মন্তব্য কলাম
বহুমুখী সমস্যায় পতিত দেশের আগর-আতর শিল্প পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আতর শিল্পে নেই আধুনিক প্রযুক্তির সন্নিবেশ সঙ্কট ও সমস্যা সমাধান করে আগর-আতর শিল্প থেকে ইনশাআল্লাহ রফতানি হতে পারে ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) মন্তব্য কলাম

আতর ভেষজ উৎস থেকে উৎপাদিত সুগন্ধী। আতর শব্দটি ফারসি শব্দ ‘ইতির’ থেকে এসেছে যার অর্থ সুগন্ধী। বিভিন্ন গাছপালা এবং ফুলের নির্যাস থেকে বিভিন্ন তেলের সাথে মিশিয়ে আতর তৈরী করা হত। বর্তমানে আতর শিল্পেও এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
আতর শিল্পের মূল নিয়ামক হচ্ছে আগর। আগর গাছ থেকে তৈরি হয় মূল্যবান আতর। এক কেজি আগর তেলের মূল্য কয়েক লাখ টাকা। আতর শিল্পেও বাংলাদেশে সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে। সিলেটের মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে গড়ে উঠেছে আতর শিল্প। সেখানে আগর চাষের পাশাপাশি ২০০টির মতো ছোট-বড় কারখানা রয়েছে। ভারত, সিঙ্গাপুর, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের অনেক দেশেই রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশে উৎপাদিত আগর থেকে তৈরী আতর। ২০১৩ সালে আগর-আতরকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছে, বাংলাদেশে আগর চাষ কিংবা আতর শিল্পের যে সম্ভাবনা রয়েছে তার তুলনায় খুব কম পরিমাণেই উৎপাদন ও রফতানি হচ্ছে। যার পেছনে জড়িত এ খাতের অনেক সমস্যা ও সরকারী পৃষ্ঠপোষকতার অভাব।
মৌলভীবাজারে আগর গাছ থেকে তৈরি সুগন্ধি শিল্পের বিপুল সম্ভাবনা থাকলেও রপ্তানিতে বৈধ সনদপ্রাপ্তির জটিলতায় ভুগছে ব্যবসায়ীরা। উৎপাদনে আধুনিক পদ্ধতি ও পরীক্ষাগার না থাকায় এর মান নিয়ে সমস্যা, এইচএস কোডসহ বিমানবন্দরে নানা জটিলতায় রপ্তানি বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। আগর রপ্তানির ক্ষেত্রে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা হল সাইটিস (কনভেনশন অন ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইন এনডেঞ্জারড অব ওয়াইল্ড ফনা অ্যান্ড ফ্লোরা) এবং এনওসি (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) সনদ পাওয়া। এ সব শর্তের বেড়াজালে অনেক আতর ব্যবসায়ী আটকা পড়ে। ফলে অনেকে বাধ্য হচ্ছে চোরাই পথে আতর রপ্তানি করতে। ফলে বৈধ পথে রপ্তানি না হয়ে বিকল্প পথে তা চলে যাচ্ছে দেশের বাইরে। আর সরকার হারাচ্ছে বিপুল অংকের রাজস্ব।
আগর শিল্পে নানাবিধ সমস্যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সমস্যা হলো আধুনিক কারিগরি জ্ঞানের অভাব। পুরনো চাষ পদ্ধতি ও নিম্ন মানের পণ্য। একটি বিষয় উল্লেখ করার মতো তা হলো, বাংলাদেশে উৎপাদিত আগর আতর তেল রিফাইনিং (পরিশোধিত) করার ব্যবস্থা নাই। অপরিশোধিত আগর আতর অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে বিক্রি করতে হয় এবং এই সুবিধাটুকু মধ্যপ্রাচ্যের অনেক প্রতিষ্ঠান কাজে লাগিয়ে শুধু রিফাইনিং করেই কয়েকগুণ বেশি অর্থ আয় করে নিচ্ছে। এক্ষেত্রে আগর আতর রিফাইনিং ব্যবস্থাপনার অভাব একটা বড় সমস্যা। এছাড়া কারখানাগুলোয় গ্যাস সরবরাহ সমস্যার কারণে তাদের উৎপাদনও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ২০০ কারখানার মধ্যে অর্ধেকের বেশি কারখানায় গ্যাস সংযোগ নেই। আর যেসব কারখানায় গ্যাস সংযোগ রয়েছে, সেগুলোতে গ্যাসের চাপ কম থাকায় আগুনের তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় ঠিকমতো আতর উঠে না।
প্রসঙ্গত, কৃষি প্রধান বাংলাদেশে আগর একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় অথচ অবিকশিত শিল্প। সরকারি পলিসি প্লানিং এর আওতায় সম্ভাব্য এলাকায় এর চাষ সম্প্রসারণ, চাষ ব্যবস্থা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ কার্যক্রমকে আধুনিক ব্যবস্থাপনার আওতায় নিয়ে আসলে এবং ব্যক্তির পরিবর্তে সরকারি উদ্যোগে প্রধান প্রধান আগর রপ্তানিকারক দেশে বাংলাদেশের আগরজাত পণ্য প্রবেশের অনুকূল পরিবেশ তৈরির মাধ্যমে এ শিল্পের বদ্ধ জানালা খুলে দিলে আগর-আতর বাংলাদেশের একটি প্রিমিয়াম পণ্য হতে পারে। বিশ্ববাজারে এর চাহিদা আরও বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের সিলেট, চট্টগাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে আগর চাষের জন্য উপযোগী ভূমি রয়েছে এবং বর্তমানে সেখানে আগরের আবাদ হচ্ছে। পুরনো পদ্ধতির পরিবর্তে কৃত্রিম উপায়ে আগর গাছে সংক্রমণের আধুনিক প্রযুক্তির প্রবর্তন করা গেলে এবং আগর তেলসহ অন্যান্য আগরজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা সম্ভব হলে আগর শিল্পে বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করতে পারে। উন্নত প্রযুক্তির বিষয়ে থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ভারত প্রভৃতি দেশের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো যেতে পারে। উন্নত পদ্ধতিতে আগর চাষ অত্যন্ত লাভজনক বিধায় সরকারি পলিসি সাপোর্ট ও পৃষ্ঠপোষকতা পাওয়া গেলে এ খাতে বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো সম্ভব হবে। ফলে আগর শিল্প বাংলাদেশে একটি অন্যতম বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনকারী খাত হিসেবে স্থান করে নিবে। উৎপাদকদের সুত্রে, দেশে উৎপাদিত প্রতি তোলা আতরের দাম ৭ হাজার টাকা। যার প্রতি লিটারের মূল্য প্রায় ৭ লাখ টাকা। বর্তমানে সারাবিশ্বে প্রায় ১০ হাজার লিটার আতরের চাহিদা রয়েছে। যার আর্থিক মূল্য দাড়ায় প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। আর উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই বিশাল আতরের বাজার ধরার পূর্ণ সক্ষমতা ও আবহাওয়াগত সুবিধা বাংলাদেশের রয়েছে।
সঙ্গতকারণেই তাই আমরা মনে করি, সরকার সংশ্লিষ্টদের দেশের আগর-আতর শিল্পের উন্নয়নে সরকারিভাবে আগর চাষীদের প্রশিক্ষণের সুবিধা সৃষ্টি করা এবং আগর থেকে বিশ্বমানের বহুবিধ পন্য উৎপাদনের বিষয়ে তাদের দক্ষ করে তোলা। আগরজাত পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বর্তমান অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্যের পরিবর্তে আনুষ্ঠানিক বাণিজ্যে চালু করা। আগর রপ্তানীর ক্ষেত্রে উচ্চ শুল্ক বাঁধা অপসারণ করা। সরকারী বনের আগর গাছ বিক্রির ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রক্রিজাতকরণ শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণের মাধ্যমে এই শিল্পের ফরোয়ার্ড লিংকেজকে শক্তিশালী করে কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পথ প্রশস্ত করা। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ব বাজারে স্থান করে নেওয়ার জন্য আগর চাষীদের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করা।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
যাকাতের নামে আলাদা নিম্নমানের কাপড় তৈরী ও সরবরাহ বন্ধ এবং লোকদেখানো যাকাত দেয়ার প্রবণতা প্রতিহত করতে হবে। যাকাতের কাপড় নিতে গত ৩৫ বছরে নিহত ২৫৪ জন। পবিত্র যাকাতের কাপড়ের নামে সিন্ডিকেট এবং নাম কামানো পবিত্র যাকাতকে অবমাননা করার শামিল। নাউযুবিল্লাহ!
১৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার দোয়ার বরকতে প্রতি বছরই বাড়ছে বাংলাদেশের ভূখ-। ইনশাআল্লাহ অচিরেই সমুদ্রের বুকে শ্রীলঙ্কার চেয়েও বড় ভূখন্ড পাবে বাংলাদেশ। পাশাপাশি এসব দ্বীপ অঞ্চল প্রাকৃতিক খনিজ সম্পদে ভরপুর।
১৪ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ডিজিটালাইজেশনের নামে শিশু-কিশোরদের ইন্টারনেট ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। দেশের ইন্টারনেট জগতে নিয়ন্ত্রণ না থাকায় শিশু-কিশোররা আক্রান্ত হচ্ছে অশ্লীলতায়। শিখছে অনৈতিকতা, বেহায়াপনা, হিংস্রতা। সরকারের উচিত- দ্রুত দেশের ইন্টারনেট জগতে কন্টেন্ট ফিল্টারিংয়ের ব্যবস্থা করা। বিশেষ করে শিশু কিশোরদের ইন্টারনেট আগ্রাসন থেকে বাঁচাতে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার অনুশাসন প্রচার প্রসার করা।
১৩ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সমাজের স্রোত বা সময়ের সাথে আপোসকারীরা উলামায়ে হক্ব নয়। ইসলামী আহকাম ও আন্দোলন পদ্ধতি সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয় না। ইবনুল ওয়াক্ত নয়; কেবলমাত্র আবুল ওয়াক্ত উনারাই পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার ত্রাণকর্তা ও অনুসরণীয়।
১২ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
কর্মক্ষম জনশক্তি তথা কর্মক্ষমতার স্বর্ণযুগে বাংলাদেশ বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৭৫ জনই কর্মক্ষম। এবং ইন্দোনেশিয়া নয়, বাংলাদেশই বিশ্বের সর্ববৃহৎ মুসলিম রাষ্ট্র। বাংলাদেশের মুসলমানের সংখ্যা ৪৫ কোটিরও উপরে। (সুবহানাল্লাহ)
১১ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি এবং উনার অনবদ্য তাজদীদ ‘আত-তাক্বউইমুশ শামসী’ সম্পর্কে জানা ও পালন করা এবং শুকরিয়া আদায় করা মুসলমানদের জন্য ফরয। মুসলমান আর কতকাল গাফিল ও জাহিল থাকবে?
১০ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কথিত স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীরা রোযার উপর গবেষনা করে রোযার মাহাত্ম স্বীকার করে তথাকথিত নোবেল পুরষ্কার পায়! কিন্তু মুসলমান দ্বীন ইসলাম উনার আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় লজ্জাকরভাবে ব্যার্থ হয়। কথিত বিজ্ঞান ও কথিত স্বাস্থ্যবিজ্ঞানী এবং চিকিৎসাবিজ্ঞানের মতে রোযার উপকারিতা অপরিসীম। (পর্ব-২)
০৯ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম মদের বিরুদ্ধে দিয়েছে অসংখ্য সতর্কবার্তা ও নির্দেশনা। অথচ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশে দেয়া হবে মদের লাইসেন্স! মদ-জুয়ার প্রসার মহান আল্লাহ পাক উনার চরম অসন্তুষ্টির কারণ। যার পরিণতি হতে পারে খোদায়ী গযব। নাউযুবিল্লাহ!
০৮ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কথিত স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীরা রোযার উপর গবেষনা করে রোযার মাহাত্ম স্বীকার করে তথাকথিত নোবেল পুরষ্কার পায়! কিন্তু মুসলমান দ্বীন ইসলাম উনার আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় লজ্জাকরভাবে ব্যার্থ হয়। কথিত বিজ্ঞান ও কথিত স্বাস্থ্যবিজ্ঞানী এবং চিকিৎসাবিজ্ঞানের মতে রোযার উপকারিতা অপরিসীম। (পর্ব-১)
০৭ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ডানে সেলফি বামে সেলফি, সেলফি সেলফি সেলফি উন্মাদনায় সমাজে ব্যাপকভাবে বেড়েছে হত্যা, আত্মহত্যা, সম্ভ্রমহরণ, সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা অপরাধ। বিভিন্ন দেশে সেলফি’র উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করলেও বাংলাদেশে কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। সরকারের উচিত অপসংস্কৃতি এবং আত্মহত্যার মতো অপরাধ বন্ধ করতে অবিলম্বে সেলফি নিষিদ্ধ করা।
০৬ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মুসলমানকে ‘মুসলমানিত্ব’ বুঝতে হবে। ‘আশহাদু আন্না মুহম্মাদার রসূলুল্লাহ’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাক্বীক্বীভাবে বলতে হবে ও আমলে আনতে হবে।
০৫ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বিশ্বব্যাপী হালাল পণ্যের বাজার ৪০ ট্রিলিয়ন ডলার। সুবিশাল এই বাজারে প্রবেশে অনেকটাই ব্যর্থ বাংলাদেশ। মান নিয়ন্ত্রণ এবং উন্নত পণ্য ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশও এই সুবিশাল বাজারের অর্ধেকেরও বেশী দখল করতে পারে কিন্তু তন্ত্র-মন্ত্রের সরকারের পর অন্তর্বর্তী সরকারও বোবা বধির অন্ধ কেবলমাত্র খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্র পরিক্রমায়ই সোনার বাংলার সব সোনার সমুজ্জল সমৃদ্ধি অর্জন সম্ভব ইনশাআল্লাহ (প্রথম পর্ব)
০৪ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)