মাটির পাত্রে খাবার খাওয়া মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক-৫
, ২৫ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৮ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ১৮ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ০৪ চৈত্র, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
قَالَ حَضْرَتْ اَنَسٌ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ اِنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِيْنَ ابْتَنٰى بِسَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ السَّابِعَةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ (سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ زَيْنَبَ عَلَيْهَا السَّلَامُ) اَمَرَهٗ اَنْ يَدْعُوَ لَهٗ قَوْمًا سَمَّاهُمْ وَكُلَّ مَنْ لَقِيْتَ حَتَّى امْتَلَأَ الْبَيْتُ وَالْحُجْرَةُ وَقُدِّمَ اِلَيْهِمْ تَوْرًا فِيْهِ قَدْرُ مُدٍّ مِّنْ تَمْرٍ جَعَلَ حَيْسًا فَوَضَعَهٗ قُدَّامَهٗ وَغَمَسَ ثَلَاثَ اَصَابِعِهٖ وَجَعَلَ الْقَوْمُ يَتَغَدُّوْنَ وَيَخْرُجُوْنَ وَبَقِيَ التَّوْرُ نَحْوًا مِمَّا كَانَ وَكَانَ الْقَوْمُ اَحَدًا اَوْ اثْنَيْنِ وَسَبْعِيْنَ .
অর্থঃ- হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আস সাবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম (সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব বিনতে জাহাশ আলাইহাস সালাম) উনাকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নিসবাতুল আযীম শরীফ-এ গ্রহণ করেন তখন তিনি আদেশ মুবারক করেন উনার নিকট সম্প্রদায়ের লোকদেরকে ডেকে আনতে, তিনি উনাদের নাম উল্লেখ করেন, এবং যার সাথেই আমি সাক্ষাত করবো তাদের প্রত্যেককে ডাকার জন্য নির্দেশ মুবারক করেন, এমনকি এভাবে দাওয়াত দিতে দিতে এত লোক হলো যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফ এবং বাড়ী মুবারক লোকে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনাদের সম্মুখে একটি মাটির পাত্র পেশ করেন, যাতে ছিলো এক মুদ পরিমাণ খেজুর। তা দিয়ে তিনি হায়েস তৈরী করেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মাটির পাত্রটি উনার সম্মুখ মুবারকে রাখলেন এবং উনার তিনটি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শক মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আঙ্গুল মুবারক) তাতে প্রবেশ করালেন/ ডুবালেন। আর দাওয়াতপ্রাপ্ত সম্প্রদায়ের সকলেই আহার করলেন এবং চলে গেলেন। সকলে আহার করে চলে যাওয়ার পর মাটির পাত্রটিতে সেই পরিমাণ হায়েসই থেকে যায়, যে পরিমাণ হায়েস উনারা সকলে খাওয়ার পূর্বে ছিলো। অর্থাৎ সকলে খাওয়ার পরেও বিন্দু পরিমাণ খাবারও পাত্র থেকে কমেনি। আর দাওয়াতপ্রাপ্ত সম্প্রদায়ের লোকের সংখ্যা ছিলেন ৭১ জন অথবা রাবীর সন্দেহ উনারা ছিলেন ৭২ জন। (আল ক্বওলুল আক্বওয়াম ফী মু’জিযাতিন নাবীইয়্যিল আকরাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- ১ম খণ্ড ১১৯ পৃষ্ঠা)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَلِيِّ بْنِ رَبِيعَةَ اَنَّ سَيِّدَنَا حَضْرَتِ الْاِمَامَ الْاَوَّلَ كَرَّمَ اللهُ وَجْهَهٗ عَلَيْهِ السَّلَامُ (سَيِّدَنَا حَضْرَتْ عَلِيًّا عَلَيْهِ السَّلَامُ) كَانَ يُطْعِمُ النَّاسَ فِىْ اَجَاجِيْنَ خَزَفٍ.
অর্থ: হযরত আলী ইবনে রবী‘আহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি মাটির বড় পাত্রে মানুষদেরকে খাবার খাওয়াতেন। (কিতাবুল আমওয়াল লি ইবনে যানজূইয়াহ- ২য় খ- ৫৬৩ পৃষ্ঠা, পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৯৩১)
উক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত خَزَفٌ শব্দের অর্থ হচ্ছে- মৃৎপাত্র, অর্থাৎ মাটির পাত্র।
উক্ত শব্দের ব্যাখ্যায় আল ক্বামূসুল মুহীত-৩য় খ- ১৩২ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে-
اَلْخَزَفُ مُحَرَّكَةٌ: كُلُّ مَا عُمِلَ مِنْ طِيْنٍ وَشُوِىَ بِالنَّارِ حَتّٰى تَكُوْنَ فَخَّارًا.
অর্থ: خَزَفٌ (সবগুলো হরফে হরকত দিয়ে) হচ্ছে, প্রত্যেক ঐ পাত্র যা মাটি থেকে তৈরী করা হয় এবং পাত্রে পরিণত অর্থাৎ পাকা বা টনটনে না হওয়া পর্যন্ত যাকে আগুনে পোড়ানো হয়। (অসমাপ্ত)
-মুহম্মদ আলমগীর হুসাইন মুরাদী
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ওযূর একটি মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক অনিচ্ছাকৃত তরক করায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সতর্কতা মুবারক
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ঘুমানোর মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নতী তারতীব মুবারক - ২
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ঘুমানোর মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নতী তারতীব মুবারক -১
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হাত ও পায়ের নখ কাটার মহাসম্মানিত সুন্নতী তারতীব মুবারক
১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেসব দিনে গোসল করা ও গোসলে কি কি ব্যবহার করা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
চিকিৎসা গ্রহণ করা খাছ সুন্নত মুবারক (২)
১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
চিকিৎসা গ্রহণ করা খাছ সুন্নত মুবারক (১)
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৫)
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৪)
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৩)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (২)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












