বাজারে বিদেশী পণ্যের আধিপত্য। সরকারের উচিত বাজারে শত ভাগ দেশীয় পণ্যের নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা।
, ২৩ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৪ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ০৩, মে, ২০২৪ খ্রি:, ২০ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সম্পাদকীয়
সব প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সকল সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।
কোনো দেশের অর্থনৈতিক বিকাশের জন্য সে দেশের স্থানীয় তথা দেশীয় পণ্যের বিকাশ জরুরী। বিশ্বের অধিকাংশ দেশই সবসময়ই তাদের দেশীয় পণ্যের বিকাশের দিকে খুব বেশি নজর দিয়ে থাকে। বিশ্বের অধিকাংশ দেশ সবসময়ই বিদেশী পণ্য ক্রয়ের আগে নিজেদের দেশের পণ্যের সম্প্রসারণের কথা বিবেচনা করে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশে দেশী পণ্যের এত সম্ভাবনা থাকার পরও বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতায় থাকা দেশের সরকার কিংবা জনগণের মধ্যে দেশীয় পণ্য ক্রয় কিংবা সম্প্রসারণের মনোভাব খুবই কম। যার কারণে বিদেশী পণ্য ধীরে ধীরে কব্জা করে নিচ্ছে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতের বাজার। মার খাচ্ছে দেশীয় পণ্য উৎপাদনকারী, ব্যবসায়ী ও রফতানিকারকরা। গড়ে উঠছে না নতুন নতুন পণ্য উৎপাদনকারী খাত। এমন পরিস্থিতিতে, অভিজ্ঞমহল দেশীয় পণ্যের বিকাশ ও সম্প্রসারণের প্রতি গুরুত্ব দেয়ার আহবান জানিয়েছে। তাদের মতে, সময় এখনো শেষ হয়ে যায়নি। বাংলাদেশের দেশীয় পণ্যের সম্ভাবনা এতটাই বেশি যে, এখনো দেশী পণ্য সম্প্রসারণ ও বিকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে অতি শীঘ্রই দেশী পণ্য শুধু দেশেই নয় বিদেশের মাটিতেও প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে একটা বদ্ধমূল ধারণা আছে ‘দেশী পণ্যের মান ভালো না, বিদেশী পণ্য উন্নত মানের’। কিন্তু এই ধারণাটি একেবারেই ভুল। অন্যদিকে, দেশীয় পণ্যের মান যদি খারাপ হয়েও থাকে তাহলে তার জন্য দায়ী দেশের জনগণ, সংশ্লিষ্ট মহল ও বিশেষ করে সরকার।
কারণ, আমাদের দেশে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন উন্নতমানের পণ্য উৎপাদন করা হলেও অনেক মানুষ বিশেষ করে দেশের কথিত উচ্চবিত্তরা বিদেশী পণ্যই শুরু থেকে ক্রয় করে আসছে। এতে করে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো উৎপাদন দক্ষতা ও ব্যয় কুশলতা অর্জন করতে পারছে না। শিল্পজাত পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে কলকারখানার যন্ত্রপাতি ক্রয় ও ভবন নির্মাণ বাবদ প্রথমেই বড় ধরনের বিনিয়োগ করতে হয়। ফলে প্রথম পর্যায়ে পণ্যের গড় উৎপাদন খরচ বেশি থাকে, যা উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কমতে থাকে। এদিকে বড় বড় বিদেশি কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরে ওই পণ্যের ব্যবসা করায় তাদের গড় উৎপাদন ব্যয় অনেক কমে আসে। ফলে তারা কম দামে ভালো পণ্য বিক্রি করতে পারে। এখন পণ্যের মানের দোহাই দিয়ে যদি সরকার কিংবা জনগণ দেশীয় পণ্যের বিস্তার না ঘটায় তাহলে কখনোই দেশীয় পণ্যের মান ভালো হবেনা। শিল্প কখনোই শক্তিশালী অবস্থানে যেতে পারবে না।
দেশীয় বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, পোশাক রফতানিতে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয়। বিশ্ববাজার প্রায় দখল করে রেখেছে বাংলাদেশীয় পোশাক। কিন্তু দেশের বাজার দখল করে আছে ভারতসহ বিভিন্ন দেশের পোশাক। ঈদসহ বিভিন্ন উৎসব মৌসুমে বিদেশী পোশাকের আধিপত্যে দেশীয় পোশাক উৎপাদকরা পথে বসে যায়। বাংলাদেশে সারা বছরই হাজার হাজার জাতের ফলের বাম্পার ফলন হয়। কিন্তু এরপরও গত কয়েক বছরে বিদেশ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকার ফল আমদানি করা হয়েছে, গত ৭০ বছর ধরে দেশের ডেইরি খাতে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তোলা হয়েছে। কিন্তু এরপরও বিদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকার দুগ্ধজাত সামগ্রী আমদানি করে দেশের বাজার সয়লাব করে ফেলা হয়। প্রতি বছর ১০ কোটি কেজি উন্নতমানের চা উৎপাদন হয় বাংলাদেশে। কিন্তু এরপরও বিদেশ থেকে গত কয়েক বছরে ৮০ লাখ কেজি চা আমদানি হয়েছে। পাদুকাশিল্পে বাংলাদেশ বিশ্বে ৭ম হলেও বাংলাদেশের জুতার বাজার দখল করে রেখেছে বিদেশী কোম্পানিগুলো। পুরান ঢাকার জিঞ্জিরা সবার পরিচিত। ইলেক্ট্রনিক পণ্য তৈরিতে জিঞ্জিরার কারিগরেরা বেশ পারদর্শী। কিন্তু অর্থনৈতিক সংকট, বাজারজাতকরণ ও সঠিক প্রশিক্ষণের অভাবে এগুতে পারছে না তারা। তেমনি টাঙ্গাইলের তাত শিল্পের কথা বলা যায়। বলা যায়, কুমিল্লার খাদির কথা। এছাড়া দেশে অসংখ্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প কারখানা আছে, যেগুলোতে ভালো মানের পণ্য তৈরি হচ্ছে। কিন্তু পারিপার্শ্বিক সামান্য সহযোগিতা ও প্রচারের অভাবে উঠে দাঁড়াতে পারছে না তারা। যার ফলে এখন বাজার চলে যাচ্ছে বিদেশি কোম্পানিগুলোর হাতে। আর দেশি জনগণ হচ্ছে বিদেশমুখী।
প্রসঙ্গত, অর্থনীতি হচ্ছে দেশের মেরুদ-। দেশের মেরুদ- যদি সোজা রাখতে হয় তাহলে দেশী পণ্য ব্যবহার করাটা হচ্ছে সর্বোত্তম পন্থা। গ্রামগঞ্জে একটা কথা আছে বিদেশী রুই থেকে দেশের পুঁটি মাছ ভালো। এক্ষেত্রে জনগণেরও উচিত হবে দেশীয় পণ্য ক্রয়ের প্রতি জোর দেয়া। এতে করে দেশীয় পণ্যের মানও অনেক ভালো হবে। দেশের ৮০ ভাগ লোক যখন দেশীয় পণ্য কিনতে চাইবে, তখন দেশের শপিংমল কিংবা মার্কেটগুলোতেও বিদেশী পণ্যের বদলে দেশীয় পণ্য আধিপত্য বিস্তার করবে। দেশী পণ্য রাখা শুরু করবেন দোকানদার। দেশী কারখানাগুলো সচল হতে থাকবে। আমদানি ব্যয় কমে আসবে। লাখ লাখ বেকারের কর্মসংস্থান হবে, খেলাপি ঋণ অনেক কমে যাবে। পণ্যের মান বৃদ্ধি পাবে। পণ্যের মান বৃদ্ধি পেলে রফতানি আয়ও বাড়বে। দেশী পণ্য কিনলে ধনী হবেন আমাদের দেশের উদ্যোক্তারা। শ্রমিকদের বেতন বাড়বে। এতে করে দেশ উন্নত হতে বেশি দিন লাগবে না। সবাই দেশী পণ্য ব্যবহার করলে ২০৪১ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না। তার আগেই বিদেশীরা নয় বরং বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা বিশ্বের দেশে দেশে বিনিয়োগ করে বেড়াবে।
বলাবাহুল্য, বাংলাদেশের এমন কোনো খাত নেই যাতে প্রাচুর্যতা নেই। সব খাতই পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে সর্বসেরা হয়ে ওঠার সক্ষমতা রয়েছে। তাই ক্ষমতাসীন সরকারের উচিত হবে শুধু বিদেশী বিনিয়োগ আর বিদেশী পণ্য আমদানির একক চিন্তা বাদ দিয়ে দেশীয় পণ্যের সম্প্রসারণ এবং প্রচারের ব্যবস্থা করা। দেশীয় পণ্যের মান উন্নয়নের জন্য বাজেটে বরাদ্দের ব্যবস্থা করা। দেশীয় পণ্য উৎপাদনকারী কারখানাগুলোতে আধুনিক যন্ত্রাংশ, শ্রমিকদের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা। পাশাপাশি জিঞ্জিরার মতো যেসব শিল্প আপন সম্ভাবনাতেই গড়ে উঠেছে সেগুলোতে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার ব্যবস্থা করা। আর এতে করেই দেশীয় পণ্যের বাজারকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হবেনা। বাংলাদেশী পণ্য আপন সক্ষমতাতেই বিশ্ববাজারে দাপট দেখাতে সক্ষম হবে।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। আমীন!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আসইয়াদ, সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ, মহাসম্মানিত রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস উনার মহিমান্বিত-মহাপবিত্র ৭ তারিখ উনার সাথে সম্পর্কযুক্ত পবিত্র ৭ই যিলক্বদ শরীফ আজ।
১৬ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মুবারক হো! মহিমান্বিত ৬ই যিলক্বদ শরীফ। সুবহানাল্লাহ! মুজাদ্দিদে আ’যমে ছানী, সাইয়্যিদুনা হযরত খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিতা যাওজাতুম্ মুকাররমাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত মুজীরাতুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস।
১৫ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বেসরকারি খাতে কর্মসংস্থান বাড়াতে উদ্যোগ নিন বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ পুনরুদ্ধারে কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন
১৪ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
কুরবানীর পশু নিয়ে মন্ত্রীর আশ্বাসের নিশ্চয়তা কি? দুধ এবং গরু আমদানীর ফলে প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ সেক্টরে আমদানী নয় বরং রফতানী করা সম্ভব।
১৩ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রসঙ্গঃ স্বদেশের প্রতি মুহব্বত দাবিদার মুসলমান এবং স্বদেশের প্রতি আঘাত।
১২ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আজ সুমহান বরকতময় পবিত্র ২রা যিলক্বদ শরীফ! সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, হামিলু লিওয়ায়িল হামদ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদাতুনা হযরত ঊখতু রসূল মিনার রদ্বায়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। সুবহানাল্লাহ! এ সুমহান দিবস মুবারক উনার তাৎপর্য অনুধাবন করা গোটা মুসলিম উম্মাহর জন্য ফরয।
১১ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
রপ্তানি আয় বাড়াতে বহুমুখীকরণের বিকল্প নেই
১০ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর দেশের উদ্যোক্তারা ব্যাংক ঋণসহ বহুবিধ সমস্যায় জর্জরিত সরকারের উচিত- উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে সার্বিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
০৯ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
৮২ ভাগ এলাকা কংক্রিটে ঢাকা- তপ্তনগরী ‘ঢাকার’ উত্তাপ কমাতে হলে ঢাকার সুযোগ-সুবিধা সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। যথাযথ বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে ইনশাআল্লাহ
০৮ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বছরে চারবার বাড়বে বিদ্যুতের দাম বিদ্যুতে ভর্তুকির ৮১ শতাংশই ক্যাপাসিটি চার্জ ক্যাপাসিটি চার্জের নামে সরকারের ভর্তুকির খেসারত জনগণকে বইতে হবে কেন?
০৭ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
উন্নয়নের জোয়ারের প্রচারনার বিপরীতে অল্প বয়সী বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা, তালাক্বপ্রাপ্তা লাখো-কোটি মহিলা মানবেতর জীবন-যাপন করছে। দেশের অসহায় মহিলাদের প্রতি সরকারের বিশেষ হস্তক্ষেপ একান্ত জরুরী।
০৬ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আজ মহিমান্বিত ২৫শে শাওওয়াল শরীফ। সুবহানাল্লাহ! শাফিয়াতুনা, হাবীবাতুনা, ওয়ালীদাতুল মুজাদ্দিদে আ’যম, জাদ্দাতু খলীফাতিল উমাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত দাদী হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার সুমহান পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। উম্মাহর উচিত- এদিনের মা’রিফাত অর্জন ও হক্ব আদায়ে নিবেদিত হওয়া।
০৫ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)