সুওয়াল-জাওয়াব
প্রসঙ্গ: সুন্নতী সামগ্রী ক্রয়-বিক্রয় বা ব্যবসা (৫)
, ০৯ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ৬ ছানী, ১৩৯৩ শামসী সন , ৫ জুলাই, ২০২৫ খ্রি:, ২১ আষাঢ়, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) শিক্ষামূলক জিজ্ঞাসা
সুওয়াল: সুন্নতী পণ্য ক্রয়-বিক্রয় বা সুন্নতী পণ্যের ব্যবসা করার ব্যাপারে শরীয়তের হুকুম কি?
জাওয়াব: (৫ম অংশ) * শিমলা: মাথায় পাগড়ী বাধার সময় পাগড়ীর যে অংশটুকু ঘাড়ের দিকে ঝুলিয়ে রাখা হয় তাকে শিমলা বলা হয়। শিমলা চার আঙ্গুল থেকে ১ হাত হওয়া বাঞ্চনীয় এবং তা দু’কাঁধের মধ্যখানে ঝুলিয়ে রাখা উত্তম। শিমলা ছাড়া পাগড়ী পরিধান করা বিজাতীয় লক্ষণ।
* সুন্নতী রুমাল: পাগড়ীর উপর সাদা রুমাল ব্যবহার করা পবিত্র সুন্নত মুবারক। পবিত্র রুমাল পরিধান করার তরতীব হচ্ছে- পাগড়ীর উপর মাঝ বরাবর রাখতে হবে। অতঃপর সুন্নতী রুমালের ডানপাশ বাম কাঁধের উপর দিয়ে নীচের দিকে নামিয়ে দিতে হবে। যা পিঠের উপর ঝুলন্ত অবস্থায় থাকবে। দুই রকমভাবে পড়া যাবে। যথা- (১) পাগড়ীর সাথে টাইট করে পড়া (২) আলগাভাবে পড়া।
* রুমালের সুন্নতী মাপ: সাধারণত, আড়াই হাত, পৌঁনে তিন হাত ও তিন হাত বর্গাকৃতি।
* সুন্নতী কেনায়া: সুন্নতী টুপির নিচে ডিম আকৃতির সাদা সুতি কাপড়ের সুন্নতী কেনায়া পরিধান করা সুন্নত মুবারক।
* না’লাইন শরীফ বা স্যান্ডেল: দুই পাট বা স্তর বিশিষ্ট দু’খানা ফিতাযুক্ত পশমবিহীন চামড়ার না’লাইন ব্যবহার করা সম্মানিত সুন্নত মুবারক। না’লাইনের ফিতাদ্বয় আড়াআড়ি হওয়া এবং খয়েরী রংয়ের হওয়া খাছ সুন্নত। সুন্নতী না’লাইন পিছন দিকে ফিতা বিশিষ্টও হতে পারে বা ফিতা ছাড়াও হতে পারে।
* না’লাইন পরিধানের নিয়ম: না’লাইন পরিধানের সময় আগে ডান পায়ে পরিধান করতে হবে এবং খোলার সময় আগে বাম পায়ের না’লাইন খুলতে হবে।
মসজিদে প্রবেশের সময় বাম পা না’লাইন থেকে খুলে না’লাইনের উপরে রাখতে হবে। এরপর ডান পা খুলে সরাসরি মসজিদে রাখতে হবে। মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় বাম পা দিয়ে বের হয়ে বাম পা না’লাইনের উপর রেখে ডান পায়ে না’লাইন পরতে হবে, অতঃপর বাম পায়ে না’লাইন পরতে হবে। আর ইস্তেঞ্জাখানায় প্রবেশের সময় প্রথমে বাম পা প্রবেশ করাতে হবে। তারপর ডান পা ইস্তেঞ্জাখানায় প্রবেশ করাতে হবে।
* চামড়ার মোজা: খয়েরী রংয়ের চামড়ার মোজা ব্যবহার করা খাছ সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত। না’লাইন পরিধানের ন্যায় মোজাও ডানদিক থেকে পরিধান করতে হয় এবং খোলার সময় বামদিক আগে খুলতে হয়। পরিধান করার আগে মোজা ৩ বার ঝেড়ে পরিধান করা সুন্নত।
* হাত রুমাল/গামছা: হাত রুমাল বা গামছা ব্যবহার করা সুন্নত।
* শীতের পোশাক: শীতের পোশাক পরিধান করাও সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত। শীতের সুন্নতী পোশাক হলো- কম্বল, চাদর, শীতের জুব্বা, কানটুপি অর্থাৎ গরমকালে পুরুষ, মহিলা, ছেলে মেয়েরা যে পাতলা কাপড় পরিধান করে। শীতকালে সেই সুন্নতি কাপড়গুলিই মোটা বা পশমী কাপড়ের তৈরী পড়া সুন্নত।
* চাদর: চাদর পরিধান করা সুন্নত। চাদরের রং হবে সাদা, কালো, সবুজ, ধুসর, গন্দম ইত্যাদি। তবে পুরুষদের জন্য লাল, হলুদ ও গেরুয়া রংয়ের চাদর ব্যবহার জায়িয নেই। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি চার হাত দৈর্ঘ্য, আড়াই হাত প্রস্থ, কখনো বা ছয় হাত দৈর্ঘ্য এবং সাড়ে তিন হাত প্রস্থ চাদর মুবারক পরিধান করতেন।
* খিরকা বা জুব্বা: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জুমুয়াহ, ঈদ বা বিশেষ মজলিসে ক্বমীছ বা কোর্তা মুবারকের উপরে খিরকা বা জুব্বা মুবারক পরিধান করতেন। কালো ও ধুসর রংয়ের জুব্বা পরিধান করা সুন্নত।
* মহিলাদের কিছু সুন্নতি পোশাক-পরিচ্ছদ: ১. সেলোয়ার, ২. ক্বমীছ বা কোর্তা, ৩. ওড়না, ৪. বোরকা’, ৫. হাত মোজা, ৬. পা মোজা, ৭. গহনা-অলঙ্কার ইত্যাদি।
ঘর-গৃহস্থলি বিষয়ক সুন্নত মুবারক:
* আসবাবপত্র: আসবাবপত্র শব্দের স্বাভাবিক অর্থ হচ্ছে ঘরের দ্রব্যাদী, ঘরে ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। এক কথায় বলতে গেলে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ও ব্যবহারিক জীবনে সামগ্রিকভাবে যা ব্যবহার করা হয়ে থাকে, তাকে আসবাবপত্র বলা হয়। যেমন: চকি, চাটাই, তোষক ইত্যাদি।
* বিছানা: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিছানা মুবারক ছিলো বিভিন্ন প্রকার। অর্থাৎ কখনো চামড়ার, কখনো চটের, কখনো কম্বলের, কখনো কাপড়ের চাদরের আবার কখনো বা খেজুর পাতার হতো। চামড়ার বিছানা দু’হাত চওড়া এবং চার হাত লম্বা ছিলো।
সুন্নতী আসবাবপত্র ও সংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদীর কতিপয় নাম মুবারক:
(১) সম্মানিত সুন্নতী বিছানাপত্র মুবারক; (২) চারপায়া বিশিষ্ট চকি মুবারক- বড় চকি: দৈর্ঘ্য ৪.৫ হাত, প্রস্থ ৩.২৫ হাত, উচ্চতা ১ বিঘত; ছোট চকি: দৈর্ঘ্য ৪.৫ হাত, প্রস্থ ২ হাত, উচ্চতা ১ বিঘত (৩) সারীর বা চারপায়া মুবারক (৪) হাছীর বা খেজুর পাতার চাটাই মুবারক (৫) মিসহ্ বা চটের বিছানা মুবারক (৬) পাটের রশি দ্বারা চারপায়া বিশিষ্ট চকি (৭) চামড়ার বালিশ মুবারক (৮) হাতির দাঁতের ও হাতির হাড়ের চিরুণী মুবারক (৯) চিরুনী (১০) আয়না (১১) মিম্বর শরীফ (১২) খেজুর গাছের লাঠি মুবারক। (সমাপ্ত)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ: হজ্জের ফরজ আদায়ে হারাম ছবি তোলাকে সাময়িক বৈধতা প্রদান....
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সুন্নতী কদমবুছি বিষয়ে কওমী মুখপত্রের শরীয়তের খেলাফ বক্তব্যের খন্ডনমূলক জাওয়াব
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কথিত ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ে শরঈ ফতওয়া (১৪)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: হজ্জের ফরজ আদায়ে হারাম ছবি তোলাকে সাময়িক বৈধতা প্রদান....
২৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৬)
২৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৫)
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রসঙ্গ: পুরুষ-মহিলা নামায আদায়ের ছহীহ পদ্ধতি
১১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৪)
১০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রসঙ্গ: পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন সম্পর্কে বাতিলদের মনগড়া বক্তব্য খন্ড
০৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৩)
০৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কথিত ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ে শরঈ ফতওয়া (১০)
০২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন সম্পর্কে বাতিলদের মনগড়া বক্তব্য খন্ডন
২৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












