সউদীর কথিত রাজপরিবার: কে তাদের প্রকৃত পূর্বপুরুষ? সত্যিই কি সউদী রাজ পরিবার “আনজা বিন ওয়াইল” গোত্রের সদস্য, যা তারা দাবি করে থাকে? তারা কি প্রকৃতপক্ষে দ্বীন ইসলামের অনুসারী? আসলেই কি তারা আরব বংশোদ্ভূত?

উপরের প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর সউদীর কথিত রাজ পরিবারের অনেক দাবির উপর কলঙ্ক আরোপ করবে এবং যুক্তির দ্বারা অনেক মিথ্যা উদ্ধৃতি খ-ন করবে। অপরদিকে মুনাফিকরা তাদের বিবেক বুদ্ধি বিক্রি করে দিয়ে, প্রকৃত সত্য গোপন করে সউদী রাজ পরিবারের মিথ্যা ইতিহাস রচনা করেছে। উচ্ছিষ্টভোগী কিছু সাংবাদিক এবং ঐতিহাসিক সামান্য কিছু আর্থিক আনুকূল্যের কারণে সউদী ওহাবী পরিবারের বংশানুকূলের পরিচয়কে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র নসব মুবারকের সাথে যুক্ত করেছে। নাঊযুবিল্লাহ! এ সকল মিথ্যা তথ্য প্রদানকারীরা বলতে চায়, এই সউদী শাসকরা হচ্ছে পৃথিবীতে মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে মনোনীত খলীফা। নাঊযুবিল্লাহ! এটা অত্যন্ত স্পষ্ট যে, এ সকল তোষামোদির মূল কারণ হচ্ছে সউদী রাজ পরিবারের অপরাধ, নৃশংসতাকে জায়িয করার লক্ষ্যে সমর্থন আদায় করা, যাতে তাদের সিংহাসন অটুট থাকে এবং তাদের স্বেচ্ছাচারিতার সুযোগগুলো যেন হাতছাড়া হয়ে না যায়। অথচ তাদের এ সকল কর্মকা-, স্বৈরাচারী মানসিকতা দ্বীন ইসলাম সম্মত নয় বরং ইহুদীবাদের প্রতীক।

দ্বীন ইসলামে রাজতন্ত্রের কোন সুযোগ নেই। কোন ব্যক্তি বা তার পরিবারের যে কোন সদস্যের চাপিয়ে দেয়া শাসন ব্যবস্থা হচ্ছে রাজতন্ত্র, যা সাধারণ মানুষের অধিকারকে দমিয়ে রাখে এবং রাজার স্বৈরাচারী এবং স্বেচ্ছাচারী শাসনের বিরুদ্ধে যে কোন সরব বক্তার বাক রুদ্ধ করে। পবিত্র কুরআন শরীফে তাদের সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, ‘রাজা-বাদশাহরা যখন কোন জনপদে প্রবেশ করে, তখন তাকে বিপর্যস্ত করে দেয় এবং সেখানকার সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিবর্গকে অপদস্থ করে। তারাও এরূপ করবে।’ (সূরা নমল শরীফ: আয়াত শরীফ ৩৪)

অথচ এই সউদী ওহাবী পরিবার পবিত্র কুরআন শরীফ উনার হুকুমকে প্রকাশ্যে উপক্ষো করে আবার দৃঢ়তার সাথে মিথ্যা দাবিও করে যে, তারা হচ্ছে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার সঠিক অনুসারী। নাঊযুবিল্লাহ! সউদী সরকারের তরফ থেকে নিষেধাজ্ঞা আছে, মিডিয়ায় পবিত্র কুরআন শরীফ উনার পবিত্র সূরা নমল শরীফ উনার ৩৪ নম্বর পবিত্র আয়াত শরীফ যেন তিলাওয়াত করা না হয়। শুধু তাই নয়, যে কোন প্রকাশনায়, জার্নালে, লেখায় এই আয়াত শরীফের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সউদী রাজ পরিবার ভীত যে, এই পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তিলাওয়াত এবং প্রচারণা তাদের রাজতন্ত্রের ভিত নাড়িয়ে দিতে পারে। কারণ উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘রাজা-বাদশাহরা যখন কোন জনপদে প্রবেশ করে তখন তাকে বিপর্যস্ত করে দেয় এবং সেখানকার সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিবর্গকে অপদস্থ করে। তারাও এরূপ করবে।’



কারা এই সউদী? এদের শেকড় কোথায়? এবং তাদের আসল উদ্দেশ্য কি?



সউদী রাজ পরিবারের সবাই ভালভাবেই অবগত যে, বিশ্বের সকল মুসলমানগণ জেনে গেছে, তাদের মূলে রয়েছে ইহুদী রক্ত। বিশ্বের সকল মুসলমান, তাদের রক্তাক্ত অতীত এবং বর্তমানের কদর্য এবং নিষ্ঠুর অত্যাচারের ইতিহাসও জেনে গেছে। বর্তমানে ইসলামের তথাকথিত লেবাস পরে তারা প্রাণপণে তাদের ইহুদী অস্তিত্ব ঢাকার চেষ্টা করে যাচ্ছে। অথচ দ্বীন ইসলাম মানুষের পোশাক নয় বরং ঈমান, আমলকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হে মানবজাতি, আমি তোমাদেরকে একজন পুরুষ ও একজন মহিলা থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিত হতে পারো। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে সেই সর্বাধিক সম্ভ্রান্ত যে সর্বাধিক পরহেযগার। নিশ্চয়ই তিনি সর্বজ্ঞ, সবকিছুর খবর রাখেন। (পবিত্র সূরা হুজুরাত শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩)

দ্বীন ইসলাম ত্যাগকারী কোন ব্যক্তি বা কাফির নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্পৃক্ততার কথা দাবি করতে পারে না। হযরত বিলাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু- যদিও তিনি ছিলেন আবিসিনিয়ার অধিবাসী এবং পরাধীন; কিন্তু দ্বীন ইসলাম উনার কারণে, মুহব্বত মুবারকের কারণে তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মর্যাদা পেয়েছিলেন। বিপরীতে আবু লাহাব কুফরীর কারণে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চাচা হওয়ার পরেও তার কোনো মর্যাদা নেই। দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে কোনো পক্ষপাতিত্ব নেই। মানুষের মুহব্বত, তাক্বওয়া, পরহেযগারীর উপর তার মাক্বাম ও মর্যাদা। কার কতটা বিত্ত, বৈভব বা কে কোন রাজ বংশের তার মাধ্যমে দ্বীন ইসলাম কাউকে মর্যাদা দেয় না।

-০-