মুসলমানরা আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা: কৃষিতে মুসলমানদের অবদান
, ২রা রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৮ ছালিছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৭ আগস্ট, ২০২৫ খ্রি:, ১২ ভাদ্র, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) বিজ্ঞান মুসলমান উনাদেরই অবদান
মুসলমানদের সফল কৃষি বিপ্লবের মূলসূত্র:
মুসলমানরা ব্যাপকভাবে অর্থকরী ফসলায়ন এবং আধুনিক ফসলাবর্তন পদ্ধতি অবলম্বন করতেন। কোনো জমিতে দুই বছর সময়ের মধ্যে চার বা ততোধিক ফসল উৎপাদন করার পদ্ধতিই হচ্ছে ফসলাবর্তন পদ্ধতি। মুসলমানরা ১) ফসলাবর্তনের বাস্তবসম্মত পদ্ধতি, ২) সুউন্নত সেচ কৌশল, ৩) বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন শস্যের আবাদ এই তিনটি প্রধান উপাদানের উপর ভিত্তি করে একটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির বিকাশ ঘটান। এই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিটি শস্য উৎপাদনের ঋতু, জমির ধরণ এবং পানির প্রাপ্যতার উপর ভিত্তি করে ব্যবহৃত হয়। চাষাবাদ এবং উদ্ভিদবিদ্যা বিষয়ে অত্যন্ত নিখুঁত ও বিশদ বিবরণ সম্বলিত অনেক বিশ্বকোষ রচিত হয়েছে।
মুসলমানরা চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় চালু করেন যা কৃষি বিপ্লবের সূচনা করে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় চারটি হলো-
১) সেচ পদ্ধতি উন্নয়ন: নরিয়া (ناعورة), পানিযন্ত্র, বায়ুযন্ত্র, পানি উত্তোলন যন্ত্র, বাঁধ ও পানিআধার ব্যবহারের মাধ্যমে বাস্তবসম্মত সেচ পদ্ধতি উন্নয়ন।
মুসলমানরা এই প্রযুক্তি আবাদ উপযোগী অনাবাদি জমিতে ব্যাপকভাবে বিস্তার ঘটান। পরবর্তীকালে এই পানি ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি বিশ্বের অন্যান্য অংশেও ছড়িয়ে পড়ে।
২) চাষাবাদের সব ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির অভিযোজন: চাষাবাদের সব ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে অগ্রসর হওয়ার প্রচেষ্টা চাষাবাদ প্রযুক্তির উন্নয়নে কার্যকরী ভূমিকা রেখেছিলো। আর এই বৈজ্ঞানিক প্রচেষ্টা এরকম ছিলো যে, সারা বিশ্ব থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ ও একত্র করা। মুসলিম বিশ্বের আনাচে কানাচে চাষাবাদের জন্য নির্দেশিকা বই (ঐধহফনড়ড়শ) প্রস্তুত করা হয়েছিলো। এই নির্দেশিকা বইতে কোথায়, কখন ও কিভাবে বিভিন্ন শস্য লাগাতে বা জন্মাতে হবে তার বিশদ বিবরণ ছিলো। নতুন নতুন ফসল ও পশু প্রজাতি সম্পর্কে নতুন স্থানে উক্ত ফসল ও পশু প্রজাতিকে অভিযোজিত করিয়ে দেয়ার জন্য স্পেনের উদ্ভিদ বিজ্ঞানী ইবনে বাইতার (১১৯৭-১২৪৮ খ্রিস্টাব্দ) উনার মত ব্যক্তিত্ব উন্নতমানের বৈজ্ঞানিক কৌশল প্রচলন করেন।
৩) ভূমি মালিকানা ও শ্রম অধিকারের একটি নতুন পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে উৎসাহ ভাতা প্রদান। ব্যক্তিগত মালিকানার স্বীকৃতি এবং কৃষকদেরকে ফসল ভাগের সময় তাদের কর্ম প্রচেষ্টার সমানুপাতিক প্রতিদান প্রদান- এই দুইয়ের সমন্বয়ে ভূমি মালিকানা ও শ্রম অধিকারের এই নতুন দৃষ্টিভঙ্গি বা পদ্ধতির উদ্ভব ঘটে। এর বিপরীতে ইউরোপ একটি সামন্ততন্ত্রের অধীনে তখন তারা সংগ্রাম করে যাচ্ছিলো। আর এই সামন্ততন্ত্রের অধীনে কঠোর শ্রম নিয়োগ করেও অতি সামান্যই উন্নতি হচ্ছিলো।
৪) নতুন নতুন শস্যের চাষাবাদের ফলে ব্যক্তিগত ফসলায়নকে আন্তর্জাতিক শিল্পে পরিণত করেছে। ফলে এই নতুন নতুন শস্যের চাষাবাদ ইউরোপসহ পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বিস্তার লাভ করে। অথচ উক্ত স্থানগুলোয় শুধু বহু পূর্বে মধ্য এশিয়া হতে আসা প্রাপ্ত গমের আবাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো।
স্পেন বিভিন্ন ফসল ও ফল উৎপাদন প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন নতুন উদ্ভিদ, ফল ও সবজী পালাক্রমে ইউরোপের বাকি অংশে প্রেরণ করেছিলো এবং তারা নিজেরাও তা গ্রহণ করেছিলো।
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মুসলমানদের সমস্ত কিছু চুরি করেই কাফির-মুশরিকরা আজ বিজ্ঞানী সেজেছে
২২ আগস্ট, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মুসলমানরা আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা: পদার্থ বিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদান
২৫ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মুসলিম স্বর্ণালী যুগের লাইব্রেরির ধরণ ও পরিচালনা
২৩ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মুসলিম স্বর্ণালী যুগের লাইব্রেরির ধরণ ও পরিচালনা
১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আর্দ্রতার সাথে গরম ঠান্ডা অনুভূতি
১৬ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মুসলিম স্বর্ণালী যুগের লাইব্রেরির ধরণ ও পরিচালনা
২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দ্বিতীয় আল হাকামের গ্রন্থাগার
২২ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আমীরুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার কর্তৃক জ্ঞান-বিজ্ঞানসহ প্রভূত ক্ষেত্রে সৌন্দর্য্য বর্ধন ও শৃঙ্খলাবদ্ধ করণ (২)
২১ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আমীরুল মু’মিনীন, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার কর্তৃক জ্ঞান-বিজ্ঞানসহ প্রভূত ক্ষেত্রে সৌন্দর্য্য বর্ধন ও শৃঙ্খলাবদ্ধ করণ (১)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি জ্ঞান-বিজ্ঞানসহ পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার সম্মানিত মুকুটস্বরূপ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
কায়রোর ‘দারুল হিকমাহ’
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি জ্ঞান-বিজ্ঞানসহ পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার সম্মানিত মুকুটস্বরূপ
১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












