ভাসমান সবজি চাষে আনছে অসাধারণ সাফল্য। পরিবেশবান্ধব এ সবজি চাষ পেয়েছে বিশ্ব স্বীকৃতি। বাংলাদেশের কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে ভাসমান সবজি চাষ। সব ধরনের সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া দরকার।
, ০৮ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৯ হাদী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রি:, ০৫ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সম্পাদকীয়

সব প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।
তথ্যমতে, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ অনেক জায়গায়ই হাওর-বাঁওড়, বিল-ঝিল ও নদী-নালায় আচ্ছাদিত। এদিকে সমুদ্রের কাছাকাছি এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়ে থাকে। সত্যি কথা বলতে কি, এই ধান-শালিকের দেশের সিংহভাগ এলাকা বছরের প্রায় ৭ মাস পানিবন্দি থাকে। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, পানিমগ্ন থাকার কারণে কি কৃষি কাজ হয় না বা করা যাবে না? হ্যাঁ, অবশ্যই করা যাবে। এ প্রেক্ষাপটে অন্যতম নিয়ামক ও আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভাসমান সবজি চাষ। এ সূত্র ধরে উল্লেখ্য যে, দক্ষিণাঞ্চলের নাজিরপুর, বানারীপাড়া, উজিরপুর, স্বরূপকাঠি, আগৈলঝাড়া প্রভৃতি উপজেলার বিস্তীর্ণ পানিভূমিতে সবজি চাষ করে চলেছে উল্লেখ্যযোগ্যসংখ্যক কৃষক। এখানে ঢেঁড়শ, চিচিঙ্গা, পেঁপে, লাউ, কুমড়া, শিম, বরবটি, টমেটো, বেগুন, করলা, ঝিঙ্গা, বাঁধাকপি, ফুলকপি, সবুজ কপি ইত্যাদির চারা উৎপাদনসহ কলমিশাক, কচু, পাটশাক, লালশাক, লাউশাক, পালংশাক, ডাঁটাশাকও চাষ করা হয়। বর্ষা মৌসুমে এসব এলাকার হাজার হাজার হেক্টর নিচু জমি কচুরিপানা এবং অন্যান্য পানীজউদ্ভিদসহ পানিমগ্ন থাকে। কিন্তু পানিবদ্ধতা আর কচুরিপানা অভিশাপ হিসেবে মনে করা হলেও, এখন আর তা নয়। বাস্তবসম্মত কৌশলগত চাষের কারণে পরিণত হয়েছে আশীর্বাদে। যতদূর তথ্যাদি সংগ্রহ করেছি, তাতে প্রতীয়মান হয় যে এই ভাসমান সবজি চাষের পথ চলা শুরু হয় নাজিরপুর থেকে এবং কালক্রমে ধীরে ধীরে এ অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। শুধু তাই নয়, কমবেশি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। মজার ব্যাপার হলো, এর জনপ্রিয়তা ও আর্থিক দিক দিয়ে, গ্রহণযোগ্যতার দিক দিয়ে সারণি ধরে বাংলাদেশের সবজি চাষকে স্বীকৃতি দিয়েছে খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (জাতিসংঘ)। তাছাড়া ভাসমান আবাদ গ্লোবাল অ্যাগ্রিকালচার হেরিটেজ সিস্টেম সাইট হিসেবেও স্বীকৃতি পেয়েছে জাতিসংঘ থেকে, যা কম কথা নয়।
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার চর পালরদী গ্রামের কৃষক শাহীন রাড়ী ও জুলহাস মিয়াসহ অনেকেই পাঁচ বছর ধরেই ভাসমান পদ্ধতিতে সবজি চাষ করছে। এবার ভাসমান বেডে সবজি চাষ করছে লাউ শশাসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি। প্রতিটি সারিতে প্রায় ২০ মিটার লম্বা ভাসমান বেড প্রস্তুত করে তাতে চাষ করছে ফসল।
জানা যায়, ছোট ছোট বেড কচুরিপানা দিয়ে তৈরি করে সেখানে চাষ হচ্ছে ঢেঁড়স, বরবটি, লাউ, কুমড়া, লালশাকসহ বিভিন্ন ধরণের সবজি। সার কিংবা কীটনাশক ছাড়াই বর্ষা মৌসুমে বছরের প্রায় ৬ মাস এ পদ্ধতিতে চাষ করা যায়।
কৃষকরা বলছেন, বিগত কয়েক বছর ধরে তারা ভাসমান এই পদ্ধতিতে সবজির চাষ করছে। এর ফলে কম খরচে উৎপাদন বেশি হওয়ায় লাভও ভালো পাচ্ছে চাষিরা। অনেকে এক মৌসুমে ৪০-৫০ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করছেন।
পানিবদ্ধ জমিতে যেখানে স্বাভাবিক পদ্ধতিতে চাষ করার কোনো সুযোগ নেই সেখানে এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা হচ্ছে। সম্পূর্ণ অর্গানিকভাবে এই সবজি উৎপাদিত হয় বলে জনস্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। চাষ হচ্ছে বিষ মুক্ত সবজি।
ভাসমান বেডের সাথে অর্ধভাসমান পদ্ধতি, বস্তা পদ্ধতি, ঢালি পদ্ধতি, ড্রাম পদ্ধতি, ডাইক পদ্ধতি, প্যারামিড পদ্ধতিসহ ইত্যাদি ভাবে পানিবদ্ধ ও পানিমগ্ন পতিত জমিতে চাষ হচ্ছে।
এ প্রেক্ষিতে উল্লেখ্য যে, এক দশক আগে ভাসমান বেডে সবজি ও চারা উৎপাদন হতো মাত্র ৫০ থেকে ৭০ হাজার টন। এখন তা দেড় লাখ টন অতিক্রম করেছে। এর মধ্যে বরিশাল ও পিরোজপুরের ‘মডেল’ দেশের ২৪টি জেলায় সম্প্রসারিত করা হয়েছে। এটা সত্য যে, বর্ষা মৌসুমে, বিশেষ করে কোনো এলাকা বন্যাকবলিত হলে, সেক্ষেত্রে সবজি ও চারার বড় অবলম্বন হলো ভাসমান চাষ পদ্ধতি। মজার ব্যাপার হলো, ঢাকা রাজধানীর সমুদয় ছাদবাগানের বাহারি চারার জোগান আসে এ এলাকা থেকে। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য যে, দেশের ৪৫ লাখ হেক্টর স্থান পানি সীমার মধ্যে রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১০ থেকে ২০ শতাংশ জমিতে যদি ভাসমান সবজির আবাদ করা যায়, তাহলে দেশের সবজি ও মসলা উৎপাদনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা সম্ভব। এদিকে পরিবর্তিত পানিবায়ুর ক্ষেত্রে পরিবেশবান্ধব ও সহায়ক হলো এই ভাসমান সবজি চাষ। তা ছাড়া বন্যা, ঝড় ও পানিচ্ছ্বাসেও তেমন ক্ষতির আশঙ্কা নেই। আর যদি সেইভাবে উদ্যোগ নেওয়া যায়, তাহলে এখনকার উৎপাদিত চারা আশপাশের দেশেও রপ্তানি করা সম্ভব হতে পারে। তা ছাড়া ইতিমধ্যে অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নতুন মাত্রায় যোগ হয়েছে। এই কারণে আগের অনাবাদি জমির মূল্য ও কদর বেড়েছে। এ ব্যাপারে উল্লেখ্য যে, সংশ্লিষ্ট চাষিরা নিজেরা স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার পাশাপাশি অন্যদেরও প্রকারান্তরে স্বাবলম্বী করার পথ খুলে দিয়েছেন। কেননা সবজি ও চারা কেনা-বেচা এবং পরিবহনের সুবাদে কয়েক লাখ লোকের জীবিকার পথ সৃষ্টি হয়েছে। শুধু তাই নয়, সৌন্দর্যের দিক দিয়েও কম নয়। সারি সারি এসব ভাসমান ধাপের অপরূপ সৌন্দর্য বাঙালির মনে বাড়তি হিল্লোল বয়ে আনছে বললে অত্যুক্তি হবে না।
পরিশেষে বলতে চাই, এই পরিবেশবান্ধব ভাসমান সবজি প্রযুক্তি আমাদের নদী-নালা, খাল-বিল, হাওর-বাঁওড়ের দেশে সত্যি আশীর্বাদস্বরূপ এবং আগামী দিনের আলোকবর্তিকা। তাই এই পটেনশিয়াল কার্যক্রমকে আরও প্রসার এবং অর্থবহ করে তোলার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল পর্যায়ের লোকদের অংশীদারত্বের আদলে বিভিন্ন আঙ্গিকে তৎপরসহ এগিয়ে আসতে হবে ইনশাআল্লাহ।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। আমীন!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সুদ ব্যয়ের কারণে আকার বাড়লেও সুফল নেই বাজেটের। সরকারের উচিত, ঋণের ধারা থেকে সরে এসে আভ্যন্তরীণ আয়ের দিকে গুরুত্ব দিয়ে বাজেটকে গণমুখী করা।
১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দুরাবস্থায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তারা অন্যসব সরকারের মত বর্তমান উপদেষ্টারাও গুরুত্ব দিচ্ছে না
১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হিমাগারের ভাড়া বাড়ায় আলু এখন ‘গলার কাঁটা’ আসন্ন জুলাই-নভেম্বরে আলুর দাম ১০০ টাকা পর্যন্ত উঠতে পারে বিপর্যয় ঠেকাতে এখনই ব্যবস্থা নিন
১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র রমাদ্বান শরীফে দ্রব্যমূল্যের দাম স্থিতিশীল থাকবে- অন্তর্বর্তী সরকারের এ প্রতিশ্রুতি যেনো পতিত জালিম সরকারের মত কথার ফুল ঝুড়িতেই পর্যবসিত না হয়
১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আজ মহিমান্বিত পবিত্র ১৭ই শা’বান শরীফ। সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল হাদিয়াহ আশার আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ!
১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
পবিত্র লাইলাতুল বরাতে সংশয়বাদী ও নাসীকারীরা বালহুম আদ্বল। ওদের অন্তরে মোহর পড়ে গেছে পবিত্র লাইলাতুল বরাতে বিশ্বাসী হওয়া ছাড়া কেউ মুসলমান হতে পারে না। মহিমান্বিত লাইলাতুল বরাত উনাকে উপলব্ধি ও উদযাপনের সর্বোত্তম স্থান হলো রাজারবাগ শরীফ
১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মুবারক হো পবিত্র ১৩ই শা’বান শরীফ! সুবহানাল্লাহ! যা সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আর রবিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস।
১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম, মহাসম্মানিত রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস উনার মহিমান্বিত, মহাপবিত্র ১২ তারিখ উনার সাথে সম্পর্কযুক্ত মহাসম্মানিত ১২ই শাবান শরীফ আজ।
১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে ব্যয় বাড়লেও সুবিধার বাইরে ৭১ ভাগ দরিদ্র জনগোষ্ঠী। দারিদ্রের যাঁতাকল থেকে জনগণকে বের করে না আনলে দেশ অবিলম্বে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে। বাঁচতে হলে খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্র চেতনায়ই পাওয়া যাবে প্রকৃত নিরাপত্তা ও সফলতা ইনশাআল্লাহ
১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বিগত সরকারগুলোর মত কথিত অন্তর্বর্তী সরকারও দেশের পতিত জমির দিকে নজর দিচ্ছে না অথচ প্রায় ১ কোটি ৫৩ লাখ ৫৫ হাজার শতক পতিত জমি আবাদের আওতায় এনে দেশকে মহা সমৃদ্ধ করা যায় যতদিন খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্র চেতনা না হবে ততদিন এসব নিয়ামত অধরাই থেকে যাবে (নাউযুবিল্লাহ)
১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
তথাকথিত ইসলামী ব্যাংকগুলো আদৌ ইসলামী নয়। সুদবিহীন ব্যাংক নয়। দ্বীনদার, পরহেজগার মুসলমানের জন্য সুদবিহীন ইসলামী ব্যাংকের সুবিধা ও সেবা নিশ্চিত করতে হবে কেবলমাত্র খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্র পরিক্রমায়ই তা সম্ভব ইনশাআল্লাহ
১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম-মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার ছোহবত মুবারক এবং আখিরী যামানায় মুর্দা দিলের পূনরুজ্জীবন।
১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)