সুওয়াল-জাওয়াব বিভাগ
বিষয়: ১২ই শরীফ কি দুঃখের দিন?
, ০৫ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৩ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৬ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) শিক্ষামূলক জিজ্ঞাসা
জাওয়াব (১ম অংশ): উপরোক্ত বক্তব্য পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের সম্পূর্ণ খিলাফ যা কাট্টা কুফরী। আর “ইন্তিকাল” শব্দের অর্থ হচ্ছে স্থানান্তরিত হওয়া বা করা। অর্থাৎ ইহ্কাল থেকে পরকালে স্থানান্তরিত হওয়া বা গমন করা।
হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের শান মুবারকে ইন্তিকালের হুকুম:
ইন্তিকাল সম্পর্কে হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের শানে বলা হয়েছে-
اَلَا اِنَّ اَوْلِيَاءَ اللهِ لَايَمُوْتُوْنَ بَلْ يَنْتَقِلُوْنَ مِنْ دَارِ الْفَنَاءِ اِلٰى دَارِ الْبَقَاءِ.
অর্থ: “সাবধান! নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার ওলীগণ উনারা মৃত্যুবরণ করেন না বরং উনারা অস্থায়ী আবাস থেকে স্থায়ী আবাসে প্রত্যাবর্তন করেন। ”
শহীদগণ উনাদের শানে ইন্তিকালের হুকুম:
আর যাঁরা শহীদ উনাদের শানে খোদ কালাম পাকে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
وَلَا تَقُوْلُوْا لِمَنْ يُقْتَلُ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ أَمْوَاتٌ ۚ بَلْ أَحْيَاءٌ وَلٰكِنْ لَّا تَشْعُرُوْنَ.
অর্থ: “তোমরা উনাদেরকে মৃত বলোনা। যাঁরা মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় শহীদ হয়েছেন বরং উনারা জীবিত কিন্তু তোমরা তা উপলব্ধি করতে পারছো না। ” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫৪)
অন্যত্র ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِيْنَ قُتِلُوْا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ أَمْوَاتًا ۚ بَلْ أَحْيَاءٌ عِنْدَ رَبِّهِمْ يُرْزَقُوْنَ.
অর্থ: যাঁরা মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় শহীদ হন উনাদেরকে কখনো মৃত মনে করোনা; বরং উনারা উনাদের রব তায়ালা উনার নিকট জীবিত ও রিযিকপ্রাপ্ত। (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৬৯)
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় যামানার লক্ষস্থল ওলীআল্লাহ আওলাদে রসূল মুজাদ্দিদে আ’যম ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার সম্মানিত হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় যাঁরা শহীদ হন উনারা যদি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট জীবিত ও রিযিকপ্রাপ্ত হন এবং উনাদেরকে মৃত বলা নিষেধ হয়ে যায় তাহলে মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বতে যাঁরা বা যেসকল আউলিয়ায়ে কিরাম পুরুষ কিংবা মহিলা উনারা পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন উনাদের সম্পর্কে তাহলে কি হুকুম হবে, তা চিন্তা-ফিকির করতে হবে। বস্তুত সেসম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
اَلْـمَوْتُ جِسْرٌ اِلَى اللهِ.
অর্থ: উনাদের বিছাল শরীফ গ্রহণ হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত দীদার মুবারক লাভের সেতু। অর্থাৎ উনারা পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশের সাথে সাথে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত দীদার মুবারক লাভে ধন্য হন। সুবহানাল্লাহ!
যেমন হানাফী মাযহাবের ইমাম হযরত ইমামে আ’যম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বিছাল শরীফ গ্রহণ করার পর উনাকে যখন দাফন মুবারক করার জন্য খাটিয়ায় করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখন তিনি খাটিয়া মুবারক থেকে বুড়ির মাসয়ালার জাওয়াব দিয়েছিলেন যে, হে বুড়ি! তুমি জেনে রাখ, তোমার ছাগলের থুতনীর পশমের চেয়ে আমার দাড়ী মুবারক অনেক অনেক গুণ সম্মানিত। কারণ হলো, আমি সম্মানিত ঈমান উনার সাথে এবং মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বতে বিছাল শরীফ গ্রহণ করেছি। সুবহানাল্লাহ!
অনুরূপভাবে তৃতীয় হিজরী শতাব্দী সনের বিশিষ্ট বুযুর্গ হযরত যুননূন মিছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পর উনার কপাল মুবারকে কুদরতিভাবে স্বর্ণাক্ষরে লিখিত হয়েছিল
هٰذَا حَبِيْبُ اللهِ مَاتَ فِىْ حُبِّ اللهِ.
অর্থ: ইনি মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বতে বিছাল শরীফ গ্রহণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
একইভাবে যিনি হিজরী সপ্তম শতাব্দী সনের মুজাদ্দিদ, সুলত্বানুল হিন্দ, গরীবে নেওয়াজ, আওলাদে রসূল হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন চীশতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পর উনার কপাল মুবারকে কুদরতীভাবে স্বর্ণাক্ষরে লিখিত হয়েছিল-
هٰذَا حَبِيْبُ اللهِ مَاتَ فِىْ حُبِّ اللهِ.
অর্থ: ইনি মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বতে বিছাল শরীফ গ্রহণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
সত্যিই উনার বিছাল শরীফ গ্রহণের পর উনার প্রধান খলীফা হাফিযে মাদারযাদ হযরত বখতিয়ার কাকী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মুরাকাবার হালতে উনাকে দেখতে পেয়ে সালাম ও কদমবুছী করার পর জিজ্ঞাসা করলেন, হে আমার শায়েখ! মহান আল্লাহ উনার নিকট আপনি কিরূপ ব্যবহার পেলেন? জাওয়াবে সুলত্বানুল হিন্দ, হাবীবুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক উনার নৈকট্যশীল বান্দা অনেক শ্রেণীর। তন্মধ্যে যাঁরা প্রথম শ্রেণী উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত আরশ মুবারকের অধিবাসী। উনারা চব্বিশ ঘন্টা অর্থাৎ দায়িমীভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার দীদার মুবারকে মশগুল। মহান আল্লাহ পাক তিনি দয়া করে আমাকে ঐ শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম ও শহীদগণ, উনাদের শান মুবারকই যদি এ রকম হয় তাহলে হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম উনাদের পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ কি হবে?
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সুওয়াল- জাওয়াব
১৪ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সুওয়াল-জাওয়াব
১১ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ: পুরুষ ও মহিলার নামাযের পার্থক্য
১৭ মার্চ, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সুওয়াল জাওয়াব: প্রসঙ্গ দেনমোহর
২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সুওয়াল: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইলমে গইব সম্পর্কে বাতিল ফিরক্বার লোকেরা বিভিন্ন প্রকার চু-চেরা করে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! এ বিষয়ে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের দলীল সহকারে জাওয়াব প্রদান করলে ঈমান-আক্বীদা হিফাযতে সহায়ক হবে।
২১ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সুওয়াল: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইলমে গইব সম্পর্কে বাতিল ফিরক্বার লোকেরা বিভিন্ন প্রকার চু-চেরা করে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! এ বিষয়ে পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের দলীল সহকারে জাওয়াব প্রদান করলে ঈমান-আক্বীদা হিফাযতে সহায়ক হবে।
২০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সুওয়াল-জাওয়াব
১০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সুওয়াল-জাওয়াব
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সুওয়াল: কোন মাস ও দিনকে অশুভ ও কুলক্ষণে মনে করা এবং কোন রোগ-ব্যাধিকে ছোঁয়াচে বা সংক্রামক মনে করার ব্যাপারে সম্মানিত শরীয়তে কোন বিধি-নিষেধ আছে কি না? জানিয়ে বাধিত করবেন।
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: পবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত
১৮ নভেম্বর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যাকাত
১১ নভেম্বর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সুওয়াল: মসজিদের অনেক ইমাম ও খতীবকে দেখা যায়, তারা দুআ করার সময় মহান আল্লাহ পাক উনাকে তুমি বলে সম্বোধন করে থাকে। এটা কতটুকু শুদ্ধ? পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে সঠিক ফায়ছালা জানিয়ে বাধিত করবেন।
২৬ অক্টোবর, ২০২৩ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)