বৈশিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষিতে দেশে ভোজ্য তেলের আমদানী সমস্যায় ভূট্টার তেলে উৎপাদনে সমাধান সম্ভব সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও পরিকল্পনা মাফিক অগ্রসর হলে ভুট্টার তেল উৎপাদনে দেশের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি প্রচুর রফতানি করাও সম্ভব ইনশাআল্লাহ
, ১১ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৮ সাদিস ১৩৯১ শামসী সন , ২৬ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মন্তব্য কলাম
এই তেল ব্যবহারের ফলে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে। হার্টের অসুখের ঝুঁকি কমে। হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে। সুস্বাদু, মিষ্টি গন্ধ ও সুন্দর রঙের জন্য এই ভোজ্য তেল অধিক জনপ্রিয়। রান্নার তেল ছাড়াও ভুট্টার তেল বায়োডিজেল, সাবান, পেইন্ট, কালি, ওষুধ তৈরিতে ও টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে বিশ্ববাজারে এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
ভোজ্য তেলের বৈশ্বিক মূল্যবৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশেও এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। দিনে দিনে ভোজ্য তেলের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ছে। সরকারের একটি অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে স্থানীয়ভাবে ভোজ্য তেলের উৎপাদন বৃদ্ধি করা। এ জন্য আমন ও বোরো ধানের মাঝে যে সময়টুকু থাকে, ওই সময় স্বল্পমেয়াদি সরিষা চাষ করে সরিষা ও সরিষা তেলের উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ ধরণের উদ্যোগ সহজ মনে হলেও কাজটি কিন্তু চ্যালেঞ্জিং। এর মধ্যে নানা ধরণের প্রযুক্তিগত বিষয় রয়েছে।
ভোজ্য তেলে স্বয়ংসম্পূর্ণ বা আংশিক স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হলে আরো একাধিক উৎস থেকেও ভোজ্য তেল আহরণের উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। যেহেতু দেশে বিপুল পরিমাণে (৫৬.৬ লাখ টন) ভ্ট্টুা উৎপাদিত হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও এর চাষ বৃদ্ধির সম্ভাবনা আছে, তাই ভুট্টার তেল বা কর্ন অয়েল বা কর্ন জার্ম অয়েল উৎপাদন বাংলাদেশের জন্য একটি উজ্জ্বল, সম্ভাবনাময় ও গুরুত্বপূর্ণ খাত।
দৈনিক আল-ইহসানের পর্যবেক্ষণে জানা গেছে দেশে যে পরিমাণ ভুট্টা উৎপাদন হয় তা থেকে প্রায় ১ লাখ ২৭ হাজার টন তেল উৎপাদন করা সম্ভব। ভুট্টা থেকে তেল উৎপাদন করা হলে অন্যসব ভেজিটেবল অয়েলের চেয়েও কম দামে তা ভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া যাবে। সংশ্লিষ্টদের দাবি, ভুট্টা থেকে তেল উৎপাদন শুরু হলে বিদেশ থেকে তেল আনা সম্পূর্ণ বন্ধ করাও সম্ভব হবে। এতে কৃষকরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনি পুষ্টিকর তেল পাবেন ভোক্তারা।
এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত বছর ১৭ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৮ লাখ ১৮ হাজার মেট্রিক টন সয়াবিন ও পাম তেল আমদানি করে দেশের চাহিদা মেটানো হয়েছে। চাহিদা থাকায় বাংলাদেশের বাজারেও বিদেশ থেকে আমদানি করা ভুট্টার তেল পাওয়া যায়। এসব আমদানি করা ভোজ্যতেলের সঙ্গে সরিষা ও অন্যান্য তেলের ফসল থেকে দেশজ উৎপাদন (প্রায় ৩ লাখ টন) যোগ করে দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদা নিরূপণ করা যায়, যা কম-বেশি ২১ লাখ টন/বছর (মতান্তরে ২৪ লাখ টন/বছর)। তাই চাহিদার কথা বিবেচনা করে দেশে ভুট্টার তেল উৎপাদনের কথা এখনই ভাবতে হবে। তাহলে ভোজ্যতেলের আমদানিনির্ভরতা কিছুটা হলেও কমবে এবং বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে।
বিশ্বের ৫০টির অধিক দেশ বাণিজ্যিকভাবে ভুট্টার তেল উৎপাদন করছে। ওপরে বর্ণিত আমাদের যে শক্তি (ংঃৎবহমঃয) রয়েছে সেসবের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে এবং যেসব দুর্বল দিক (বিধশহবংং) রয়েছে তা অতিক্রম/সমাধান করে লক্ষ্য পূরণ করতে হবে। দেশে বর্তমানে ৫৬.৬ লাখ টন ভুট্টা উৎপাদন হয়। তা থেকে প্রায় ৫.৬ লাখ টন কর্নজার্ম পাওয়া যাবে (১০% হিসেবে) এবং ২ লাখ টন তেল নিষ্কাশন করা সম্ভব হবে। এই দুই লাখ টন ভুট্টার তেলের বাংলাদেশে বাজারমূল্য প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা। কর্নজার্ম আলাদা করার পর বাকি অংশ (প্রায় ৯০%) ব্যবহার করে পোলট্রি, পশু ও মাছের খাদ্য এবং কর্নস্টার্চ উৎপাদন করা সম্ভব। তেল নিষ্কাশনের পর যে খৈল পাওয়া যাবে তাও পোলট্রি, পশু ও মাছের খাদ্য তৈরিতে ব্যবহার করা যাবে। তবে এজন্য প্রয়োজন সুসমন্বিত উদ্যোগ। গবেষণা প্রতিবেদন থেকে জানা যায় যে, ভুট্টা ব্রিডিং-এর মাধ্যমে জাত উন্নয়ন করে এর তেলের পরিমাণ ৪% থেকে ১০%-এর অধিক উন্নীত করা যায়। চাষিদের জন্য ভুট্টার বাজার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এর ব্যবহারে ডাইভারসিফিকেশন দরকার। এসবই আমাদের সম্ভাবনার (ড়ঢ়ঢ়ড়ৎঃঁহরঃরবং) বিভিন্ন দিক।
দেশে উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ ভুট্টা ব্যবহার করে আমরা মূল্যবান ভুট্টার তেল উৎপাদন করতে পারি। এজন্য প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা, পলিসি, গবেষণা ও আর্থিক সাপোর্ট, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি (গবেষণা প্রতিষ্ঠানে প্রোডাক্ট ডেভেলেপমেন্ট বিভাগ স্থাপনসহ), প্রশিক্ষিত জনবল তৈরি এবং গবেষণা ও উন্নয়ন কাজ। আমাদের উচিত হবে আর দেরি না করে এখনই তা আরম্ভ করা। এজন্য এখনই কিছু স্বল্পমেয়াদি ও কিছু দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও পরিকল্পনামাফিক অগ্রসর হলে আমরাও ভুট্টার তেল উৎপাদনে সমস্যা শুধু দেশীয় প্রয়োজনে মিটানোই না পাশাপাশি প্রচুর রফতানীতেও সমৃদ্ধ হব ইনশাল্লাহ। তেল আমদানির্ভরতার পরিবর্তে তেল রপ্তানীকারক দেশে পরিনত হব ইনশাল্লাহ।
-মুহম্মদ ওয়ালিউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ: মুসলিম দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক জোরদারের আহবান প্রধানমন্ত্রীর।
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
অপারেশনের ওষুধের টাকা জোগাড় করতে করতে ক্লান্ত রোগীরা ওষুধ আর পরীক্ষার জন্য রোগী পাঠানো হয় বাইরে সব হাসপাতালে দালালচক্র সক্রিয়
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশের শিক্ষার মান ক্রমশই নিম্নমুখী। সার্টিফিকেট ও মুনাফা অর্জনের ক্ষেত্রতে পরিণত হচ্ছে শিক্ষা। কর্মমূখী ও বাস্তবিক শিক্ষার অভাবে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে উঠছে না বাংলাদেশে। সরকারের উচিত, এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
২৫ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার রোবে, দোয়ার বরকতে- কুদরতীভাবে কমে যাচ্ছে ডলারের আধিপত্য বাংলাদেশের রিজার্ভ ডলারে রাখা উচিৎ নয়- এতে লাভ আমেরিকার
১৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার রোবে, দোয়ার বরকতে- কুদরতীভাবে কমে যাচ্ছে ডলারের আধিপত্য বাংলাদেশের রিজার্ভ ডলারে রাখা উচিৎ নয়- এতে লাভ আমেরিকার মুসলিম বিশ্বে অভিন্ন মুদ্রা ব্যবস্থা বিশেষত মূল্যহীন কাগজী মুদ্রা বাদ দিয়ে সুন্নতী দিনার-দিরহাম মুদ্রা চালু করা দরকার ইনশাআল্লাহ
১৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নমরুদের মশা আর এডিস মশার মধ্যে যেমন পার্থক্য নেই তেমনি পার্থক্য নেই নমরুদবাদ আর ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের মধ্যে। নমরুদ মশার ও এডিস মশার গযব থেকে বাঁচতে হলে অবিলম্বে নমরুদবাদ তথা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ প্রত্যাহার করতে হবে।
১৫ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
‘২০৪১ সালে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৮৫ লাখ মেট্রিক টন’ ৩৯ বছরের ব্যবধানে মাছের উৎপাদন বেড়েছে ৬ গুণ উৎপাদন বাড়ছে মাছের, তবুও নাগালে নেই দাম
১৪ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম মদের বিরুদ্ধে দিয়েছে অসংখ্য সতর্কবাণী ও নির্দেশনা। অথচ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশে দেয়া হবে মদের লাইসেন্স! মদ-জুয়ার প্রসার মহান আল্লাহ পাক উনার চরম অসন্তুষ্টির কারণ। যার পরিণতি হতে পারে খোদায়ী গযব। নাউযুবিল্লাহ!
১৩ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের যোগ্যতা ৩.৭৫, তবুও ২.৯৫ পেয়ে অধ্যাপক অন্যান্য দেশে অধ্যাপক হতে ২০ বছর লাগলেও বাংলাদেশে লাগে মাত্র ১২ বছর! গবেষণায় যোগ্যতা না থাকার পরও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিয়োগ পাচ্ছে নামধারী অধ্যাপকরা। গবেষণা কমছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে, প্রশিক্ষণ না পেয়ে দেশ ছাড়ছে গবেষণায় উৎসাহী মেধাবীরা।
১২ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সন্ত্রাসবাদ নয়; জিহাদী যোগ্যতা অর্জন করা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ অনুযায়ী ফরয। ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত দেশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সব নাগরিকের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে।
১১ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
কর্মক্ষম জনশক্তি তথা কর্মক্ষমতার স্বর্ণযুগে বাংলাদেশ অথচ যথাযথ মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিদেশে কর্মরত দেশীয় শ্রমিক স্বদেশে তো ফিরবেই পাশাপাশি বিদেশি কর্মশক্তি বাংলাদেশের শ্রমবাজারে প্রবেশ করবে।
১০ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
কমিশনের লোভে ১০০ টাকার ওষুধের পরিবর্তে ১৫০০ টাকার বিদেশী ওষুধ লেখেন চিকিৎসকরা রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নই চিকিৎসক দুর্বৃত্তায়নকে পালন ও প্রসার করছে ওপেন সিক্রেট ডাক্তারদের কমিশন বাণিজ্য বন্ধে চাই ইসলামী মূল্যবোধের উজ্জীবন
০৯ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)