সুন্নত মুবারক তা’লীম
বিবাহ-শাদীর গুরুত্ব-ফযীলত ও খাছ সুন্নতী তারতীব (১)
, ১৫ জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ০৯ সাদিস, ১৩৯৩ শামসী সন , ০৭ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ২২ কার্তিক, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অন্যতম একখানা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক হচ্ছে বিবাহ করা।
বিবাহের শাব্দিক ও পারিভাষিক সংজ্ঞা:
বিবাহের শাব্দিক সংজ্ঞা:
নিকাহ অর্থাৎ বিবাহের শাব্দিক অর্থ দু’টি জিনিস একত্রিত করা। কখনও কখনও নিকাহ বন্ধন বা চুক্তি অর্থে ব্যবহৃত হয়। যেমন বলা হয়, (نكح فلانة) যখন কেউ বিবাহ করার দৃঢ় ইচ্ছা পোষণ করে ও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।
শরীয়তের পরিভাষায় বিবাহ:
عَقْدٌ يُعْتَبَرُ فِيهِ لَفْظُ إِنْكَاحٍ أَوْ تَزْوِيجٍ فِي الْجُمْلَةِ، وَالْمَعْقُودُ عَلَيْهِ مَنْفَعَةُ الِاسْتِمْتَاعِ أَوِ الِازْدِوَاجِ أَوِ الْمُشَارَكَةِ.
“নিকাহ হলো এমন একটি চুক্তি যাতে ‘বিবাহ দেওয়া বা বিবাহ করা’ ইত্যাদির মাধ্যমে উপভোগ বা একত্রে থাকা বা পরস্পর অংশীদার হওয়া বুঝায়”।
বিবাহের হুকুম:
যারা আহলিয়ার হক্ব আদায় করতে সক্ষম, যাদের শারীরিক চাহিদা রয়েছে তবে ব্যভিচারে পতিত হওয়ার আশঙ্কা নেই তাদের জন্য বিবাহ করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক। আর যাদের গুণাহের কাজে, ব্যভিচারে পতিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে তাদের জন্য বিবাহ করা ওয়াজিব। তবে যারা আহলিয়ার হক্ব আদায় করতে অক্ষম তাদের জন্য বিবাহ করা হারাম।
সম্মানিত শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে যে কোনো বয়সের ছেলে-মেয়ের মধ্যেই বিবাহ বন্ধন বৈধ বা জায়িয। অর্থাৎ সম্মানিত শরীয়তসম্মত। কেননা সম্মানিত শরীয়ত অর্থাৎ পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের মধ্যে কোথাও বিবাহের বয়স নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়নি।
এ প্রসঙ্গে “পবিত্র সূরা নিসা শরীফ” উনার ৩ নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَإِنْ خِفْتُمْ أَلَّا تُقْسِطُوا فِي الْيَتَامٰى فَانْكِحُوْا مَا طَابَ لَكُمْ مِّنَ النِّسَاءِ مَثْنٰى وَثُلَاثَ وَرُبَاعَ.
অর্থ: “আর যদি তোমরা ভয় কর যে, ইয়াতীম মেয়েদের হক্ব যথাযথভাবে পূরণ করতে পারবে না, তবে সেসব মেয়েদের মধ্য থেকে যাদের ভালো লাগে তাদেরকে বিবাহ করে নাও দুই, তিন, কিংবা চারজন পর্যন্ত। ” (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ নং: ৩)
খ্বাালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আহালকে তার আহলিয়ার সকল বিষয়ের দেখাশুনার দায়িত্ব দিয়েছেন। যেমন, পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
وَلِلرِّجَالِ عَلَيْهِنَّ دَرَجَةٌ.
অর্থ: আর মহিলাদের উপরে পুরুষদের মর্যাদা রয়েছে। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ -২২৮)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
وَلَهُنَّ مِثۡلُ ٱلَّذِی عَلَیۡهِنَّ بِٱلۡمَعۡرُوفِۚ وَلِلرِّجَالِ عَلَیۡهِنَّ دَرَجَةࣱۗ الرِّجَالُ قَوَّامُوْنَ عَلَى النِّسَاءِ.
অর্থ: “আহালের যেমন আহলিয়ার নিকট সদ্ব্যবহার পাওয়ার অধিকার রয়েছে তদ্রƒপ আহালের নিকট আহলিয়ার সদ্ব্যবহার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। তবে পুরুষদেরকে মহিলাদের উপর কর্তৃত্ব বা দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ” (পবিত্র সূরা নিসা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৪)
অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের পরেই আহাল বা স্বামীর স্থান দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ মু’মিন-মুসলমান আহাল বা স্বামীর সম্মানিত শরীয়তসম্মত খিদমত, তাবিদারী ও সন্তুষ্টির উপর পরকালের খ্বাইর বরকত প্রাাপ্তির ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! (অসমাপ্ত)
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ওযূর একটি মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক অনিচ্ছাকৃত তরক করায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সতর্কতা মুবারক
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ঘুমানোর মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নতী তারতীব মুবারক - ২
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ঘুমানোর মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নতী তারতীব মুবারক -১
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হাত ও পায়ের নখ কাটার মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব মুবারক
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেসব দিনে গোসল করা ও গোসলে কি কি ব্যবহার করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
চিকিৎসা গ্রহণ করা খাছ সুন্নত মুবারক (২)
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
চিকিৎসা গ্রহণ করা খাছ সুন্নত মুবারক (১)
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৫)
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৪)
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৩)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (২)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












