মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নতী খাবার “খরগোশের গোশত”
, ০৩ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৬ তাসি’, ১৩৯১ শামসী সন , ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ খ্রি:, ৩০ মাঘ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
সুন্নতী খাবারের মধ্যে অন্যতম একটি সুন্নতী খাবার হচ্ছে, খরগোশের গোশত।
কেউ যদি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারকে খরগোশের গোশত হাদিয়া নিয়ে আসতেন, তিনি নিজে তা গ্রহণ করতেন। অর্থাৎ আহার মুবারক করতেন এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকেও খেতে বলতেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَةِ ابْنِ الْحَوْتَكِيَّةِ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ قَالَ أَبِي جَاءَ أَعْرَابِيٌّ إِلٰى رَسُولِ اللّٰهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَعَهٗ أَرْنَبٌ قَدْ شَوَاهَا وَخُبْزٌ فَوَضَعَهَا بَيْنَ يَدَيِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ قَالَ إِنِّي وَجَدْتُهَا تَدْمٰى فَقَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لِأَصْحَابِهٖ لَا يَضُرُّ كُلُوْا وَقَالَ لِلْأَعْرَابِيِّ كُلْ.
অর্থ: হযরত ইবনে হাওতাকিয়্যাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন। আমার পিতা বলেছেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সামনে এক গ্রাম্য ব্যক্তি তিনি ভুনা করা খরগোশের গোশত এবং সঙ্গে রুটি নিয়ে এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি এর হায়েজ হতে দেখেছি। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লম তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে বললেন, কোনো সমস্যা নেই, আপনারা খান এবং গ্রাম্য ব্যক্তিকেও বললেন, আপনিও খান। (নাসায়ী শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ নং:- ২৪২৭)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَةْ مُحَمَّدِ بْنِ صَفْوَانَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ أَوْ حَضْرَةْ صَفْوَانَ بْنِ مُحَمَّدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ اصَّدْتُ أَرْنَبَيْنِ فَذَبَحْتُهُمَا بِمَرْوَةٍ فَسَأَلْتُ رَسُوْلَ اللّٰهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْهُمَا فَأَمَرَنِيْ بِأَكْلِهِمَا.
অর্থ: হযরত মুহম্মদ ইবনে ছফওয়ান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু অথবা হযরত ছফওয়ান ইবনে মুহম্মদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি দু’টি খরগোশ শিকার করে চকমকি পাথর দিয়ে যবেহ্ করলাম। এ ব্যাপারে আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি আমাকে এর গোশ্ত খেতে অনুমতি মুবারক দিলেন।
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَةْ أَنَسٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ أَنْفَجْنَا أَرْنَبًا بِمَرِّ الظَّهْرَانِ فَسَعَى الْقَوْمُ فَلَغَبُوا فَأَدْرَكْتُهَا فَأَخَذْتُهَا فَأَتَيْتُ بِهَا أَبَا طَلْحَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ فَذَبَحَهَا وَبَعَثَ بِهَا إِلٰى رَسُوْلِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِوَرِكِهَا أَوْ فَخِذَيْهَا قَالَ فَخِذَيْهَا لاَ شَكَّ فِيهِ فَقَبِلَهٗ. قُلْتُ وَأَكَلَ مِنْهُ قَالَ وَأَكَلَ مِنْهُ. ثُمَّ قَالَ بَعْدُ قَبِلَهٗ.
অর্থ: হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, (মহাসম্মানিত মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার অদূরে) মাররায যহরান নামক স্থানে আমরা একটি খরগোশ ধাওয়া করলাম। লোকেরা সেটার পিছনে ধাওয়া করে ক্লান্ত হয়ে পড়ল। অবশেষে আমি সেটাকে পেয়ে গেলাম এবং ধরে হযরত আবূ ত্বলহা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নিকটে নিয়ে গেলাম। তিনি সেটাকে যবেহ্ করে খরগোশের দুই উরু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত খিদমত মুবারকে পেশ করলেন। (হযরত শু‘বা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, দু’টি উরুই এতে কোন সন্দেহ নেই)। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তা গ্রহণ করেছিলেন। রাবী বলেন, আমি হযরত শু‘বা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি কি খেয়েছিলেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তিনি খেয়েছিলেন। অতঃপর তিনি বললেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তা গ্রহণ করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, পর্ব ৫১, অধ্যায় ৫, পবিত্র হাদীছ শরীফ নং- ২৫৭২; মুসলিম শরীফ ৩৪/৪, পবিত্র হাদীছ শরীফ নং: ১৯৫৩)
উপরোক্ত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফসমূহ থেকে প্রমাণিত হয় যে, খরগোশের গোশত খাওয়া মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৪)
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৩)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (২)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইস্তিঞ্জার আদব ও ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করা সম্পর্কে (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইস্তিঞ্জার আদব ও ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করা সম্পর্কে (১)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রয়োজনে ছুরি এবং চাকু দিয়ে খাবার কেটে খাওয়াও মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
জুতা-মোজা ঝেড়ে পরিস্কার করে পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
চামড়ার মোজা পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০৩)
২৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












