প্রসঙ্গঃ স্বদেশের প্রতি মুহব্বত দাবিদার মুসলমান এবং স্বদেশের প্রতি আঘাত।
, ২১ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৮ খ্বমীছ ১৩৯১ শামসী সন , ০৭ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রি:, ২২ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) সম্পাদকীয়
স্বদেশের প্রতি মুহব্বত শুধু মহানই নয়; বরং অনিবার্য একটি গুণ। এই গুণের অধিকারী ছিলেন হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা। উনাদের দেশাত্মবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমাদেরকেও উনাদের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করা উচিত।
স্বদেশকে মুহব্বত করা ও দেশের কল্যাণ কামনা করা মুসলিম মিল্লাতের পিতা হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহি আলাইহিস সালাম উনার আদর্শ ছিল। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার কল্যাণ কামনাকে এভাবে প্রকাশ করেছেন, “স্মরণ করুন, যখন হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি বলেছিলেন যে, হে আমার প্রতিপালক, এ ভূখ-কে নিরাপদ শহরে পরিণত করুন এবং অধিবাসীদেরকে নানাবিধ ফলমুল দ্বারা জীবিকা দান করুন। (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৬)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বদেশের প্রতি মুহব্বতকে গ্রহণ করেছেন বলেই মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে নিজেও দেশের শপথ করেছেন। পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “আমি শপথ করছি সে নগরীর, যে নগরীর আপনি অধিবাসী।” (পবিত্র সূরা বালাদ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১-২)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বীয় মাতৃভূমির মুহব্বতকে বিশেষভাবে গ্রহণ করেছিলেন। একারণে ঐতিহাসিক হিজরত মুবারকের প্রাক্কালে তিনি বিশেষ রহমতভরে স্বদেশকে সম্বোধন করে বলেছেন, “কত চমৎকার শহর আপনি, হে পবিত্র মক্কা শরীফ, আমি আপনাকে কত মুহব্বত করি।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
এই মুহব্বতের প্রতি সম্মান জানিয়ে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যিনি আপনার জন্য পবিত্র কুরআন শরীফ উনাকে বিধান করেছেন, তিনি (মহান আল্লাহ পাক) আপনাকে অবশ্যই স্বদেশে (পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে) ফিরিয়ে আনবেন।” (পবিত্র সূরা কাসাস শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৮৫)
স্বদেশের প্রতি মুহব্বত মানুষকে দায়িত্ব সচেতন করে তোলে, স্বদেশের উন্নতি সাধনে সজাগ রাখে, দেশের জাতীয় সম্পদ সংরক্ষণে উদ্বুদ্ধ করে। স্বদেশের প্রতি মুহব্বতে উদ্বুদ্ধ হয়ে যারা দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে এবং দেশের সার্বিক তত্ত্বাবধানে নিয়োজিত থাকবে, তাদের প্রতি বিশেষ পুরস্কারের আশ্বাসবাণী ও প্রতিশ্রুতি রয়েছে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘এক দিন এক রাতের প্রহরা ক্রমাগত এক মাসের নফল রোজা এবং সারা রাত ইবাদতে কাটিয়ে দেয়া অপেক্ষাও উত্তম।’ (মুসলিম শরীফ)
স্বদেশের প্রতি মুহব্বত বা স্বদেশের সম্পদ ও সর্বোভৌমত্ব রক্ষাকারী তথা সীমান্ত প্রহরায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের পরকালীন অশেষ প্রতিদান সম্পর্কে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মৃত ব্যক্তির সব আমল বন্ধ হয়ে যায়, ফলে তার আমল বৃদ্ধি পেতে পারে না। তবে ওই ব্যক্তির কথা ভিন্ন, যে ব্যক্তি কোনো ইসলামী সাম্রাজ্যের সীমান্ত প্রহরায় নিয়োজিত থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে, তার আমল কিয়ামত পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে থাকবে এবং কবরের প্রশ্নোত্তর থেকেও সে বেঁচে থাকবে।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! (তিরমিজি শরীফ ও আবু দাউদ শরীফ)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণে স্বদেশের প্রতি মুহব্বত একধরনের পরিশুদ্ধ ভাবাবেগ, যা মুসলমানদের কর্তব্যপরায়ণ ও দায়িত্বসচেতন করে তোলে। দেশের স্বাধীনতা ও সম্পদ সুরক্ষায় যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে উদ্বুদ্ধ করে দেশের স্বার্থবিরোধীদের সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিহত করতে নিবেদিত করে।
প্রসঙ্গত আমরা মনে করি, সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম উনার এই দেশের সরকার নাগরিকদের মাঝে স্বদেশের প্রতি মুহব্বতের ক্ষেত্রে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার শিক্ষা নাগরিকদের দেয়নি এবং এ ধরনের কোনো তৎপরতাও সরকারের কর্মকা-ে নেই। যা অতীব দুঃখজনক। তবে মুসলমান হিসেবে দেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানরা তাদের ঈমান রক্ষার্থে স্বদেশের প্রতি মুহব্বত তথা দায়িত্ব-কর্তব্যকে অস্বীকার করে মুসলমান থাকতে পারে না।
দেশের দুটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের নেত্রীই পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে দেশের সম্পদ বিদেশীদের হাতে তুলে দিয়ে আঁতাতের অভিযোগ করেছে। দেখা যাচ্ছে, রাজনীতির শীর্ষ পর্যায়েই স্বদেশের প্রতি মুহব্বতের ঘাটতির অভিযোগ গুরুতর। তবে এ অভিযোগ থেকে রেহাই নেই সাধারণ মানুষেরও। কারণ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার ভাষ্যানুযায়ী ঈমানদার তথা মুসলমান থাকতে হলে কোনো অন্যায় দেখলে তথা স্বদেশের প্রতি কোনো অবিচার দেখলে, স্বদেশের সম্পদ ও সার্বভৌমত্বের প্রতি কোনো অনাচার দেখলে হাত দিয়ে বাঁধা দিতে হবে। মুখে বলতে হবে।
কিন্তু এদেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান বাংলাদেশের প্রতি যেসব অন্যায় করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে গর্জে উঠছে কি? অথচ তারা দাবি করছে তারা মুসলমান। কিন্তু স্বদেশের প্রতি মুহব্বত তথা হক আদায় না করা পর্যন্ত কেউই পাক্কা মুসলমান হতে পারে না। থাকতে পারে না। দাবি করতে পারে না। এখন দেশের সব মুসলমানকে ঠিক করতে হবে- তারা কি ঈমান বিসর্জন দিবে? নাকী ঈমান রক্ষার্থে স্বদেশের প্রতি মুহব্বতে সক্রিয় ও সোচ্চার হবে।
মূলত, এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ অনন্তকালব্যাপী পালন করার ইলম ও জজবা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা মুবারক ফয়েয-তাওয়াজ্জুহ।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বাংলাদেশকে ঘিরে ফেলছে ভারতের- এন-সার্কেল অন্তর্বর্তী সরকারের অন্ত:সারশূণ্যতা শুধু হতাশারই নয় বরং ঘোর অমানিশার।
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দিন দিন বাড়ছে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, খুনসহ মারাত্মক সব অপরাধ এসব অপরাধের মূলে থাকছে কারখানা বন্ধ আর বেকারত্ব বৃদ্ধি এবং সরকারের গৃহীত ভূল অর্থনীতি সরকারের টনক নড়বে কবে?
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
এসএফবি তথ্যানুযায়ী ২০২০ সাল পর্যন্ত দেশে বাস্তচ্যূতদের সংখ্যা ৯৪ লাখ অপরদিকে গত পরশু প্রকাশিত আইওএম পরিবেশিত তথ্যানুযায়ী দেশে বাস্তচ্যূতদের সংখ্যা ৪৩ লাখ দুঃখজনক হলেও সত্য রাষ্ট্র বা সরকারের নিজস্ব তথ্য পরিসংখ্যান নেই। পাশাপাশি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় যথাযথ পদক্ষেপ ও প্রক্রিয়াও নেই। এর সমাধান জরুরী।
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহান বিজয় দিবসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সত্যিকার উপলব্ধি জাগ্রত হোক সবার অন্তরে। সংস্কারের দাবীদার সরকারকে উপলব্ধিতে সক্ষমতা আনতেই হবে- যে, সত্যিকার ইসলামী অনুপ্রেরণাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং সংস্কারের পরিক্রমা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আজ মহিমান্বিত ২৩শে জুমাদাল উখরা শরীফ। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, আফদ্বালুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আজ মহিমান্বিত ২২শে জুমাদাল উখরা শরীফ! খলীফাতু রসূলিল্লাহ, আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া, খলীফাতুল মুসলিমীন, আমীরুল মু’মিনীন সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার সুমহান বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস এবং আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র খিলাফত মুবারক গ্রহণ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আজ মহিমান্বিত ২১শে জুমাদাল ঊখরা শরীফ! যা সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা, খইরু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার মহাপবিত্র ও বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার সুমহান দিবস।
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মুবারক হো- মহাপবিত্র মহাসম্মানিত মহামহিমান্বিত ২০শে জুমাদাল উখরা শরীফ। সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবিয়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতুনা হযরত সিবত্বতুর রসূল আছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস।
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সরকারী ওষুধ লুটের ব্যবসা বহু রকম। জনস্বাস্থ্যের হুমকি বহুবিধ। সংবেদনশীল এ বিষয়টির প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের উদাসীনতা বরদাশতের বাইরে
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
জননিরাপত্তাকে প্রধান কর্তব্য বললেও অন্তর্বর্তী সরকার করুণভাবে ব্যর্থ হচ্ছে কেবলমাত্র খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্র পথে পরিচালিত হলেই সফল হওয়া সম্ভব হবে ইনশাআল্লাহ
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা দুরূহ হলেও অসম্ভব নয় খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্র পরিক্রমায় খুব সহজেই পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা সম্ভব ইনশাআল্লাহ
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
জালিম ও তাবেদার সরকারের করে যাওয়া আত্মঘাতী পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। সরকারের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা আমলাদের বাধা অবদমন করে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর পূরো কর্তৃত্বের অধিকার সেনাবাহিনীকেই প্রতিফলিত করে প্রকৃত শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে ইনশাআল্লাহ।
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












