মক্কা শরীফে মসজিদুল হারাম শরীফে শবে বরাতে রাতব্যাপী ইবাদত বন্দেগী পালনের ঐতিহাসিক দলীল
, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
"وأهل مكة فيما مضى إلى اليوم إذا كان ليلة النصف من شعبان ، خرج عامة الرجال والنساء إلى المسجد ، فصلوا ، وطافو¬¬ا ، وأحيوا ليلتهم حتى الصباح بالقراءة في المسجد الحرام ، حتى يختموا القرآن كله ، ويصلوا ، ومن صلى منهم تلك الليلة مائة ركعة يقرأ في كل ركعة بـ الحمد ، و قل هو الله أحد عشر مرات ، وأخذوا من ماء زمزم تلك الليلة ، فشربوه ، واغتسلوا به ، وخبؤوه عندهم للمرضى ، يبتغون بذلك البركة في هذه الليلة ، ويروى فيه أحاديث كثيرة" (أخبار مكة للفاكهي أبو عبد الله محمد بن إسحاق بن العباس المكي الفاكهي
অর্থ: অতীত থেকে বর্তমানকাল মক্কাবাসী নারী পুরুষগণ শা’বানের মধ্যবর্তী রাতে মসজিদে গমন করেন অতঃপর নামায আদায় করেন, তাওয়াফ করেন, মসজিদে হারামে পবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াতের মাধ্যমে সারা রাত জেগে থাকেন, এমনকি তারা পূর্ণ কুরআন শরীফ খতম করেন। আর যারা একশ রাকাআত নামায আদায় করেন তারা প্রত্যেক রাকাআতে সূরা ফাতিহার সাথে দশবার সূরা এখলাস তিলাওয়াত করেন। যমযমের পানি পান করেন, এর দ্বারা গোসল করেন এবং অসুস্থদের জন্য তা জমা করে রাখেন। এসব আমলের মাধ্যমে তারা উক্ত রাতের বরকত অন্বেষণ করে থাকেন। (আখবারে মক্কা ৩ খন্ড ৮৪ পৃষ্ঠা)
২৭২ হিজরীতে হযরত ইমাম ফাকেহী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ওফাত সন। অর্থাৎ তিনি নববী যুগের অনেক কাছের একজন মানুষ। তিনি বর্ণনা করছেন অতীত থেকে বর্তমানকাল পর্যন্ত মক্কা শরীফের নারী পুরষগন শবে বরাত পালন করতেন অর্থাৎ হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে শুরু করে এই আমল চলে আসছে। শুধু তাই নয় পবিত্র মসজিদে হারাম শরীফেও এ রাতে ইবাদত হতো।
বাতিলদের কাছে প্রশ্ন যদি এই আমল বিদয়াত হতো তাহলে সেই সোনালী যুগে কেউ এই আমলে বিরোধীতা করেছে কি?
তাহলে আজ ১৪০০ বছর পর এসে কারা এর বিরোধীতা করছে? কারা বিরোধীতা করে নব্য মতবাদ প্রচার করছে? যারা শবে বরাতের বিরোধী তারা বিদয়াতি তার নব্য শয়তান। তারা চায় না মানুষ নেক আমল করে বিশেষ রাতে রহমত লাভ করুক।
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ‘লাইলাতুম মুবারাকাহ’ দ্বারা ‘লাইলাতু নিছফি মিন শা’বান’ বা শবে বরাত উনাকেই বুঝানো হয়েছে
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই আমি বরকতময় রজনীতে (পবিত্র শবে বরাত শরীফ-এ) পবিত্র কুরআন শরীফ নাযিল করেছি অর্থাৎ নাযিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আর আমি ভয় প্রদর্শনকারী। উক্ত রাত্রিতে আমার পক্ষ থেকে সমস্ত প্রজ্ঞাময় কাজগুলো ফায়ছালা করা হয়। আর নিশ্চয়ই আমি প্রেরণকারী।” (পবিত্র সূরা দুখান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩-৫)
উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত ‘লাইলাতুম মুবারাকাহ’ দ্বারা পবিত্র শবে বরাত শরীফ উনাকে বুঝানো হয়েছে। তার যথার্থ প্রমাণ তার পরবর্তী পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ‘ইয়ুফরাকু’ অর্থাৎ ‘ফায়ছালা করা হয়’ শব্দটি। প্রায় সমস্ত তাফসীরে সকল মুফাসসিরীনে কিরাম উনারা ‘ইয়ুফরাকু’ শব্দের তাফসীর করেছেন ‘ইয়ুকতাবু’ ‘লেখা হয়’, ‘ইয়ুফাছছিলু’ অর্থাৎ ‘ফায়ছালা করা হয়’, ‘ইয়ুতাজাওওয়াযু’ অর্থাৎ ‘বণ্টন বা নির্ধারণ করা হয়’, ‘ইয়ুবাররিমু’ অর্থাৎ ‘বাজেট করা হয়’, ‘ইয়ুকদ্বিয়ু’ অর্থাৎ (নির্দেশনা দেয়া হয় বা ফয়ছালা করা হয়’ ইত্যাদি শব্দের মাধ্যমে।
কাজেই ‘ইয়ুফরাকু’ শব্দের অর্থ ও ব্যাখ্যা দ্বারা আরো স্পষ্টভাবে ফুটে উঠলো যে, ‘লাইলাতুম মুবারাকাহ’ দ্বারা ‘লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান’ তথা অর্ধ শা’বান উনার রাত (পবিত্র শবে বরাত) বা ভাগ্য রজনীকেই বুঝানো হয়েছে। যেই রাতে সমস্ত মাখলূকাতের ভাগ্যগুলো সামনের এক বৎসরের জন্য লিপিবদ্ধ করা হয়, আর সেই ভাগ্যলিপি অনুসারে পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাসে ‘লাইলাতুল ক্বদর’ বা পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর উনার মধ্যে তা চালু করা হয়। এজন্য ‘লাইলাতুন নিছফি মিন্ শা’বান’ বা পবিত্র শা’বান মাস উনার চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাতকে ‘লাইলাতুত তাজবীজ (ফায়ছালা বা নির্ধারণের রাত) এবং ‘লাইলাতুল ক্বদর’ উনাকে ‘লাইলাতুত তানফীয’ (নির্ধারিত ফায়ছালা কার্যকরী করার রাত বা জারিকরণের রাত) বলা হয়। সুবহানাল্লাহ!
-ইবনে ইসহাক।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
খরচ করার ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক উনার ফায়সালা
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৫)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (১)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিজাতীয় বিধর্মী তথা ইহুদী-নাছারাদেরকে অনুসরণ করা ইসলামী শরীয়তে হারাম-নাজায়িয
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র ‘ছলাতুল জুমুয়াহ’ উনার পূর্বে ৪ রাকায়াত সুন্নত নামায অর্থাৎ পবিত্র ‘ক্বাবলাল জুমুয়াহ’ নামায নিয়ে বাতিলপন্থিদের বিভ্রান্ত্রিকর ও মিথ্যা বক্তব্যের দলীলভিত্তিক জাওয়াব (৬)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ইলিম অর্জন করার পর সে অনুযায়ী যে আমল করে না, তার তিনটি অবস্থার যে কোনো একটি হবেই-
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৪)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ঢিলা-কুলুখের বিধান
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বেপর্দা হওয়া শয়তানের ওয়াসওয়াসাকে সহজ করার মাধ্যম
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












