মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার “তালবীনাহ”- ১
, ০৪ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৩ ছানী, ১৩৯২ শামসী সন , ১১ জুলাই, ২০২৪ খ্রি:, ২৭ আষাঢ়, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
তালবীনাহ এক প্রকার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাদ্য মুবারক। তালবীনাহ শব্দটি লাবানুন (لَبَنٌ) শব্দ থেকে এসেছে। অর্থাৎ তালবীনাহ একটি দুগ্ধজাত খাদ্য। অসুখ-বিসুখে রোগীকে সহজপাচ্য, পুষ্টিকর, সুস্বাদু ও আকর্ষণীয় পথ্য দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অসুখ-বিসুখ, দুঃখ-শোকে তালবীনাহ খাওয়ার পরামর্শ মুবারক দিতেন।
সাধারণত যবের আটার সাথে দুধ মিশিয়ে তালবীনাহ প্রস্তুত করা হয়। সাথে মিষ্টি জাতীয় খাবার, যেমন: মধু অথবা গুড় অথবা চিনি মিশ্রিত করা হয়।
তালবীনাহ সম্পর্কে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ الصِّدِّيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ اَنَّـهَا كَانَتْ تَأْمُرُ بِالتَّلْبِيْنَةِ وَتَقُوْلُ هُوَ الْبَغِيْضُ النَّافِعُ.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তালবীনাহ খেতে মহাসম্মানিত আদেশ মুবারক করতেন এবং ইরশাদ মুবারক করতেন, এটি হল অসাধারণ উপকারী খাবার। ” (বুখারী শরীফ: কিতাবুত ত্বিব: বাবুত তালবীনাতি লিল মারীদ্ব: পবিত্র হাদীছ শরীফ নং -৫৬৯০)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ الصِّدِّيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ أَنَّهَا كَانَتْ تَأْمُرُ بِالتَّلْبِيْنِ لِلْمَرِيْضِ وَلِلْمَحْزُوْنِ عَلَى الْهَالِكِ وَكَانَتْ تَقُوْلُ اِنِّيْ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ اِنَّ التَّلْبِيْنَةَ تُجِمُّ فُؤَادَ الْمَرِيْضِ وَتَذْهَبُ بِبَعْضِ الْحُزْنِ.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি কোন রোগীকে এবং কারো মৃত্যুজনিত শোকাহত ব্যক্তিকে তালবীনাহ খাওয়ানোর মহাসম্মানিত আদেশ মুবারক করতেন। তিনি বলতেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে আমি ইরশাদ মুবারক করতে শুনেছি যে, ‘তালবীনাহ’ রোগীর হৃদপিন্ডকে শক্তিশালী করে এবং নানাবিধ দুশ্চিন্তা দূর করে। ” (বুখারী শরীফ: কিতাবুত ত্বিব: বাবুত তালবীনাতি লিল মারীদ্ব: পবিত্র হাদীছ শরীফ নং- ৫৬৮৯)
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কেউ মহাসম্মানিত মারিদ্বী শান মুবারক গ্রহণ করতেন তখন তিনি তালবীনাহ বানানোর মহাসম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিতেন। তিনি ইরশাদ মুবারক করতেন, এটি অসুস্থ ব্যক্তির হৃদপিন্ডকে শক্তিশালী করে এবং হৃদপিন্ডের অসুস্থ্যতাকে এমনভাবে সুস্থ করে, যেমনিভাবে পানি দ্বারা মুখ ধোয়ার পর ময়লা দূর হয়ে যায়। ” (ইবনে মাজাহ শরীফ)
তালবীনাহ ও ছারীদ:
তালবীনাহ ও ছারীদ একত্রে মিশিয়ে খাওয়া সম্মানিত সুন্নত মুবারক। এ প্রসঙ্গে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ الصِّدِّيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهَا كَانَتْ إِذَا مَاتَ الْمَيِّتُ مِنْ أَهْلِهَا فَاجْتَمَعَ لِذٰلِكَ النِّسَاءُ ثمَّ تَفَرَّقْنَ إِلاَّ أَهْلَهَا وَخَاصَّتَهَا أَمَرَتْ بِبُرْمَةٍ مِنْ تَلْبِيْنَةٍ فَطُبِخَتْ ثُمَّ صُنِعَ ثَرِيْدٌ فَصُبَّتِ التَّلْبِينَةُ عَلَيْهَا ثُمَّ قَالَتْ كُلْنَ مِنْهَا فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ التَّلْبِينَةُ مَجَمَّةٌ لِفُؤَادِ الْمَرِيْضِ تَذْهَبُ بِبَعْضِ الْحُزْنِ.
অর্থ: “সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্য থেকে একজন দীদারে ইলাহীতে প্রত্যাবর্তন করলেন (মহাসম্মানিত বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করলেন)। মহিলাগণ এসে সমবেত হলেন। তারপর নিকট আত্মীয়গণ ও বিশেষ ঘনিষ্ঠ মহাসম্মানিত মহিলাগণ ব্যতীত বাকী সবাই চলে গেলেন। এমন সময় তিনি ডেগে ‘তালবীনাহ’ পাকাতে মহাসম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিলেন। তা পাকানো হলো। এরপর ‘ছারীদ’ (গোশতের মধ্যে রুটি টুকরো করে দিয়ে তৈরী খাবার) প্রস্তুত করা হলো এবং তাতে তালবীনাহ ঢালা হলো। তিনি বললেন, তোমরা এ থেকে খাও। কেননা, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে আমি ইরশাদ মুবারক করতে শুনেছি যে, ‘তালবীনাহ’ রুগ্ন ব্যক্তির অন্তরে প্রশান্তি এনে দেয় এবং শোক- দুঃখ লাঘব করে। (বুখারী শরীফ: কিতাবুত ত্বয়ামা‘য়াহ: বাবুত তালবীনাহ: পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৫৪১৭; মুসলিম শরীফ: কিতাবুস সালাম: বাবুত তালবীনাতু মাজাম্মাতুন লিফুয়াদিল মারীদ্ব : পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ২২১৬)
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
চুল, দাড়িতে তেল দেয়ার ও আচঁড়ানোর মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব
০৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘কিস্সা’
০৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘কিস্সা’
০৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘কিস্সা’
০৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘কিস্সা’
০৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘কিস্সা’
০৬ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার কিশমিশ
০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন বিভিন্ন প্রকারের সুন্নতী খাবার ‘খেজুর’
০৫ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
খরগোশের গোশত খাওয়া খাছ সুন্নত মুবারক
০৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন মাথায় ব্যবহার করার সুন্নতী ‘কেনায়া
০৪ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
কাফির-মুশরিকদের পণ্য পরিত্যাগ করে মহাসম্মানিত সুন্নতী পণ্য ব্যবহার করতে হবে
০৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাদ্য ‘যব’
০৩ অক্টোবর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)