বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও বাড়ছে বাণিজ্যিকভাবে সুন্নতী তীন ফল চাষ
চাষে প্রণোদনা পেলে বাংলাদেশ হতে পারবে বিশ্ববাজারে তীন ফল রফতানিতে শীর্ষস্থানীয়। সরকারের উচিত- ত্বীন ফল চাষে সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতা করা।
, ০৮ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৫ খ্বমীছ ১৩৯১ শামসী সন , ২৪ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রি:, ০৮ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) সম্পাদকীয়
নানা বাধা-বিপত্তি, ষড়যন্ত্রের পরও বাংলাদেশের কৃষিতে এসেছে আমুল পরিবর্তন। নিয়মতান্ত্রিক চাষাবাদের পাশাপাশি ফলমুল উৎপাদনেও প্রতিনিয়ত রেকর্ড করছে বাংলাদেশের চাষিরা। বর্তমানে ফল উৎপাদনে বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। বাংলাদেশের আবহাওয়া-পরিবেশ সবধরণের ফল উৎপাদনের জন্য উপযুক্ত হওয়ায় বহির্বিশ্বে উৎপাদিত অনেক ফলই বাংলাদেশে চাষ হচ্ছে। এরই মধ্যে একটি ফল হলো ‘ত্বীন’। আরবে এই ফলকে ত্বীন নামে ডাকা হলেও ভারত, তুরস্ক, মিসর, জর্ডান ও যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশে এটি ‘আঞ্জির’ নামে পরিচিত।
এটি সাধারণ কোনো ফল নয়। মহাসম্মানিত খাছ সুন্নতি একটি ফল যা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খেয়েছেন। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘যদি জান্নাত থেকে কোনো ফল যমীনে এসে থাকে তাহলে সেটি ত্বীন (ডুমুর)। কারণ জান্নাতের ফল হবে বীজমুক্ত।’ সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে পবিত্র সূরা ত্বীন শরীফ নামে আলাদা একটি সূরা শরীফই রয়েছে এবং মহান আল্লাহ পাক তিনি সেই সূরা শরীফ উনার মধ্যে ত্বীন ফলের নামে শপথ মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
এই মহাসম্মানিত সুন্নতি ফলটি আরব বিশ্বে সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হয়। বর্তমানে মহান আল্লাহ পাক উনার অশেষ রহমতে বাংলাদেশের বুকে এখন ব্যাপক সম্ভাবনার সাথে চাষ হচ্ছে সুন্নতি ফল ত্বীন। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ত্বীন ফলের খামার গাজীপুরে রয়েছে। এছাড়া, দিনাজপুর, ঠাকুরগাও, রাজশাহী, নওগাঁ, খাগড়াছড়ি, খুলনাসহ দেশের অনেক জেলায় চাষ হচ্ছে ত্বীন ফল। বাংলাদেশের মাটি ও আবহাওয়ার সঙ্গে বেশ মানিয়ে নিয়েছে ত্বীন।
সরকারের সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে ত্বীন ফল রপ্তানি করে আন্তর্জাতিক বাজার ধরা সম্ভব। বর্তমানে বিশ্বে ১৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি ত্বীন ফলের বাজার রয়েছে। সম্ভাবনাময় এই ফল চাষ করে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। বাংলাদেশে চাষাবাদ করা ত্বীন জাতগুলোর মধ্যে নীল, মেরুন, লাল, হলুদসহ বিভিন্ন বর্ণের হয়ে থাকে। এখানকার গাছে প্রতিটি ত্বীন ফল ওজনে ৭০ থেকে ১১০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। এসব গাছ ১০০ বছর পর্যন্ত বাঁচে।
দেশের প্রচার মাধ্যমে ত্বীন ফলের চাষ কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারলে অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হবে এবং অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এছাড়াও বিদেশ থেকে ত্বীনের আমদানি নির্ভরতা কমে আসার পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় করা সম্ভব হবে। সেক্ষেত্রে ঘরোয়া বাজারেও এই ত্বীন ফলের একটি বড় ব্যবসায়ীক সম্ভাবনা রয়েছে। এক্সোটিক বা গৌণ ফল হিসেবে স্ট্রবেরী, ড্রাগন কিংবা এভোকেডোর চেয়ে ত্বীন ফলের চাহিদা বেশি বই কম নয়।
অর্থনৈতিক গুরুত্বের পাশাপাশি স্বাস্থ্যগত গুরুত্বই বেশি এই সুন্নতি ফলের। ডুমুরে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ১, ভিটামিন বি ২ ছাড়াও প্রায় সব রকমের জরুরি নিউট্রিশনস যেমন ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, সোডিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, পটাশিয়াম ইত্যাদি। পুষ্টিগুণের পাশাপাশি ত্বীন ফলের অনেক ঔষধী গুণও রয়েছে। এছাড়াও ত্বীন কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে সহায়তা করে। ত্বীন দেহের ওজন কমানো, পেটের সমস্যা দূর করা এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে হৃদপি- সুস্থ রাখাসহ নানা উপকার করে থাকে। মৃগীরোগ, প্যারালাইসিস, হৃদরোগ, ডিপথেরিয়া, প্লীহা বৃদ্ধি ও বুকের ব্যথায় ত্বীন ফল কার্যকরী। ত্বীন শরীরে এসিডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
প্রসঙ্গত, এক সময় বাংলাদেশে ত্বীন ফলের চাষকে অসম্ভব বলেছিলো এদেশেরই কিছু নামধারী কৃষি বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু দেশের দক্ষ চাষিরা কোনোরকম সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই দেশে ত্বীন ফল চাষে সফলতা অর্জন করেছে। যারাই বর্তমানে দেশে ত্বীন ফলের চাষ করছে তারা নিজ উদ্যোগে, নিজ গবেষণায় করছে। ফলে বাংলাদেশে ত্বীন ফলের যে উৎপাদন সম্ভাবনা তা বিকশিত হচ্ছে না। আর এর পুরো ব্যর্থতা হচ্ছে দেশের কৃষি বিভাগের। বিশ্বের কৃষিনির্ভর দেশগুলোতে নতুন ফসল বা ফলের চাষ করা হলে চাষি-খামারিদের সরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়। সরকারিভাবে তাদের প্রশিক্ষণ, উক্ত ফসল নিয়ে গবেষণা এবং প্রণোদনা প্রদান করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে তা করা হয় না। বাংলাদেশের খামারি-উদ্যোক্তারা অনেক সময় ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে পর্যন্ত ভোগান্তির শিকার হয়। ত্বীন ফলের চাষিরাও এই অভিযোগই করেছে। তাদের মতে, যদি সরকারিভাবে তাদের ত্বীন ফল চাষে সহযোগীতা এবং প্রণোদনা-ঋণের ব্যবস্থা করা হতো তাহলে তুরস্ক, আলেজেরিয়া কিংবা লেবাননের মতো বাংলাদেশের উন্নতমানের ত্বীন ফল ব্যাপক পরিসরে চাষ করা সম্ভব হতো। ত্বীন ফলও জনগণের নাগালের মধ্যে আসতো। সবাই এই মহাসম্মানিত সুন্নতি ফল গ্রহণ করতে পারতো।
সঙ্গতকারণেই আমরা মনে করি, সরকারের উচিত সুন্নতি ফল ত্বীন জাতীয়ভাবে বৃহৎ পরিসরের চাষের ব্যবস্থা করা। খাছ সুন্নতি ফল হিসেবে আলাদাভাবে ত্বীন নিয়ে গবেষণা সেল তৈরী করা। বর্তমানে বিচ্ছিন্নভাবে সারাদেশে যেসব চাষিরা ত্বীন ফল চাষ করছে তাদের উপযুক্ত প্রণোদনা প্রদান করা। তাদের ঋণপ্রাপ্তি সহজ করা। মুসলিম দেশগুলোর কাছ থেকে উন্নত জাতের ত্বীন ফল চাষের পদ্ধতি-প্রশিক্ষণ বাংলাদেশের চাষিদের দেয়ার ব্যবস্থা করা। আর এসব ব্যবস্থা গ্রহণ করলে সেদিন আর বেশি দূরে থাকবে না যেদিন বাংলাদেশ থেকে ত্বীন ফল বিদেশের বাজারে রফতানি করে ত্বীন ফলের আন্তর্জাতিক বাজারের বড় অংশে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করবে। সুন্নতি ফল উৎপাদনে বাংলাদেশ থাকবে শীর্ষে। ইনশাআল্লাহ!
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মুবারক হো ১৯শে শাওয়াল শরীফ ১৪৪৫ হিজরীতে অনুষ্ঠিত হলো সাইয়্যিদুনা হযরত খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম ও সাইয়্যিদাতুনা হযরত মুযীরাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনাদের মহিমান্বিত আযীমুশ শ্বান নিসবতে আযীম শরীফ অর্থাৎ মহাপবিত্র নিকাহিল আযীম শরীফ।
২৯ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আজ সুমহান ও বরকতময় পবিত্র ১৮ই শাওওয়াল শরীফ! সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম সিবতু রসূল আছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ অবস্থায় পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ! গোটা উম্মাহ ও মুসলিম বিশ্বের প্রত্যেক সরকারের উচিত- যথাযথ ভাবমর্যাদা ও ভাবধারার সাথে এ দিবস মুবারক পালন করা।
২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিশ্বব্যাপী হালাল পণ্যের বাজার ৪০ ট্রিলিয়ন ডলার। সুবিশাল এই বাজারে প্রবেশে অনেকটাই ব্যর্থ বাংলাদেশ। মান নিয়ন্ত্রণ এবং উন্নত পণ্য ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশও এই সুবিশাল বাজার ধরতে পারে সরকারের উচিত- হালাল পণ্য উৎপাদন রফতানিতে প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করা এবং মুসলিম বিশ্বের বাজার ধরতে কুটনৈতিক তৎপরতা চালানো।
২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
শুধু যুবকরাই নয় এখন এনার্জি ড্রিংকসে বুদ হচ্ছে শিশুরাও কর ফাঁকি দিতে অনেক এনার্জি ড্রিংকস হয়ে গেছে কোমল পানীয় জনস্বাস্থ্য রক্ষা করতে অবিলম্বে এনার্জি ড্রিংকস বন্ধ করতে হবে
২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ তথা ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব এবং পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব।
২৫ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আজ মহিমান্বিত ১৪ই শাওওয়াল শরীফ! আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত সিব্ত্বতু রসূল আর রবি’য়াহ আলাইহাস সালাম উনার পবিত্রতম বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। এবং মাহবুবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, ক্বাইয়ূমে আউওয়াল হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
২৪ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রসঙ্গ: রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম, মুসলমানের দ্বীনি অধিকার, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে পালনের আবহ এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের দায়।
২৩ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম, মহাসম্মানিত রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস উনার মহিমান্বিত, মহাপবিত্র ১২ তারিখ উনার সাথে সম্পর্কযুক্ত আজ মহাসম্মানিত ১২ই শাওওয়াল শরীফ সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার শান মান মুবারক অনুভব করা, মর্যাদা-মর্তবা মুবারক জানা, দয়া-ইহসান মুবারক উপলব্ধি করা সর্বোপরি নেক ছায়াতলে উপনীত হওয়া বর্তমান যামানায় সবার জন্য ফরজ।
২২ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মেগা প্রকল্পে শুধু মেগা দুর্নীতিই নয় নির্ধারিত সময়ের পরে অতিরিক্ত মেগা সময়ও ব্যায় হয় এই স্বেচ্ছাচারিতার জবাবদিহীতা নাই কেন?
২১ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
“অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স নতুন আশঙ্কা এবং বেশিরভাগ অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা কমেছে”- এ তথ্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। নচেৎ সাধারণ অসুখেই প্রাণনাশ হতে পারে
২০ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।
১৯ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ভাসমান সবজি চাষে আনছে অসাধারণ সাফল্য। পরিবেশবান্ধব এ সবজি চাষ পেয়েছে বিশ্ব স্বীকৃতি। বাংলাদেশের কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে ভাসমান সবজি চাষ। সব ধরনের সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া দরকার।
১৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)