মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক পালন সম্পর্কে হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ফতওয়া মুবারক
, ০১ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১১ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ১০, মে, ২০২৪ খ্রি:, ৩১ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
যিনি হাম্বলী মাযহাব উনার ইমাম; হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি একবার ফতওয়া মুবারক দিলেন যে, ‘সম্মানিত সুন্নত মুবারক পালন করা ফরয। ’
তিনি যখন ফতওয়া মুবারক দিলেন, তখন উনার সময়কার যারা ইমাম, মুজতাহিদ ও ফক্বীহ ছিলেন উনারা এসে বললেন, ‘হে হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি! আমরা আপনাকে ইমাম, মুজতাহিদ ও ফক্বীহ মনে করি। অথচ আপনি কি করে সম্মানিত সুন্নত মুবারক পালন করা ফরয ফতওয়া দিলেন? এর স্বপক্ষে আপনার কোন দলীল আছে কি? তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, এ ব্যাপারে ক্বিত‘য়ী বা অকাট্য দলীল রয়েছে। আমরা তো সবাই হাফিযে কুরআন।
জবাবে হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন আপনারা এতোবড় হাফিযে কুরআন হয়ে এতোদিন কি পবিত্র কুরআন শরীফ পড়লেন আর পড়ালেন? আপনাদেরতো চুল দাড়ি পেকে গেছে, আপনারা কি ঐ পবিত্র আয়াত শরীফ পড়েন নাই? মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوا وَاتَّقُوا اللَّـهَ إِنَّ اللَّـهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ.
অর্থ: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তোমাদের কাছে যা কিছু নিয়ে তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেছেন তা তোমরা শক্তভাবে আঁকড়িয়ে ধরো। আর যা কিছু থেকে বিরত থাকতে বলেছেন, তা থেকে তোমরা বিরত থাকো। এ বিষয়ে মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করো। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি কঠিন শাস্তিদাতা। (পবিত্র সূরা হাশর শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৭)
উক্ত সম্মানিত আয়াত শরীফ দ্বারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত সুন্নত মুবারক পালন করা ফরয প্রমাণিত হয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
জবাবে হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন, হ্যাঁ পবিত্র কুরআন শরীফেই দলীল রয়েছে। এটা শুনে তারা বললো বলেনকি পবিত্র কুরআন শরীফে দলীল রয়েছে?
উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ বলার সাথে সাথে তারা সমস্বরে বলে উঠলো হ্যাঁ আমরা পেয়েছি, বুঝেছি; কিন্তু এতোদিন ফিকির করি নাই।
পাঠক চিন্তা করুন ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি শুধু পবিত্র আয়াত শরীফ বলেছেন ব্যাখ্যাও করেননাই তাতেই সমসাময়িক ইমাম-মুজতাহিদগণ বুঝে গেছেন, তাহলে বর্তমান জামানায় কাঠমুল্লারা পুথিগত বিদ্যা দিয়ে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ কী করে বুঝবে?
সম্মানিত সুন্নত মুবারক সম্পর্কে সঠিক ইলিম অর্জন এবং তা আমলে বাস্তবায়ন সাধারণ লোক তো দূরের কথা যারা মাদরাসায় পড়াশোনা করেন ও পড়ান তাদের পক্ষেও সম্ভব হয়ে উঠেনা। এ কারণে মহান আল্লাহ পাক তিনি যুগে যুগে হাদী এবং মুজাদ্দিদগণ উনাদের পাঠিয়ে থাকেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন-
إِنَّ اللَّهَ يَبْعَثُ لِهَذِهِ الْأُمَّةِ عَلَى رَأْسِ كُلِّ مِائَةِ سَنَةٍ مَنْ يُجَدِّدُ لَهَا دِينَهَا.
অর্থ: “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার উম্মতের জন্যে প্রত্যেক হিজরী শতকের শুরুতে একজন সম্মানিত মুজাদ্দিদ প্রেরণ করবেন, যিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার তাজদীদ করবেন অর্থাৎ সমস্ত বিদয়াতকে দূর করে মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক পুনরুজ্জীবিত করবেন”। (আবূ দাউদ শরীফ)
সেই ধারাবাহিকতায় মহান আল্লাহ পাক তিনি বর্তমান পঞ্চদশ হিজরী শতাব্দীর মুজাদ্দিদ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, রহমাতুল্লিল ‘আলামীন, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনাকে পাঠিয়েছেন। তিনি পরিপূর্ণরুপে উল্লেখিত মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারকসহ সর্বপ্রকার মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক জারী করতেছেন। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পরিপূর্ণ অনুসরণের লক্ষ্যেই খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, রহমাতুল্লিল ‘আলামীন, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন “আন্তর্জাতিক মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র”। একই সাথে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে প্রচার-প্রসারের জন্য নিজস্ব পরিবহনের মাধ্যমে ভ্রাম্যমান সম্মানিত সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র কাজ করে যাচ্ছে।
অতএব, কেউ যদি পরিপূর্ণভাবে মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার অনুসরণ-অনুকরণ করতে চান তাহলে অবশ্যই উনাকে খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, রহমাতুল্লিল ‘আলামীন, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নিকট বাইয়াত গ্রহণ করে উনার ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করে উনার তা’লীম মুবারক গ্রহণ করে আমলে বাস্তবায়নের মাধ্যমে আল্লাহওয়ালা হতে হবে।
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ঘুমানোর মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নতী তারতীব মুবারক - ২
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ঘুমানোর মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নতী তারতীব মুবারক -১
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হাত ও পায়ের নখ কাটার মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব মুবারক
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেসব দিনে গোসল করা ও গোসলে কি কি ব্যবহার করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
চিকিৎসা গ্রহণ করা খাছ সুন্নত মুবারক (২)
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
চিকিৎসা গ্রহণ করা খাছ সুন্নত মুবারক (১)
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৫)
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৪)
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৩)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (২)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












