মহিলাদের জন্য হাত, পা ও চেহারা আবৃত করে ঘর থেকে বের হওয়া ফরয। খোলা রেখে বের হওয়া হারাম, জায়েয বলা কুফরী (২২)
, ১৪ ছফর শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১০ ছালিছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ০৯ আগস্ট, ২০২৫ খ্রি:, ২৬ শ্রাবণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) মহিলাদের পাতা
মহাসম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার থেকে মুখ ঢেকে পর্দা করা ফরয হওয়ার দলীল :
মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اسْمَاعِيل بْن أَبِي خَالِدٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِما عَنْ أُمِّهِ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْها قَالَتْ: دَخَلْنَا عَلَى حَضْرَتْ اُمّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ الصِّدِّيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ يَوْم التَّرْوِيَة ...فَقَالَتْ لَهَا: يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِين عَلَى الْمَرْأَة مِنَّا أَنْ تُغَطِّي وَجْهَهَا وَهِيَ مُحْرِمَة؟ فَرَفَعَتْ حَضْرَتْ اُمّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ الصِّدِّيْقَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ خمارَها مِنْ صدرِها فغَطَّتْ بِهِ وجهَها حَتَّى وضعتْهُ عَلَى رأْسِهَا-
অর্থ: হযরত ইসমাঈল ইবনে খালিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত: তিনি উনার মাতা থেকে বর্ণনা করেন, উনার মাতা রহমাতুল্লাহি আলাইহা বলেন, আমরা তারবিয়ার দিনে উম্মুল মুমিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ-ছালিছা ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র ছোহবত মুবারকে গেলাম। .... অতঃপর তিনি উনাকে সুয়াল মুবারক করলেন, হে উম্মুল মুমিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ-ছালিছা ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম! ইহরাম অবস্থায় আমাদের মহিলাদের উপর কি তাদের চেহারা ঢেকে রাখা ওয়াজিব? তখন উম্মুল মুমিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ-ছালিছা ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি উনার ওড়না মুবারক উনার বক্ষ মুবারক থেকে উঠিয়ে তা দ্বারা উনারা চেহারা মুবারক ঢেকে নিলেন, এমনকি উনার মাথা মুবারক উনার উপরে ওড়না রেখে ঢেকে দিলেন।
(তারীখু আবী খাইছামা- ২/১০০৪, আত-তালখীছুল হাবীর লি-ইবনে হাজার আসকালানী- ২/৫৭৬, হাশিয়াতু জামিয়ি’ল উছূল- ৩/৩১, আত-‘তালীকু আলা সুনানি আবী দাউদ- ৬পৃষ্ঠা, শারহু কিতাবিল হজ্জ মিন ‘উমদাতিল আহকাম- ৩ পৃষ্ঠা)
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ إِبْرَاهِيم بْن سَعْدٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِما عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِما أَنَّ حَضْرَت فَارُوْق اَعْظَم عَلَيْهِ السَّلَام أَذِنَ لأَزْوَاجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْحَجِّ فِي آخِرِ حَجَّةٍ حَجَّهَا وَبَعَثَ مَعَهُنَّ حَضْرَتْ ذَا النُّوْرَيْن عَلَيْهِ السَّلَام وَ حَضْرَتْ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ عوف رَضِيَ اللّٰهُ تعالى عَنْهُ. قال: كان حَضْرَت ذُوْ النُّوْرَيْن عَلَيْهِ السَّلَام ينادي ألا لا يَدْنُو إِلَيْهِنَّ أَحَدٌ وَلا يَنْظُرُ إِلَيْهِنَّ أَحَدٌ. وَهُنَّ فِي الْهَوَادِجِ عَلَى الإِبِلِ. فَإِذَا نَزَلْنَ أَنْزَلَهُنَّ بِصَدْرِ الشِّعَبِ. وَكَانَ حَضْرَت ذُوْ النُّوْرَيْن عَلَيْهِ السَّلَام وَ حَضْرَت عَبْدُ الرَّحْمَنِ رَضِيَ اللّٰهُ تعالى عَنْهُ بِذَنَبِ الشِّعَبِ فَلَمْ يَصْعَدْ إِلَيْهِنَّ أَحَدٌ.
অর্থ: হযরত ইবরাহীম ইবনে সা’দ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার পিতা থেকে, উনার পিতা উনার দাদা থেকে বর্ণনা করেন: তিনি বলেন, নিশ্চয়ই হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি হযরত উম্মাহাতুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে পবিত্র হজ্জ উনার শেষের দিন পবিত্র হজ্জ করার ব্যবস্থা করতেন। হজ্জের ক্ষেত্রে উনাদের খিদমত মুবারক আঞ্জাম দেয়ার জন্য তিনি হযরত যূন নূরাইন আলাইহিস সালাম এবং হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়া’লা আনহু উনাদের দু’জনকে সঙ্গে করে পাঠাতেন। হযরত যূন নূরাইন আলাইহাস সালাম তিনি উনাদের বাহনের সামনে ভ্রমণ করে ঘোষণা দিতেন যে, হে মানব সকল! আপনারা কেউ উনাদের বাহনের নিকটবর্তী হবেন না, এবং কেউ উনাদের দিকে তাকাবেন না। ঐ সময় উনারা উটের উপর হাওদার মধ্যে অবস্থান মুবারক করতেন। যখন উনাদেরকে নামানো হতো, তখন লোকজনকে সরিয়ে লোকজনের মাঝখানে উনাদেরকে নামানো হতো। ঐ সময় হযরত যূন নূরাইন আলাইহিস সালাম এবং হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়া’লা আনহু উনারা উক্ত হাওদার দু’পাশের্^ অবস্থান করে লোকজনকে দূরে সরিয়ে রাখতেন, ফলে কেউ উনাদের দিকে দৃষ্টি দিতেন না।
(ফাতহুল বারী লি-ইবনি রজব- ৪/৭৩, বদরুত তামাম শারহু বুলূগিল মারাম-৫/২০০, বজলুল মাজহুদ ফী-হাল্লি সুনানি আবী দাউদ- ৭/১১, আত্ব-ত্ববাকাতুল কুবরা- ৮/১৭৯, আহাদীছু উম্মুল মুমিনীন হযরত ‘আয়িশা- ১/১২৩, ছিফাতুল হিজাবিশ শর‘িয়য়্যী- পৃ:১১৬)
“আহাদীছু উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়িশা”-উক্ত কিতাবে আরো অতিরিক্ত উল্লেখ রয়েছে যে-
فَاِذَا دنَا مِنْهُنَّ أَحَدٌ يَصِيْحُ إِلَيْكَ إِلَيْكَ و كَانَ عبْدُ الرَّحْمنُ يَسِيْرُ عَلى رَاحِلَتِهِ مِنْ وَّرَائِهِنَّ يَفْعَلُ مِثْلَ ذَالِك-
অর্থ: কেউ উনাদের বাহন মুবারক উনার নিকটবর্তী হওয়ার উপক্রম হলে তখন চিৎকার দিয়ে বলতেন إليك. إليكঅর্থাৎ দূরে সরুন, দূরবর্তী হউন। উনাদের বাহন মুবারক উনার পিছনে হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়া’লা আনহু তিনিও তদ্রুপ ঘোষণা করতেন এবং বলতেন। (আহাদীছু উম্মুল মুমিনীন আয়িশা-১/১২৩)
বলাবাহুল্য যে, উপরোল্লেখিত পবিত্র হাদীছ শরীফসমূহ দ্বারা গাইরে মাহরামদের থেকে হাত ও মুখ ঢেকে রাখা ফরয হওয়ার বিষয়টি মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যামানা থেকেই প্রচলিত হওয়া অকট্যভাবে প্রমাণিত হয়।
-মুহম্মদ মুফীদ্বুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
তিন ধরনের লোক বেহেশতে প্রবেশ করবে না
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
হযরত উম্মে সুরাইকা দাওসিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সর্বক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রাধান্য দিতে হবে
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (৩)
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (১০)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৪)
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












