সুওয়াল-জাওয়াব
প্রসঙ্গ: সুন্নতী সামগ্রী ক্রয়-বিক্রয় বা ব্যবসা (১)
, ০২ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ৩১ ছানী আ’শার, ১৩৯২ শামসী সন , ৩০ মে, ২০২৫ খ্রি:, ১৭ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) শিক্ষামূলক জিজ্ঞাসা

সুওয়াল: সুন্নতী পণ্য ক্রয়-বিক্রয় বা সুন্নতী পণ্যের ব্যবসা করার ব্যাপারে শরীয়তের হুকুম কি?
জাওয়াব: মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যবসাকে হালাল সাব্যস্ত করেছেন আর সুদকে তিনি হারাম ঘোষণা করেছেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ উনার ২৭৫নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করা হয়েছে-
وَأَحَلَّ اللهُ الْبَـيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبَا
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার দ্বারা মূলত হালাল পণ্য সামগ্রীর ব্যবসা করার জন্য আদেশ মুবারক করা হয়েছে। আর হারাম পণ্য সামগ্রীর ব্যবসা বা বেঁচা-কেনা করাকে নিষেধ করা হয়েছে।
বলার অপেক্ষা রাখে না যে, হালাল পণ্যের ব্যবসার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হচ্ছে সুন্নতী সামগ্রী বা সুন্নতী পণ্যের ব্যবসা। কেননা, প্রতিটি ক্ষেত্রে সুন্নত মুবারকের অনুসরণ করা উম্মতের জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য। আর সুন্নত মুবারক অনুসরণ বা আমল করতে হলে সুন্নতী পণ্য-সামগ্রী সংগ্রহ করতে হবে। কোথা থেকে বা কিভাবে সংগ্রহ করবে, যেখানে পাওয়া যায় বা পাওয়া যাবে সেখান থেকে সংগ্রহ করতে হবে অর্থাৎ কিনে নিতে হবে। আর কিনতে হলে কাউকে বেঁচতে হবে। অর্থাৎ সংগ্রহের অনন্য মাধ্যম হচ্ছে ক্রয়-বিক্রয় বা ব্যবসা।
মোট কথা, সুন্নতী পণ্যসমূহ কেনা-বেচার মাধ্যমে সংগ্রহ করে আমল করতে হবে। মনে রাখতে হবে যে, মুসলমানের জন্য সুন্নতী জীবন-যাপন বা সুন্নতী জিন্দেগী ব্যতীত কোন জিন্দেগী নেই। যে মুসলমান হবে, তাকে অবশ্যই সুন্নত মুবারক পালন করতে হবে বা আমল করতে হবে। আর সুন্নত মুবারক হচ্ছে, মহাসম্মানিত রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্য বা অনুসরণ মুবারক।
প্রকাশ থাকে যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাধ্যমে উনার উম্মতকে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম দিয়েছেন। কাজেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান এনে অর্থাৎ উনার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে কায়িনাতবাসী তথা উম্মত মু’মিন-মুসলমান হবে এবং উনার পরিপূর্ণরূপে আনুগত্য বা অনুসরণ মুবারক করবে। এটাই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম।
এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
هُوَ الَّذِيْ أَرْسَلَ رَسُوْلَهٗ بِالْهُدٰى وَدِيْنِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهٗ عَلَى الدِّيْنِ كُلِّهِ
অর্থ: মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হিদায়েত ও সত্য দ্বীন অর্থাৎ দ্বীন ইসলামসহ প্রেরণ করেছেন (অতীতে ওহী দ্বারা নাযিলকৃত) সমস্ত দ্বীনের উপর প্রাধান্য দিয়ে অর্থাৎ মানসূখ বা রদ করে দিয়ে এবং অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতে মানবরচিত সমস্ত ধর্ম ও মতবাদকে বাতিল ঘোষণা করে। (পবিত্র সূরা তওবা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩, পবিত্র সূরা ফাত্হ্ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২৮, পবিত্র সূরা ছফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ০৯)
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র সূরা ফাতহ শরীফ উনার ৮ ও ৯ নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
إِنَّاۤ أَرْسَلْنَاكَ شَاهِدًا وَّمُبَشِّرًا وَّنَذِيْـرًا.لِتُـؤْمِنُـوْا بِاللهِ وَرَسُوْلِهٖ وَتُـعَزِّرُوْهُ وَتُـوَقِّرُوْهُ وَتُسَبِّحُوْهُ بُكْرَةً وَّأَصِيْلًا
অর্থ: নিশ্চয়ই আমি আপনাকে সাক্ষী বা প্রত্যক্ষকারী, সুসংবাদ দানকারী ও সর্তককারী হিসেবে প্রেরণ করেছি। অতএব (উনার মাধ্যমে কায়িনাতবাসী বা উম্মত) তোমরা ঈমান আনবে যিনি খলিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি এবং উনার মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি। কাজেই উনার তোমরা খিদমত মুবারকের আঞ্জাম দাও, উনাকে সম্মান মুবারক করো এবং সকাল-সন্ধ্যা অর্থাৎ দায়িমীভাবে উনার ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা করো।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَاۤ أَرْسَلْنَا مِنْ رَسُولٍ إِلَّا لِيُطَاعَ بِإِذْنِ اللهِ
অর্থ: আমি মহাসম্মানিত রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এজন্যই প্রেরণ করেছি, মহান আল্লাহ পাক উনার মুবারক আদেশে যেন অবশ্যই উনার আনুগত্য মুবারক করা হয়। (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৬৪)
অর্থাৎ মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্য বা অনুসরণ মুবারক উম্মতের জন্য ফরয।
কেননা মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্য বা অনুসরণ মুবারক উম্মতের জন্য হিদায়েত লাভ করার মাধ্যম। এ মর্মে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَإِنْ تُطِيْـعُوْهُ تَـهْتَدُوْا
অর্থ: আর তোমরা যদি উনার অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আনুগত্য মুবারক করো তবেই তোমরা হিদায়েত লাভ করবে। (পবিত্র সূরা নূর শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৪)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ يُّطِعِ الرَّسُوْلَ فَـقَدْ أَطَاعَ اللهَ
অর্থ: মহাসম্মানিত রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যে আনুগত্য করবে, প্রকৃতপক্ষে সে মহান আল্লাহ পাক উনারই আনুগত্য করলো। (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৮০) (চলবে)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ: সুন্নতী সামগ্রী ক্রয়-বিক্রয় বা ব্যবসা (২)
১৩ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র কুরবানী সংশ্লিষ্ট সুওয়াল-জাওয়াব
০৫ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র কুরবানী বিষয়ক সুওয়াল-জাওয়াব
২৮ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরবানী বিষয়ক সুওয়াল-জাওয়াব
২৭ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরবানী বিষয়ক সুওয়াল-জাওয়াব
২৫ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র কুরবানী বিষয়ক সুওয়াল-জাওয়াব
২২ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রসঙ্গ: পবিত্র হজ্জ পালনের আহকাম
২১ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রসঙ্গ: পবিত্র হজ্জ পালনের আহকাম
১৯ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রসঙ্গ: পবিত্র হজ্জ পালনের আহকাম
১৭ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: পবিত্র হজ্জ পালনের আহকাম
১৪ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রসঙ্গ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ইলমে গইব শান মুবারক (৭)
২৮ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রসঙ্গ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ইলমে গইব শান মুবারক (৬)
১৪ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)