সুওয়াল-জাওয়াব:
প্রসঙ্গ মূর্তি-ভাস্কর্য দ্বীন ইসলামে নিষিদ্ধ
, ০৯ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৫ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ১৩ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ২৮ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) শিক্ষামূলক জিজ্ঞাসা
সুওয়াল:
এক মুনাফিক কিছু বাতিল ও মনগড়া দলীল জোগাড় করে মূর্তিকে জায়িয প্রমাণ করার অপচেষ্টা করেছে। তার মূল বক্তব্য হচ্ছে, যে মূর্তিকে পূজা, আরাধনা, ইবাদত করা হয়, যেটা মানুষকে মুশরিক বানায়; সেটা নিষেধ। কিন্তু যে মূর্তিকে আরাধনা ইবাদত করা হয় না বরং যে মূর্তি সৌন্দর্য বাড়ায়, সুসজ্জিত করে সেটা নিষেধ নয়।
অতএব, উক্ত ব্যক্তির এ ধরণের যুক্তি কতটুকু ইসলামসম্মত? দলীলসহ জাওয়াব দিয়ে বিভ্রান্তি নিরসন করবেন।
জাওয়াব:
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত আছে-
عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ تَعَالَى عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَـمَّا قَدِمَ مَكَّةَ أَبَى أَنْ يَّدْخُلَ الْبَيْتَ وَفِيْهِ الْآلِهَةَ فَأَمَرَ بِهَا فَأُخْرِجَتْ فَأَخْرَجَ صُوْرَةَ إِبْرَاهِيْمَ وَإِسْمَاعِيْلَ عَلَيْهِمَا السَّلَامُ فِىْ أَيْدِيْهِمَا مِنَ الْأَزْلَامِ فَقَالَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَاتَلَهُمُ اللهُ لَقَدْ عَلِمُوْا مَا اسْتَقْسَمَا بِهَا قَطُّ ثُمَّ دَخَلَ الْبَيْتَ فَكَبَّرَ فِىْ نَوَاحِى الْبَيْتِ
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন পবিত্র কা’বা শরীফ উনার কাছে আসলেন, তখন মূর্তি থাকায় উহার ভিতরে তিনি তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করলেন না। এরপর তিনি নির্দেশ মুবারক দিলেন সেগুলো অপসারণ করার জন্য; এবং তাই করা হলো। সেখানে হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম ও হযরত ইসমাঈল যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাদের প্রতিকৃতিও ছিল, উনাদের হাতে ভাগ্য নির্ধারণী তীর ছিল। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তা দেখে ইরশাদ মুবারক করলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদেরকে (যারা এগুলো বানিয়েছে) ধ্বংস করুন। তারা কি জানতো না যে, হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম ও হযরত ইসমাঈল যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনারা কখনো এসব ভাগ্য নির্ধারণী তীর ব্যবহার করেননি? এরপর তিনি পবিত্র কা’বা শরীফ উনার মধ্যে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করলেন এবং চতুর্দিকে তাকবীর ধ্বনি দেয়া হলো। (বুখারী শরীফ, আবু দাউদ শরীফ)
এভাবে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের অন্যান্য নির্ভরযোগ্য কিতাবেও বর্ণিত হয়েছে।
عَنْ حَضْرَتْ اُسَامَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالى عَنْهُ قَالَ دَخَلْتُ مَعَ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْكَعْبَةَ فَرَاَيْتُ فِى الْبَيْتِ صُوْرَةً فَاَمَرَنِىْ فَاَتَيْتُهُ بِدَلْوٍ مِنَ الْـمَاءِ فَجَعَلَ يَضْرِبُ تِلْكَ الصُّوْرَةَ وَيَقُوْلُ قَاتَلَ اللهُ قَوْمًا يُصَوِّرُوْنَ مَا لَا يَخْلُقُوْنَ
অর্থ: হযরত উসামা বিন যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে পবিত্র কা’বা শরীফ উনার মধ্যে প্রবেশ করলাম। তিনি তাতে কিছু ছবি দেখতে পেলেন। তখন তিনি এক বালতি পানি আনতে আদেশ মুবারক করলেন। আমি পানি আনার পর তিনি তা দিয়ে সেগুলো মুছে দিলেন এবং ইরশাদ মুবারক করলেন- ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি ঐ সম্প্রদায়কে ধ্বংস করুন, যারা এমন জিনিসের আকৃতি দেয় যা তারা সৃষ্টি করতে পারবে না”। (আবু দাউদ শরীফ, মুছান্নাফ ইবনে আবী শাইবাহ, ত্বহাবী শরীফ)
বর্ণিত হাদীছ শরীফসমূহ দ্বারা দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট যে, পবিত্র কা’বা শরীফ উনার মধ্যে মুশরিক নির্মিত মূর্তি ধ্বংস এবং অঙ্কিত ছবি মিটিয়ে দেয়ার পূর্বে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কা’বা শরীফে প্রবেশ করেননি। এমনকি প্রবেশ করার পর যে সমস্ত ছবির অস্তিত্ব অনুভব করেছেন বা ছবির কোন ছাপ উপলব্ধি করেছেন, এমন ছবিগুলোও তিনি নিজ হাত মুবারকে মিটিয়ে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ: হজ্জের ফরজ আদায়ে হারাম ছবি তোলাকে সাময়িক বৈধতা প্রদান....
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সুন্নতী কদমবুছি বিষয়ে কওমী মুখপত্রের শরীয়তের খেলাফ বক্তব্যের খন্ডনমূলক জাওয়াব
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কথিত ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ে শরঈ ফতওয়া (১৪)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: হজ্জের ফরজ আদায়ে হারাম ছবি তোলাকে সাময়িক বৈধতা প্রদান....
২৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৬)
২৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৫)
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রসঙ্গ: পুরুষ-মহিলা নামায আদায়ের ছহীহ পদ্ধতি
১১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৪)
১০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রসঙ্গ: পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন সম্পর্কে বাতিলদের মনগড়া বক্তব্য খন্ড
০৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৩)
০৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কথিত ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ে শরঈ ফতওয়া (১০)
০২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন সম্পর্কে বাতিলদের মনগড়া বক্তব্য খন্ডন
২৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












