মহিলাদের পাতা
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
(আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ থেকে সংকলিত)
, ০৯ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০৯ ছানী আ’শার, ১৩৯২ শামসী সন , ০৮ মে, ২০২৫ খ্রি:, ২৫ বৈশাখ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) মহিলাদের পাতা
(ধারাবাহিক)
দুইটা আয়াত শরীফ উল্লেখ করেছেন মুফাস্সিরীনে কিরামগণ যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি এই আয়াত শরীফ নাযিল করলেন, হ্যাঁ পিতা-মাতার সহিত সদ্ব্যবহার করতে হবে, এটা অবশ্যই সত্য। তবে জেনে রাখ, যদি পিতা-মাতা এমন কোন কুফরী, শেরেকীর আদেশ করেন, তাহলে সেটা কিন্তু করা যাবে না। তবে অবশ্যই পিতা-মাতার সহিত সদ্ব্যবহার করতে হবে। সদ্ব্যবহারের সহিত জীবন-যাপন করতে হবে। কিন্তু কুফরী, শেরেকী যেটা রয়েছে, উনারা যেটা আদেশ করবেন, সেটা আমল করা যাবেনা। সেটা আমল করা যাবে না। তার থেকে অবশ্যই, তার থেকে অবশ্যই দূরে থাকতে হবে।
যেহেতু মহান আল্লাহ পাক উনার হক্ব প্রথম, এরপর পিতা-মাতার হক্ব। পিতা-মাতা যখন শরীয়তের খেলাফ আদেশ-নিষেধ করবেন তখন সে আমলটা করা যাবে না। তাদেরকে সেটা বুঝিয়ে দিতে হবে, বলে দিতে হবে যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি নিষেধ করেছেন। কাজেই সেটা করা সম্ভব নয়। এটা মহান আল্লাহ পাক উনার নিষেধ রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বলা হয় যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন যে, হে আমার ছাহাবায়ে কিরাম!
أَلاَ أُنَبِّئُكُمْ بِأَكْبَرِ الْكَبَائِرِ ثَلاَثًا قُلْنَا بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, হে আমার ছাহাবায়ে কিরাম,
أَلاَ أُنَبِّئُكُمْ بِأَكْبَرِ الْكَبَائِرِ ثَلاَثًا
সাবধান! তিনটা সবচাইতে বড় গুণাহ্ সম্পর্কে কি আমি তোমাদেরকে বলবো?
قُلْنَا بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
আমরা বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলুন,
فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْإِشْرَاكُ بِاللهِ
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে শরীক করা,
وَعُقُوقُ الْوَالِدَيْنِ
পিতা-মাতার সহিত অসৎ আচরণ করা, অর্থাৎ পিতা-মাতার সহিত নাফরমানী করা।
وَكَانَ مُتَّكِئًا فَجَلَسَ وَقَالَ أَلاَ قَوْلُ الزُّورِ وَشَهَادَةُ الزُّورِ فَمَا زَالَ يُكَرِّرُهَا حَتَّى قُلْنَا لَيْتَهُ سَكَتَ
প্রথম বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার সহিত শরীক করা, সবচাইতে বড় গুণাহ। দ্বিতীয় হচ্ছে, পিতা-মাতার সহিত নাফরমানী করা বা অসৎ আচরণ করা। তৃতীয় হচ্ছে- قَوْلُ الزُّورِ মিথ্যা কথা, شَهَادَةُ الزُّورِ মিথ্যা সাক্ষী।
فَمَا زَالَ يُكَرِّرُهَا একথাগুলি উনি বারবার বলতে লাগলেন, বারবার একথাগুলি বলতেছিলেন।
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম বললেন- আমরা এ পর্যন্ত বললাম- حَتَّى قُلْنَا لَيْتَهُ سَكَتَ
যদি উনি চুপ করতেন, যদি উনি চুপ করতেন। বারবার মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলতে লাগলেন দেখ, সবচাইতে বড় গুণাহ্ হচ্ছে তিনটা।
একটা হচ্ছে, মহান আল্লাহ পাক উনার সহিত শরীক করা।
দুই নাম্বার হচ্ছে, পিতা-মাতার সহিত অসৎ আচরণ করা।
তিন নাম্বার হচ্ছে, মিথ্যা কথা বা মিথ্যা সাক্ষী। আর এর থেকে তোমরা অবশ্যই বেঁচে থাকবে, তোমরা অবশ্যই বেঁচে থাকবে, সবচাইতে বড় গুণাহ্।
এইজন্য কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে, মৃত্যুর সময় মৃত্যুর কষ্ট কম হবে এবং জান্নাত নছীব হবে। মৃত্যুর সময় মৃত্যুর কষ্ট লাঘব হবে এবং জান্নাত নছীব হবে ঐ ব্যক্তির, যার মধ্যে তিনটা গুণ রয়েছে। যে অভাবগ্রস্থ গরীব-মিসকীনদের সাথে দয়া প্রকাশ করে থাকে, তাদের সাথে ইহসান করে থাকে। দুই নম্বর হচ্ছে- অধীনস্থদের সাথে সদ্ব্যবহার করে থাকে। তিন নম্বর হচ্ছে- যে ব্যক্তি তার পিতা-মাতার সহিত সৎ আচরণ করে থাকে। এই তিনটা গুণ যার মধ্যে থাকবে, অবশ্যই জান্নাত তার নছীব হবে এবং তার মৃত্যুর কষ্ট লাঘব হবে। মূলতঃ প্রত্যেকেরই তার পিতা-মাতার হক্ব সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (২)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (৯)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৩)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












