১০০ টি চমৎকার ঘটনা
প্রকৃত প্রেমিকের নিদর্শন
ঘটনা-৩৩
, ২৬ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৩ সাদিস ১৩৯১ শামসী সন , ১১ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ২৬ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) মহিলাদের পাতা
মুসলমানদের সংখ্যা যখন ঊনচল্লিশে দাঁড়ায়, তখন হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম তিনি প্রকাশ্যে ইসলাম প্রচার করার অনুমতি প্রার্থনা করেন। প্রথমে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অনুমতি মুবারক দেননি। কিন্তু পরে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার বারংবার অনুরোধে সম্মত হন। দ্বীন ইসলামে নব দীক্ষিত সবাইকে নিয়ে পবিত্র কা’বা শরীফে হাযির হলেন। হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি দাওয়াতী খুৎবা আরম্ভ করেন। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার উপর এটাই ছিল প্রথম ভাষণ। সেইদিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চাচা হযরত হামযা আলাইহিস সালাম এবং এর তিনদিন পর হযরত উমর ফারূক্ব আলাইহিস সালাম উনারা পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন।
কিন্তু খুৎবা শুরু হতেই চতুর্দিক থেকে কাফিররা মুসলমানদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো। পবিত্র মক্কা শরীফে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি যথেষ্ট প্রভাবশালী হওয়া সত্ত্বেও কাফিররা উনাকে এমন বেদম মারধর করে যে, উনার চেহারা এবং নাক, কান মুবারক সবকিছু রক্তে রঞ্জিত হয়ে যায়। বিভিন্ন রকমের আঘাতের কারণে তিনি একদম বেহুঁশ হয়ে পড়েন।
এই খবর শুনে বনী তাইমের লোক এসে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকে নিয়ে গেলেন। কারো ধারণা ছিল না যে, তিনি আর বাঁচতে পারবেন। বনী তাইম হারাম শরীফ উনার মধ্যে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করলেন যে, ‘এই দুর্ঘটনায় হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি যদি ইন্তিকাল করেন, তবে আমরা এর প্রতিশোধ স্বরূপ উতবা ইবনে রাবিয়াকে হত্যা করবো। যেহেতু মারধরের ব্যাপারে উতবার ভূমিকা ছিল সবচেয়ে বেশী।’
সন্ধ্যা পর্যন্ত হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি অচেতন অবস্থায় ছিলেন। সন্ধ্যার সময় জ্ঞান ফেরার পর উনার সর্বপ্রথম কথা ছিল যে, ‘আমার প্রিয় নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কি অবস্থায় আছেন?’ উপস্থিত লোকজন উনাকে এই বলে ভাল-মন্দ বলতে লাগলো যে, ‘যার দরুন আপনার এই করুণ অবস্থা! সারাদিন মৃত্যুর মুখে থেকে যখন জ্ঞানশক্তি আসলো তখন আবার সেই নবীর নাম!’
হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার আম্মা উম্মুল খায়ের রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা কিছু খাবার তৈরি করে আনলেন এবং উনাকে তা খেতে বললেন। কিন্তু হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার মুখে শুধু একই আওয়াজ, ‘আমার প্রিয় নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কি অবস্থা? তিনি কেমন আছেন? তিনি কি ভাল আছেন?’ উনার মা বললেন, ‘বাবা আমি জানি না তিনি কি অবস্থায় আছেন?’ তিনি বললেন, ‘হযরত উমর ফারূক্ব আলাইহিস সালাম উনার ভগ্নী উম্মে জামীল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার নিকট গিয়ে জেনে আসুন।’
মা ছেলের কষ্ট সহ্য করতে না পেরে উম্মে জামীল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার নিকট গিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূও পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হালত বা অবস্থা জিজ্ঞাসা করলেন। উম্মে জামীল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা সাধারণ নিয়মানুসাওে নিজের ঈমানকে কঠোরভাবে গোপন রেখে বললেন, ‘ধামি কি জানি কে মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আর কে আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম! তবে আপনার ছেলের মারধরের কথা শুনে আমি খুব দুঃখ পেয়েছি। উনাকে দেখার জন্য আমাকে নিয়ে চলুন।’ তিনি উম্মুল খায়ের রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা উনার সাথে আসলেন। এসে যখন হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার মর্মান্তিক অবস্থা দেখলেন, কান্নায় ভেংগে পড়লেন তিনি। কাফিররা উনাকে কিরূপ আঘাত করেছে! মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে এর শাস্তি প্রদান করুন।
ইনশাআল্লাহ চলবে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (১০)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৪)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
তিন ধরনের লোক বেহেশতে প্রবেশ করবে না
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সর্বাবস্থায় আজল বা তাড়াহুড়া না করে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হাশরের ময়দানে যে ৫টি প্রশ্নের উত্তর প্রত্যেককেই দিতে হবে
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সর্বক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রাধান্য দিতে হবে
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












