প্রায় সাড়ে ১৪০০ বছর পর আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুস সালাম মুবারক-এ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত اِسْتَـوٰى (ইস্তাওয়া) শব্দ মুবারক উনার হাক্বীক্বত মুবারক প্রকাশ (৫)
, ২৫ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১০ সামিন, ১৩৯১ শামসী সন , ০৮ জানুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ২৪ পৌষ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
ইস্তাওয়া সর্ম্পকে হযরত ইমাম মুজতাহদি রহমতুল্লাহি আলাইহমি উনাদরে অভমিত
তাফসীরে বাগভী, মাযহারী, আল আসমা ওয়াছ ছিফাত লিল বাইহাক্বী, লাওয়ামি‘উল আনওয়ারসহ আরো অন্যান্য কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
وَسَاَلَ رَجُلٌ مَالِكَ بْنَ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَـعَالـٰـى عَنْهُ عَنْ قَـوْلِهٖ ﴿ اَلرَّحْـمـٰـنُ عَلَى الْعَرْشِ اسْتَـوٰى ﴾ كَـيْفَ اسْتَـوٰى؟ فَاَطْرَقَ رَاْسَهٗ مَلِـيًّا وَعَلَاهُ الرُّحَضَاءُ ثُـمَّ قَالَ اَلْاِسْتِوَاءُ غَيْـرُ مَـجْهُوْلٍ وَالْكَـيْفُ غَيْـرُ مَعْقُوْلٍ وَالْاِيْـمَانُ بِهٖ وَاجِبٌ وَالسُّؤَالُ عَنْهُ بِدْعَةٌ وَمَا اَظُـنُّكَ اِلَّا ضَالًّا ثُـمَّ اَمَرَ بِهٖ فَاُخْرِجَ
অর্থ: “এক ব্যক্তি হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালাম মুবারক- (আর রহমানু ‘আলাল ‘আরশিস্তাওয়া) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলো যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি কিভাবে ইস্তাওয়া হয়েছেন? তখন তিনি উনার মাথা মুবারক অবনত করে সুদীর্ঘ সময় নিশ্চুপ থাকেন। আর উনার অবস্থা এমন হয় যে, প্রচুর পরিমাণ ঘাম ঝড়ে উনার পুরো শরীর ভিজে যায়, তিনি ক্লান্ত হয়ে যান। তারপর তিনি বলেন, ইস্তাওয়াটা সকলের জানা। এর কাইফিয়্যাত বা ধরণ সবার আক্বল বা বুঝের বাইরে। এই বিষয়ে ঈমান রাখা ওয়াজিব। আর এ সম্পর্কে প্রশ্ন করা বিদা‘য়াত তথা গোমরাহী। আমি তোমাকে গোমরাহ মনে করি। তারপর তিনি সুওয়ালকারীকে বের করে দেয়ার জন্য নির্দেশ মুবারক দেন। তখন তাকে বের করে দেওয়া হয়।” (তাফসীরে বাগবী ২/১৯৭, তাফসীরে মাযহারী ৩/৩৫৯)
হযরত ইমাম আ’যম আবূ হানীফাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
نُقِرُّ بِاَنَّ اللهَ عَلَى الْعَرْشِ اسْتَـوٰى مِنْ غَيْـرِ اَنْ يَّكُوْنَ لَهُ حَاجَةٌ اِلَيْهِ وَاسْتِقْرَار عَلَيْهِ وَهُوَ الْـحَافِظُ لِّلْعَرْشِ وَغَيْـرِ الْعَرْشِ فَـلَوْ كَانَ مُـحْتَاجًا لَـمَّا قَدَرَ عَلٰى اِيْـجَادِ الْعَالَـمِ وَتَدْبِـيْـرُهُ كَالْـمَخْلُوْقِ وَلَوْ كَانَ مُـحْتَاجًا اِلَـى الْـجُلُوْسِ وَالْقَرَارِ فَـقَبْلَ خَلْقِ الْعَرْشِ اَيْنَ كَانَ اللهُ تَـعَالٰـى! تَـعَالَـى اللهُ عَنْ ذٰلِكَ عُلُوًّا كَبِيْـرًاـ
অর্থ: “(হযরত ইমাম আ’যম আবূ হানীফাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘আল ওয়াছিয়্যাহ’ নামক কিতাবে বর্ণনা করেন,) আমরা স্বীকৃতি দেই যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে আযীমের উপর ইস্তাওয়া হয়েছেন। যদিও আরশে আযীমের উপর ইস্তাওয়া হওয়ার এবং তার উপর স্থির হওয়ার উনার কোনো প্রয়োজন ছিলো না। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে আযীম এবং আরশে আযীম ব্যতীত সমস্ত সৃষ্টির হিফাযতকারী। যদি তিনি মুহতাজ হতেন তাহলে তিনি সৃষ্টি জগৎকে অস্তিত্বে আনতে এবং তা পরিচালনা করতে সক্ষম হতেন না। না‘ঊযুবিল্লাহ! যেমন- সৃষ্টি জগৎ সক্ষম নয়। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি যদি বসা এবং অবস্থান করার মুহতাজ হতেন তাহলে আরশে আযীম সৃষ্টি হওয়ার পূর্বে তিনি কোথায় ছিলেন? মহান আল্লাহ পাক তিনি এটা থেকে বহু উর্ধ্বে ছিলেন।” (আল ওয়াছীয়্যাহ্ ১০পৃ., শারহুল ফিক্বহিল আকবার ৬১ পৃ.,)
‘লাওয়ামি‘উল আনওয়ার’ কিতাবে উল্লেখ রয়েছে,
وَرُوِىَ عَنِ الْاِمَامِ الشَّافِعِىِّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ اَنَّهٗ سُئِلَ عَنِ الْاِسْتِوَاءِ اٰمَنْتُ بِلَا تَشْبِيْهٍ وَصَدَّقْتُ بِلَا تَـمْثِيْلٍ وَاِتَّـهَمْتُ نَـفْسِىْ فِـى الْاِدْرَاكِ وَاَمْسَكْتُ عَنِ الْـخَوْضِ فِيْهِ كُلَّ الْاِمْسَاكِ
অর্থ: “হযরত ইমাম শাফি‘য়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছে যে, উনাকে ইস্তাওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো, তখন তিনি বলেছিলেন- ‘(মহান আল্লাহ পাক তিনি ইস্তাওয়া হয়েছেন, এই ব্যাপারে) আমি ঈমান এনেছি (তা) তাশবীহ ব্যতীত, বিশ্বাস করেছি (তা) সাদৃশ্যতা ব্যতীত, (এ বিষয়ে) জানার ব্যাপারে আমি নিজেকে অভিযুক্ত করেছি অর্থাৎ এই বিষয়ে আমার জানা নেই এবং এই ব্যাপারে সমস্ত প্রকার অনর্থক কথা-বার্তা থেকে নিজেকে বিরত রেখেছি।” (লাওয়ামি‘উল আনওয়ার ১/২০০, আল বুরহানুল মুআইয়্যাদ ১/১৮)
হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,
اِسْتَـوٰى كَمَا ذَكَرَ لَا كَمَا يَـخْطُرُ لِلْـبَشَرِ
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি ঐভাবে ইস্তাওয়া হয়েছেন, যেমন তিনি আলোচনা করেছেন। ঐ রকম না, যেরূপ মানুষের অন্তরে উদয় হয়।” (লাওয়ামি‘উল আনওয়ার ১/২০০)
হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বলেন,
نَـحْنُ نُـؤْمِنُ بِاَنَّ اللهَ عَلَى الْعَرْشِ كَيْفَ شَاءَ وَكَمَا شَاءَ بِلَا حَدٍّ وَلَا صِفَةٍ يَــبْـلُغُهَا وَاصِفٌ اَوْ يَـحُدُّهٗ اَحَدٌ فَصِفَاتُ اللهِ مِنْهُ وَلَهٗ وَهُوَ كَمَا وَصَفَ نَـفْسَهٗ لَا تُدْرِكُهُ الْاَبْصَارِ
অর্থ: “আমরা বিশ্বাস করি যে, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি আরশে আযীমের উপর আছেন, যেভাবে ইচ্ছা, যেমন ইচ্ছা, কোনো সীমারেখা ব্যতীত যা কেউ নির্দিষ্ট করেছে এবং কোনো ছিফত ব্যতীত যা কোনো বর্ণনাকারী বর্ণনা করে। কাজেই মহান আল্লাহ পাক উনার ছিফত মুবারক উনার থেকে এবং উনার জন্য। আর তিনি নিজেকে যেমন বর্ণনা মুবারক করেছেন, তিনি তেমন-ই। চক্ষুসমূহ উনাকে দেখেনি।” (তাযকিরাতুল হুফ্ফায)
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আল আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
আজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১১ই যিলক্বদ শরীফ
২০ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার মহাসম্মানিত মাক্বাম মুবারক হাদিয়া
২০ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা কুফরী
১৯ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আখাছ্ছুল খাছ মহাসম্মানিত মুহব্বত মুবারক এবং বিশেষ নৈকট্য মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ মুবারক
১৯ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে, উনার মাহবূব, মুরাদ ও সমগ্র কায়িনাতের মালিক হিসেবে সৃষ্টি মুবারক করেছেন (৪)
১৯ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম,
১৮ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে, উনার মাহবূব, মুরাদ ও সমগ্র কায়িনাতের মালিক হিসেবে সৃষ্টি মুবারক করেছেন (৩)
১৮ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
এক নযরে সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি আলাল আলামীন, আফযালুন নাস ওয়ান নিসা বা’দা রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আস সাবি‘আহ্ আত্বওয়ালু ইয়াদান আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পরিচিতি মুবারক
১৭ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার ফযীলত
১৭ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তরফ থেকে সম্মানিত কুরবানী মুবারক দেয়া প্রত্যেক উম্মতের জন্য ফরযে আইন (৫)
১৬ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে, উনার মাহবূব, মুরাদ ও সমগ্র কায়িনাতের মালিক হিসেবে সৃষ্টি মুবারক করেছেন (১)
১৬ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আজ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৬ই যিলক্বদ শরীফ
১৫ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)