মিশরের নীলনদের ঘটনা
মিশরবাসীগণ নীলনদের পানি দিয়ে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতো।
ঘটনা-৪১
এডমিন, ০৬ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৩ সাদিস ১৩৯১ শামসী সন , ২১ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ০৫ অগ্রহায়ণ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) মহিলাদের পাতা

আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি সেই চিঠি পড়ে হযরত আমর ইবনে আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার উপরে অত্যন্ত সন্তুষ্ট হলেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার শুকরিয়া আদায় করলেন যে, উনার যিনি প্রতিনিধি তিনি এই বদ রসম পালন করেননি। সুবহানাল্লাহ! তিনি চিঠির জবাবে লিখলেন, ‘আপনি যা করেছেন উত্তম করেছেন। চিন্তার কোনো কারণ নেই। আমরা এই কুফরি শিরকি বদ রসম পালন করব না; যেহেতু সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে এটা হারাম।’ তিনি আলাদা একটা চিঠি হযরত আমর ইবনে আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা উনাকে পাঠালেন নীলনদের মধ্যে নিক্ষেপ করার জন্য। আর বলে দিলেন চিঠি খানা তিনি যখন নীলনদের মধ্যে ফেলবেন, তখন যেন এলাকার গণ্য মান্য ব্যক্তিবর্গ যারা উনাকে পানির জন্য বলেছিল, তাদেরকে সাথে করে নিয়ে যান।
চিঠিখানায় লিখা ছিল, নীলনদের প্রতি আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার ফরমান। ফরমানখানার সরাসরি ভাষা ছিল এরকম-
বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম
“এই চিঠি মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দা উমর ইবনুল খত্তাব (আলাইহিস সালাম) উনার পক্ষ হতে মিশরের নীলনদের প্রতি। হে নীলনদ! তুমি যদি নিজের ইচ্ছায় প্রবাহিত হয়ে থাকো, তাহলে তোমার পানি আমাদের কোনো প্রয়োজন নেই। আর যদি তুমি মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশে প্রবাহিত হয়ে থাকো, তাহলে মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন তোমাকে প্রবাহিত করে দেন।”
চিঠিটা যখন পৌঁছলো তখন বাদ আছর। যারা ঈমান এনেছেন উনারা বিষয়টা বুঝতে পারলেন; কিন্তু যারা ঈমান আনেনি তারা আশ্চর্যান্বিত হলো, যে ব্যাপারটা কি? যিনি আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি মদিনা শরীফ হতে নীলনদের জন্য একটা চিঠি পাঠিয়েছেন। নীলনদ কি কারও কথা শুনে!? নাকি পড়াশুনা জানে যে সে চিঠিতে কি বলা হয়েছে তা বুঝতে পারবে!? অনেক লোক জমা হলো নীলনদের তীরে। মাগরিবের পূর্বে হযরত আমর ইবনে আস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি সেই পাতলা চামড়ার মধ্যে লিখিত চিঠিখানা নীলনদে নিক্ষেপ করলেন। সেই সময় নীলনদ সম্পূর্ণ শুকনো ছিল। তার যমীনটা পর্যন্ত ফাটা।
ইতিহাসে বর্ণিত রয়েছে, তিনি যখন চিঠিখানা নীলনদের বুকে নিক্ষেপ করলেন; তখন পাতলা চামড়ার চিঠিখানা বাতাসে দুলতে দুলতে গিয়ে নীলনদের যমীন স্পর্শ করলো। চিঠিখানা নীলনদের খরায় ফেটে যাওয়া যমীন স্পর্শ করা মাত্রই বিকট একটা শব্দ হলো এবং একলাফে পানি ১৬ হাত হয়ে গেলো। সুবহানাল্লাহ! এই অভুতপূর্ব ঘটনা দেখে অনেক লোক যারা তখনও মুসলমান হয়নি তারা মুসলমান হয়ে গেলো। সুবহানাল্লাহ! সেদিন থেকে নীলনদে কুমারী উৎসর্গ করার জাহিলী যুগের কুফরি প্রথা চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে গেলো। সুবহানাল্লাহ!