সুওয়াল-জাওয়াব
প্রসঙ্গ: পবিত্র হজ্জ পালনের আহকাম
, ১৪ মে, ২০২৫ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) শিক্ষামূলক জিজ্ঞাসা
সুওয়াল:
হজ্জের ফরজ কয়টি ও কি কি?
জাওয়াব:
হজ্জের ফরজ হচ্ছে- ৩টি।
(১) ইহরাম বাঁধা অর্থাৎ মীকাত হতে ইহরাম বাঁধা।
(২) ওকুফে আরাফা অর্থাৎ ৯ই জিলহজ্জের দ্বিপ্রহরের পর হতে অর্থাৎ সূর্য ঢলার পর হতে ১০ই জিলহজ্জ সুবহে সাদিকের পূর্ব পর্যন্ত যে কোন সময় আরাফার ময়দানে উপস্থিত থাকা।
(৩) তাওয়াফে জিয়ারত অর্থাৎ ১০, ১১ ও ১২ই জিলহজ্জ তারিখের মধ্যে কা’বা শরীফ তাওয়াফ করা।
সুওয়াল:
হজ্জের মধ্যে ওয়াজিব কি কি?
জাওয়াব:
হজ্জের মূল ওয়াজিব ৫টি।
(১) সাফা মারওয়া পাহাড়ের সাঈ করা।
(২) মুজদালিফায় অবস্থান।
(৩) রমী বা কঙ্কর নিক্ষেপ করা।
(৪) মাথা মুন্ডন করা।
(৫) তাওয়াফে বিদা বা বিদায়ী তাওয়াফ করা।
সুওয়াল:
হজ্জ আদায়ের ছহীহ্ পদ্ধতি বা নিয়ম কি?
জাওয়াব:
হজ্জ করতে হলে প্রথমে ইহরাম বাঁধতে হয়। ইহরাম বাঁধা হজ্জের অন্যতম রোকন বা ফরজ। বাংলাদেশ তথা পাক ভারত উপমহাদেশের লোকেরা সাধারণতঃ ইয়েমেন হয়ে হজ্জে গমন করে থাকে। সে হিসেবে তাদের “মীক্বাত” (ইহরাম বাঁধার স্থান) হচ্ছে- “ইয়ালামলাম। ”
যারা সরাসরি হজ্জ করতে না গিয়ে আগে মদীনা শরীফ গিয়ে সেখানে অবস্থান করার পর হজ্জ আদায় করার ইচ্ছা পোষণ করে, তাদেরকে মদীনা শরীফের অধিবাসীদের মীক্বাত “জুলহুলাইফা” নামক স্থান হতে হজ্জের ইহরাম বাঁধতে হবে।
আমাদের হানাফী মাযহাব মোতাবেক তিন প্রকার হজ্জের মধ্যে ‘হজ্জে ক্বিরান’ হচ্ছে সুন্নত ও আফদ্বল।
ইহরাম বাঁধতে হলে প্রথমে ওযু বা গোসল করে নিতে হয়, তবে গোসল করাটাই উত্তম। অতঃপর দু’খানা নতুন বা পরিস্কার কাপড় পরিধান করবে। একখানা সেলাইবিহীন ইযার বা লুঙ্গি অপরখানা চাদর। সাথে সুগন্ধি থাকলে মেখে নিবে। অতঃপর দু’রাকায়াত নামাজ পড়ে নিম্নের দোয়া পাঠ করবে যা হজ্জে কিরানের নিয়ত-
اَللَّهُمَّ اِنِّىْ اُرِيْدُ الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ فَيَسِّرْهُمَالِىْ وَتَقَبَّلْهُمَا مِنِّىْ.
অর্থ: “আয় আল্লাহ পাক! আমি হজ্জ ও উমরার নিয়ত করলাম। আমার জন্য উভয়টি সহজ করুন এবং আমার পক্ষ থেকে উভয়টি কবুল করুন। ”
আর যদি কেউ হজ্জে তামাত্তুর নিয়ত করে তাহলে তাকে প্রথমে ওমরার নিয়তে ইহরাম বাঁধতে হবে।
ওমরার নিয়ত-
اَللَّهُمَّ اِنِّىْ اُرِيْدُ الْعُمْرَةَ فَيَسِّرْهَالِىْ وَتَقَبَّلْهَا مِنِّىْ.
অর্থ: আয় আল্লাহ পাক! আমি উমরাহ করার নিয়ত করছি। অতঃপর তা আমার জন্য সহজ করে দিন এবং তা আমার তরফ থেকে কবুল করে নিন।
আর যদি কেউ হজ্জে ইফরাদের নিয়ত করে তাহলে তাকে শুধু হজ্জের নিয়ত করতে হবে। হজ্জের নিয়ত-
اَللَّهُمَّ اِنِّىْ اُرِيْدُ الْحَجَّ فَيَسِّرْهُ لِىْ وَتَقَبَّلْهُ مِنِّىْ
অর্থ: আয় আল্লাহ পাক! নিশ্চয়ই আমি শুধু হজ্জ করার নিয়ত করছি। সুতরাং আপনি আমার জন্য তা পালন করা সহজ করুন এবং আমার পক্ষ হতে কবুল করুন।
অতঃপর তালবিয়া পাঠ করবে। তালবিয়া হচ্ছে-
لَبَّيْكَ اَللَّهُمَّ لَبَّيْكَ لَبَّيْكَ لَاشَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكِ اِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ لَاشَرِيْكَ لَكَ.
অর্থ: “আমি হাজির আছি আয় আল্লাহ পাক! আমি হাজির আছি। আমি হাজির আছি, আপনার কোন শরীক নেই, আমি হাজির আছি। নিশ্চয়ই সমস্ত প্রশংসা ও সমস্ত নিয়ামত এবং সমস্ত রাজত্ব আপনারই, আপনার কোন শরীক নেই। ”
এ তালবিয়ার কোন শব্দ বাদ দেয়া যাবে না। ইচ্ছা করলে বৃদ্ধি করা যেতে পারে। আর তালবিয়া পাঠ করা হলেই ইহরাম বাঁধা হয়ে গেলো।
ইহরাম বেঁধে মক্কা শরীফ প্রবেশ করেই তাওয়াফের দ্বারাই কাজ শুরু করতে হবে। অর্থাৎ কা’বা শরীফ ৭ বার প্রদক্ষিণ করে তাওয়াফের কাজ সমাধা করতে হবে।
তাওয়াফের নিয়ম:
তাওয়াফের নিয়তের সাথে ওযু-গোসল করে কা’বা শরীফের হাজরে আসওয়াদের ঠিক বরাবর দাঁড়িয়ে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করে আর ভীড়ের জন্য চুম্বন করতে না পারলে ইস্তেলাম (হাতে ইশারা করে চুম্বন করা) করে তাওয়াফ শুরু করবে।
(উল্লেখ্য, হাজরে আসওয়াদ থেকে সামনে বেড়ে তাওয়াফ শুরু করলে তাওয়াফ শুদ্ধ হবে না। আর তাওয়াফকালীন শুধুমাত্র হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করার সময় মুখ কা’বা শরীফের দিকে থাকবে, অন্যসময় মুখ সামনের দিকে থাকবে। আর বাইতুল্লাহ শরীফ বাম পার্শ্বে থাকবে। তাওয়াফের সময় মুখ বা পিঠ কা’বা শরীফের দিকে থাকলে তাওয়াফ শুদ্ধ হবে না। ) (বাকি অংশের জন্য পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকুন। )
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ: হজ্জের ফরজ আদায়ে হারাম ছবি তোলাকে সাময়িক বৈধতা প্রদান....
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সুন্নতী কদমবুছি বিষয়ে কওমী মুখপত্রের শরীয়তের খেলাফ বক্তব্যের খন্ডনমূলক জাওয়াব
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কথিত ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ে শরঈ ফতওয়া (১৪)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: হজ্জের ফরজ আদায়ে হারাম ছবি তোলাকে সাময়িক বৈধতা প্রদান....
২৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৬)
২৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৫)
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রসঙ্গ: পুরুষ-মহিলা নামায আদায়ের ছহীহ পদ্ধতি
১১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৪)
১০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রসঙ্গ: পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন সম্পর্কে বাতিলদের মনগড়া বক্তব্য খন্ড
০৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৩)
০৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কথিত ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ে শরঈ ফতওয়া (১০)
০২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন সম্পর্কে বাতিলদের মনগড়া বক্তব্য খন্ডন
২৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












