ব্যাংক ঋণ:
বড়রা লুট করলেও কৃষকরা ফেরত দিচ্ছেন
এডমিন, ০৪ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২২ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৫ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) আজকের পত্রিকা

দেশের ব্যাংক ঋণের প্রায় ৯০ শতাংশই বড় শিল্প, ব্যবসা ও সেবা খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত। খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি প্রায় একই। ব্যাংকের খেলাপ হওয়া ঋণের সিংহভাগই বড় গ্রাহকদের নেয়া। খেলাপি এসব বড় গ্রাহক ব্যাংকের টাকা ফেরত না দিলেও আইনি প্রক্রিয়ারও বাইরে থেকে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম দেশের কৃষকরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশের কৃষকরা ব্যাংক থেকে যে পরিমাণ ঋণ নিচ্ছেন, তার চেয়ে বেশি পরিশোধ করছেন।
দেশের ব্যাংকগুলো থেকে গত অর্থবছরে (২০২২-২৩) কৃষকরা ৩২ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। বিপরীতে তারা পরিশোধ করেছেন ৩৩ হাজার ১০ কোটি টাকা। এর আগেও কৃষকরা ব্যাংক থেকে নেয়া ঋণের চেয়ে বেশি পরিশোধ করেছেন। এমনকি কভিড-১৯ সৃষ্ট দুর্যোগের মধ্যেও কৃষি খাতে ঋণ বিতরণের চেয়ে আদায় হয়েছে বেশি। ২০২০-২১ অর্থবছরে কৃষি খাতে ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার ৫১১ কোটি টাকা। ওই বছর কৃষকরা ২৭ হাজার ১২৪ কোটি টাকা ব্যাংকে পরিশোধ করেছেন।
যদিও ব্যতিক্রম চিত্র দেখা যাচ্ছে শিল্প খাতে মেয়াদি ঋণের ক্ষেত্রে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ব্যাংকগুলো শিল্প খাতে মেয়াদি ঋণ বিতরণ করেছিল ৭২ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা। বিপরীতে আদায় করতে পেরেছিল ৬৪ হাজার ৮৬২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের শিল্প ঋণ বিতরণ ও আদায়ের চূড়ান্ত হিসাব এখনো প্রকাশ করতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরেও এ খাতে বিতরণের চেয়ে আদায় কম হয়েছে। এর আগের পাঁচ অর্থবছরের তথ্য পর্যালোচনায়ও দেখা গেছে, প্রতিবারই ব্যাংকগুলো শিল্প খাতে যে পরিমাণ ঋণ বিতরণ করেছে, আদায় হয়েছে তার চেয়ে অনেক কম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট খেলাপি ঋণের ৫৫ শতাংশই উৎপাদনশীল শিল্প খাতের। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে জাহাজ ভাঙা ও নির্মাণ খাত। এ খাতে বিতরণকৃত ঋণের ২২.৪৩ শতাংশই এখন খেলাপি। এছাড়া তৈরি পোশাক খাতে খেলাপি ঋণের হার ১১.১২ শতাংশ, বস্ত্র খাতে ১১.৫৪ ও চামড়া শিল্পের ১১.৭৫ শতাংশ ঋণ খেলাপি। দেশের মোট খেলাপি ঋণের মধ্যে কৃষি খাতের অংশ মাত্র ২.৯০ শতাংশ।