهُـمَا فِىْ خَـمِيْلٍ لَـهُمَا وَالْـخَمِيْلُ الْقَطِيْفَةُ الْبَيْضَاءُ مِنَ الصُّوْفِ قَدْ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمُ جَهَّزَهُـمَا بِـهَا وَوِسَادَةٍ مَـحْشُوَّةٍ اِذْخِرًا وَقِرْبَةٍ.
অর্থ: “ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবিয়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের নিকট তাশরীফ মুবারক আনলেন। তখন উনারা উনাদের একটি সাদা পশমী চাদর মুবারকে আবৃত ছিলেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তা উনাদেরকে পবিত্র নিসবাতুল আযীমাহ শরীফ উপলক্ষ্যে হাদিয়া মুবারক করেছিলেন। তিনি আরও হাদিয়া মুবারক করেছিলেন ইযখির ঘাস ভর্তি একটি বালিশ মুবারক এবং পানির একটি মশক মুবারক। ” (ইবনে মাজাহ শরীফ: পবিত্র হাদীছ শরীফ নং:- ৪১৫২)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
فَأَخْرُجُ حَتَّى جِئْتُ فَإِذَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي مَشْرُبَةٍ لَهُ يَرْقَى عَلَيْهَا بِعَجَلَةٍ، وَغُلاَمٌ لِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَسْوَدُ عَلَى رَأْسِ الدَّرَجَةِ؛ فَقُلْتُ لَهُ: قُلْ هذَا حضرت الفاروق الاعظم عليه السلام ، فَأَذِنَ لِي قَالَ حضرت الفاروق الاعظم عليه السلام : فَقَصَصْتُ عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هذَا الْحَدِيثَ، فَلَمَّا بَلَغْتُ حَدِيثَ حضرت ام المؤمنين السادسة عليها السلام تَبَسَّمَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَإِنَّهُ لَعَلَى حَصِيرٍ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَهُ شَيْءٌ، وَتَحْتَ رَأْسِهِ وِسَادَةٌ مِنْ أَدَمٍ حَشْوُهَا لِيفٌ، وَإِنَّ عِنْدَ رِجْلَيْهِ قَرَظًا مَصْبُوبًا، وَعِنْدَ رَأْسِهِ أَهَبٌ مُعَلَّقَةٌ؛ فَرَأَيْتُ أَثَرَ الْحَصِيرِ فِي جَنْبِهِ، فَبَكَيْتُ؛ فَقَالَ: مَا يُبْكِيكَ فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ كِسْرى وَقَيْصَرَ فِيمَا هُمَا فِيهِ، وَأَنْتَ رَسُولُ اللهِ فَقَالَ: أَمَا تَرْضى أَنْ تَكُونَ لَهُمُ الدُّنْيا وَلَنَا الآخِرَةُ.
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি কাপড় নিয়ে বেরিয়ে চলে আসলাম। গিয়ে দেখলাম, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একটি উঁচু কক্ষে অবস্থান মুবারক করছেন। সিঁড়ি বেয়ে সেখানে পৌঁছতে হয়। সিঁড়ির মুখে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একজন কালো বর্ণের গোলাম বসা ছিলেন। আমি বললাম, বলুন, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি এসেছেন। এরপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে অনুমতি দিলেন, আমি উনাকে এসব ঘটনা বললাম, এক পর্যায়ে আমি যখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাদিসাহ আলাইহাস সালাম উনার কপোপকথন পর্যন্ত পৌঁছলাম তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নূরুত তাক্বরীর মুবারক (মহাসম্মানিত মুচকি হাসি মুবারক) প্রকাশ করলেন। এ সময় তিনি একটা চাটাই মুবারক উনার উপর শুয়ে ছিলেন। মহাসম্মানিত চাটাই মুবারক এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে আর কিছুই ছিল না। উনার মহাসম্মানিত নূরুল হুদা মুবারক (মহাসম্মানিত মাথা মুবারক) উনার নিচে ছিল খেজুরের ছালভর্তি চামড়ার একটি বালিশ মুবারক এবং মহাসম্মানিত নূরুদ দারাজাহ্ মুবারক (মহাসম্মানিত পা মুবারক) উনার কাছে ছিল সল্লম বৃক্ষের পাতার একটি স্তূপ ও মহাসম্মানিত নূরুল হুদা মুবারক (মহাসম্মানিত মাথা মুবারক) উনার উপর লটকানো ছিল চামড়ার একটি পানির মশক মুবারক। আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একপার্শ্বে চাটাইয়ের দাগ দেখে কেঁদে ফেললে তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনি কেন কান্না করছেন ? আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কিসরা ও কায়সার পার্থিব ভোগ-বিলাসের মধ্যে ডুবে আছে, অথচ আপনি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনি পছন্দ করেন না যে, তারা দুনিয়া লাভ করুক, আর আমরা আখিরাত লাভ করি। (বুখারী শরীফ: পবিত্র হাদীছ শরীফ নং:- ৪৯১৩; মুসলিম শরীফ: পবিত্র হাদীছ শরীফ নং:- ১৪৭৯)
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত, মাসয়ালা-মাসায়িল ও খাছ সুন্নতী তারতীব (৬)
২৩ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন মাথায় ব্যবহার করার সুন্নতী ‘কেনায়া’
২৩ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত, মাসয়ালা-মাসায়িল ও খাছ সুন্নতী তারতীব (৫)
২২ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন কালোজিরা ও কালোজিরার তেল
২২ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত, মাসয়ালা-মাসায়িল ও খাছ সুন্নতী তারতীব (৪)
২১ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী লিবাস ‘জুব্বা’
২১ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত, মাসয়ালা-মাসায়িল ও খাছ সুন্নতী তারতীব (৩)
২০ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাদ্য ‘যব’
২০ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত, মাসয়ালা-মাসায়িল ও খাছ সুন্নতী তারতীব (২)
১৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
‘আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার যব ও যবের রুটি
১৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত, মাসয়ালা-মাসায়িল ও খাছ সুন্নতী তারতীব (১)
১৮ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মুরগির গোশ্ত খাওয়া মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক
১৭ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)