সুওয়াল-জাওয়াব:
প্রসঙ্গ: সম্পত্তি বন্টন
, ১৭ ছফর শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১৩ ছালিছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ১২ আগস্ট, ২০২৫ খ্রি:, ২৯ শ্রাবণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) শিক্ষামূলক জিজ্ঞাসা
সুওয়াল:
পিতার যৌথ সংসার থেকে বড় ছেলে কিছু সম্পদ তার নামে করে নিয়েছে এবং পিতার ওয়ারিশ সূত্র সম্পদ থেকেও অর্ধেক সম্পদ নিয়েছে। পিতাও তাকে (বড় ছেলে) মুহব্বত করে নয় কাঠা জমি দিয়েছে। এরূপ করা পিতা এবং বড় ছেলের জন্য ঠিক হয়েছে কি?
জাওয়াব:
এটা সম্পূর্ণরূপে নাজায়িয ও হারাম হবে। পিতা ও বড় ভাই উভয়ে কবীরা গুনাহে গুনাহগার হবে এবং পরকালে বড় ছেলে এবং পিতা উভয়কেই জাহান্নামের কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। নাউযুবিল্লাহ!
এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআন শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
ولا تأكلوا اموالكم بينكم بالباطل
অর্থ: তোমরা অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ ভোগ করো না অর্থাৎ আত্মসাত করো না। (পবিত্র সূরা বাক্বারা: আয়াত শরীফ ১৮৮)
পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرت سعيد بن زيد رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من اخذ شبرا من الارض ظلما فانه يطوقه يوم القيمة من سبع ارضين
অর্থ: হযরত সায়ীদ ইবনে যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি কারো এক বিঘত যমীন যুলুম করে দখল করবে, ক্বিয়ামতের দিন তার গলায় সাত তবক যমীন বেড়িরূপে পরিয়ে দেয়া হবে। (বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ)
পবিত্র হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عن حضرت ابى حرة الرقاشى رحمة الله عليه عن عمه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم الا لاتظلموا الا لايحل مال امرى الا بطيب نفس منه.
অর্থ: তাবিয়ী হযরত আবু হুররা রাক্কাশী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার চাচা (ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) উনার থেকে বর্ণনা করেন যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সাবধান! যুলুম করো না। সাবধান কারো মাল তার মনের সন্তুষ্টি ব্যতীত নেয়া কারো জন্য হালাল নয়। (বাইহাক্বী, শুয়াবুল ঈমান, দারু কুতনী মুজতাবায়)
عن حضرت سالـم رحمة الله عليه عن ابيه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من اخذ من الارض شيئا بغير حقه خسف به يوم القيامة الى سبع ارضين.
অর্থ: বিশিষ্ট তাবিয়ী হযরত সালিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার পিতা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে অন্যায়ভাবে কারো কোন যমীন নিয়েছে, ক্বিয়ামতের দিন তাকে সাত তবক যমীন পর্যন্ত ধ্বসিয়ে দেয়া হবে। (বুখারী শরীফ)
عن حضرت يعلى بن مرة رضى الله تعالى عنه قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول من اخذ ارضا بغير حقها كلف ان يحمل ترابها الـمحشر.
অর্থ: হযরত ইয়া’লা ইবনে মুররা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে কারো কোন জমি দখল করেছে, তাকে তার মাটি (মাথায় করে) হাশরের মাঠে নিয়ে যেতে বাধ্য করা হবে। (আহমদ শরীফ)
عن حضرت يعلى بن مرة رضى الله تعالى قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول ايما رجل ظلم شبرا من الارض كلفه الله عز وجل ان يحفره حتى يبلغ اخر سبع ارضين ثم يطوقه الى يوم القيمة حتى يقضى بين الناس.
অর্থ: হযরত ইয়া’লা ইবনে মুররা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি, যে কোন ব্যক্তি অন্যায়ভাবে কারো এক বিঘত জমি দখল করে, তাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি সাত তবকের শেষ পর্যন্ত খুঁড়তে বাধ্য করবেন। অতঃপর তার গলায় তা বেরীরূপে পরিয়ে দেয়া হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না ক্বিয়ামতের দিন মানুষের বিচার শেষ করা হয়। (আহমদ শরীফ)
কাজেই, কোন ছেলের জন্য যৌথ সংসার থেকে জমি বা টাকা-পয়সা নিজের নামে নেয়া যেরূপ জায়িয নয় তদ্রƒপ পিতা ও মাতার জন্যও কোন ছেলেকে বা মেয়েকে বেশি দেয়াটা জায়িয নয় বরং কবীরা গুনাহে গুনাহগার হবে। এবং পরকালে কঠিন আযাবের সম্মুখিন হবে। (দলীলসমূহ: তাফসীরে আহকামুল কুরআন, তাফসীরে কুরতুবী, তাফসীরে মাযহারী, তাফসীরে দুররে মানছূর, বুখারী শরীফ, বাইহাক্বী, শুয়াবুল ঈমান, দারু কুতনী, আহমদ শরীফ মিশকাত শরীফ, মিরকাত শরীফ, ফতওয়ায়ে আলমগীরী, শামী, আইনুল হিদায়া, বাহরুর রায়িক, ফতহুল ক্বাদির, দুরুরল মুখতার, বেনায়া ইত্যাদি)
(মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ থেকে সংকলিত)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ: হজ্জের ফরজ আদায়ে হারাম ছবি তোলাকে সাময়িক বৈধতা প্রদান....
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সুন্নতী কদমবুছি বিষয়ে কওমী মুখপত্রের শরীয়তের খেলাফ বক্তব্যের খন্ডনমূলক জাওয়াব
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কথিত ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ে শরঈ ফতওয়া (১৪)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: হজ্জের ফরজ আদায়ে হারাম ছবি তোলাকে সাময়িক বৈধতা প্রদান....
২৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৬)
২৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৫)
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রসঙ্গ: পুরুষ-মহিলা নামায আদায়ের ছহীহ পদ্ধতি
১১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৪)
১০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রসঙ্গ: পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন সম্পর্কে বাতিলদের মনগড়া বক্তব্য খন্ড
০৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৩)
০৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কথিত ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ে শরঈ ফতওয়া (১০)
০২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন সম্পর্কে বাতিলদের মনগড়া বক্তব্য খন্ডন
২৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












