সুওয়াল-জাওয়াব
প্রসঙ্গ: পবিত্র হজ্জ পালনের আহকাম
, ২০ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২০ ছানী আ’শার, ১৩৯২ শামসী সন , ১৯ মে, ২০২৫ খ্রি:, ৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
ওযু ব্যতীত তাওয়াফ করলে তার হুকুম কি?
জাওয়াব:
ওযু ব্যতীত তাওয়াফে কুদূম ও তাওয়াফে বিদা করলে ছদকা ওয়াজিব। আর অপবিত্র অবস্থায় তাওয়াফে কুদূম অথবা তাওয়াফে বিদা করলে একটি ছাগল দম দিতে হবে।
আর ওযু ব্যতীত তাওয়ারফে যিয়ারত করলে একটি ছাগল দম হিসেবে দিতে হবে। আর অপবিত্র অবস্থায় তাওয়াফে যিয়ারত করলে একটি উট দম হিসেবে দিতে হবে। তবে পুনরায় তাওয়াফ করা উত্তম। আর পুনরায় তাওয়াফ করলে দম দেয়া ওয়াজিব হবে না।
সুওয়াল:
তাওয়াফে যিয়ারত আদায় করা কি? তা যদি নির্দিষ্ট সময় আদায় না করে তার হুকুম কি?
জাওয়াব:
তাওয়াফে যিয়ারত আদায় করা ফরয। তা যদি নির্দিষ্ট সময় না করে তাহলে দম দেয়া ওয়াজিব হবে।
সুওয়াল:
ওকূফে আরাফা বা আরাফার ময়দানে অবস্থান করা হজ্জের অন্যতম ফরয। কবে এবং কোন সময় তথায় উপস্থিত হলে ফরয আদায় হবে?
জাওয়াব:
৯ই যিলহজ্জ সূর্য ঢলার পর থেকে ১০ই যিলহজ্জ ছুবহে ছাদেকের পূর্ব পর্যন্ত যে কোন সময় আরাফার ময়দানে অবস্থান করলে অথবা আরাফার ময়দানের উপর দিয়ে অতিক্রম করলে ওকূফে আরাফার ফরয আদায় হয়ে যাবে। কেউ যদি জাগ্রত ও সজ্ঞান অথবা নিদ্রিত ও অজ্ঞান অবস্থায়ও আরাফার ময়দান অতিক্রম করে তাহলেও ওকূফে আরাফার ফরয আদায় হয়ে যাবে। আরাফার ময়দানে সূর্য ঢলার পর থেকে সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর পর্যন্ত অবস্থান করা ওয়াজিব। সূর্যাস্তের পূর্বে কেউ যদি আরাফার ময়দান ত্যাগ করে তাহলে তার উপর দম দেয়া ওয়াজিব হবে। আর যদি কেউ আরাফার ময়দানে উপস্থিতই না হয় তাহলে তার হজ্জ বাতিল হয়ে যাবে।
সুওয়াল:
মুজদালিফায় অবস্থান করা কি?
জাওয়াব:
৯ই যিলহজ্জ দিবাগত রাত্রিতে মুজদালিফায় অবস্থান করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা। আর ১০ই যিলহজ্জ ফজর নামাযের পর হতে সূর্যোদ্বয়ের পূর্ব পর্যন্ত অবস্থান করা ওয়াজিব।
যদি কেউ মুজদালিফার অবস্থান ছেড়ে দেয় তাহলে তার উপর দম দেয়া ওয়াজিব হবে।
সুওয়াল:
কোন হাজী ছাহেব যদি আরাফার ময়দানে অবস্থান করার পূর্বে আহলিয়া বা স্ত্রীর সাথে নিরিবিলি অবস্থান করে তবে তার জন্য কি হুকুম?
জাওয়াব:
কোন হাজী সাহেব যদি আরাফার ময়দানে অবস্থানের পূর্বে আহলিয়া বা স্ত্রীর সাথে নিরিবিলি অবস্থান করে অথবা গুহ্যদ্বারের মাধ্যমে ব্যবহার করে তাহলে তার হজ্জ নষ্ট হয়ে যাবে। তাকে দম হিসেবে একটি খাসি দিতে হবে। আর অন্যান্য হাজী ছাহেবদের মত হজ্জের সমস্ত অনুষ্ঠান যথারীতি পালন করতে হবে। তবে পরের বৎসর সেই হজ্জ পুনরায় ক্বাযা করতে হবে।
আর যদি আরাফার ময়দানে অবস্থানের পর করে তাহলে হজ্জ বাতিল হবেনা। তাকে উট দম দেয়া ওয়াজিব। আর যদি মাথা কামানোর পর ও তাওয়াফে যিয়ারতের পূর্বে করে তবে তার জন্য ছাগল বা খাসি দম দেয়া ওয়াজিব। তার হজ্জ হয়ে যাবে।
আর উমরাহ্কারী যদি চার চক্করের পূর্বে করে তার উমরাহ বাতিল হয়ে যাবে। তবে বাকী চক্করগুলি যথারীতি আদায় করতে হবে এবং পরবর্তীতে উমরাহ্ ক্বাযা আদায় করতে হবে।
আর যদি চার চক্করের পর করে তাহলে উমরাহ্ আদায় হয়ে যাবে তবে একটি ছাগল দম দেয়া ওয়াজিব হবে।
যে ভুল করে আহলিয়া বা স্ত্রীর সাথে নিরিবিলি অবস্থান করবে তার হুকুম স্বেচ্ছায় করার অনুরূপ।
সুওয়াল:
৭ বার চক্কর না দিলে কি তাওয়াফ পূর্ণ হবে?
জাওয়াব:
তাওয়াফে ৭ চক্কর পূর্ণ করলেই এক তাওয়াফ পূর্ণ হয়। এক চক্করও যদি কম আদায় করে তাহলে তাওয়াফ পূর্ণ হবে না। যেমন কেউ যদি তাওয়াফে যিয়ারতের ৭ চক্করের তিন চক্কর বা তার চেয়ে কম চক্কর ছেড়ে দেয় তাহলে তার জন্য দম দেয়া ওয়াজিব হবে। আর যদি চার বা তার চেয়ে বেশী চক্কর ছেড়ে দেয় তাহলে সে ইহরাম খুলতে পারবে না। পরবর্তী হজ্জের সময় তাওয়াফে যিয়ারত করে তারপর তাকে ইহরাম খুলতে হবে। আর তাওয়াফে বিদা ৩ বা তার চেয়ে কম চক্কর ছেড়ে দিলে ছদকা দেয়া ওয়াজিব হবে। আর ৪ বা তার চেয়ে বেশী চক্কর ছেড়ে দিলে তার জন্য একটি ছাগল দম দেয়া ওয়াজিব হবে।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে- হযরত হানাশ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “আমি হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে দু’টি দুম্বা কুরবানী করতে দেখলাম এবং জিজ্ঞাসা করলাম এটা কি? (দু’টি কেন?) জবাবে তিনি বললেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে অছিয়ত মুবারক করে গিয়েছেন, আমি যেন উনার পক্ষ হতে পবিত্র কুরবানী করি। সুতরাং আমি উনার পক্ষ হতে একটি পবিত্র কুরবানী করছি। ”
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












