সুওয়াল-জাওয়াব:
মূর্তি-ভাস্কর্য দ্বীন ইসলামে নিষিদ্ধ
, ১৭ ছফর শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৫ ছালিছ, ১৩৯২ শামসী সন , ২৩ আগষ্ট, ২০২৪ খ্রি:, ০৮ ভাদ্র , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) শিক্ষামূলক জিজ্ঞাসা
সুওয়াল:
এক মুনাফিক কিছু বাতিল ও মনগড়া দলীল জোগাড় করে মূর্তিকে জায়িয প্রমাণ করার অপচেষ্টা করেছে। তার মূল বক্তব্য হচ্ছে, যে মূর্তিকে পূজা, আরাধনা, ইবাদত করা হয়, যেটা মানুষকে মুশরিক বানায়; সেটা নিষেধ। কিন্তু যে মূর্তিকে আরাধনা ইবাদত করা হয় না বরং যে মূর্তি সৌন্দর্য বাড়ায়, সুসজ্জিত করে সেটা নিষেধ নয়।
অতএব, উক্ত ব্যক্তির এ ধরণের যুক্তি কতটুকু ইসলামসম্মত? দলীলসহ জাওয়াব দিয়ে বিভ্রান্তি নিরসন করবেন।
জাওয়াব:
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে মূর্তি বা ভাস্কর্য ও ছবি তৈরি করা, আঁকা সম্পূর্ণরূপে নাজায়িয ও হারাম। বৈধ বা জায়িয মনে করা কুফরী। অথচ উক্ত মুনাফিক লোকটি মূর্তিকে জায়িয প্রমান করার জন্য চেষ্টা করেছে এবং দলীল হিসেবে এমন কিছু বর্ণনা উল্লেখ করেছে, যা সম্মানিত দ্বীন ইসলামে মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।
প্রকাশ থাকে যে, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার শ্রেষ্ঠতম রসূল সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্মানিত হিদায়েত ও সম্মানিত দ্বীন ইসলাম দিয়ে পাঠিয়েছেন অতীতের সমস্ত দ্বীনের উপর প্রাধান্য দিয়ে। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন সকল হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত সৃষ্টির জন্য সম্মানিত নবী ও রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং উনার প্রতি সম্মানিত ওহী মুবারক দ্বারা নাযিলকৃত সম্মানিত দ্বীন ইসলামই হচ্ছেন একমাত্র মনোনীত, পরিপূর্ণ, নিয়ামতপূর্ণ ও সন্তুষ্টিপ্রাপ্ত দ্বীন এবং উনার হুকুম বা বিধানই ক্বিয়ামত পর্যন্ত বলবৎ থাকবে যা অপরিবর্তনীয়। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই, সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দ্বীন বা ধর্মের বিধান, নিয়ম-নীতি, তর্জ-তরীক্বা মুসলমানের জন্য অনুসরণীয় অনুকরণীয় বা আমলযোগ্য নয়।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ يَّبْتَغِ غَيْرَ الْاِسْلَامِ دِيْنًا فَلَنْ يُّقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِى الْاٰخِرَةِ مِنَ الْخـَاسِرِيْنَ
অর্থ: যে ব্যক্তি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ব্যতীত অন্য দ্বীন তালাশ বা গ্রহণ করবে তার থেকে তা কখনোই গ্রহণ করা হবে না বরং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের তথা জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত হবে। নাউযুবিল্লাহ! (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৮৫)
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে- হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, একদিন হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট তাওরাত শরীফ উনার একটি কপি এনে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এটি তাওরাত শরীফ উনার একটি কপি। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শুনে চুপ থাকলেন। হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি তা পাঠ করতে আরম্ভ করলেন। আর এদিকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম নূরুর রহমত (চেহারা) মুবারক লাল হতে লাগলো অর্থাৎ অসন্তুষ্টির ভাব ফুটে উঠলো। এ অবস্থা দেখে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, হে হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম! আপনার জন্য আফসুস! আপনি কি দেখছেন না যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম নূরুর রহমত (চেহারা) মুবারক কিরূপ আকার ধারণ করছে। তখন হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্রতম নূরুর রহমত (চেহারা) মুবারক উনার দিকে তাকালেন এবং অসন্তুষ্টির ভাব লক্ষ্য করে বললেন, আমি মহান আল্লাহ পাক উনার অসন্তুষ্টি থেকে এবং উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অসন্তুষ্টি থেকে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট পানাহ চাচ্ছি। আর আমরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে রব হিসেবে, সম্মানিত ইসলাম উনাকে দ্বীন হিসেবে এবং মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নবী ও রসূল হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট রয়েছি। অতঃপর মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, সেই মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! যার অধিকারে আমার প্রাণ মুবারক রয়েছে, এখন যদি আপনাদের মাঝে হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস্ সালাম (যাঁর উপর তাওরাত শরীফ নাযিল হয়েছে) তিনিও যাহির বা প্রকাশ হতেন আর আপনারা আমাকে ছেড়ে উনার অনুসরণ করতেন তথাপিও আপনারা হিদায়েত থেকে অবশ্যই বিচ্যুত হয়ে যেতেন অর্থাৎ গুমরাহ হয়ে যেতেন। এমনকি মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি যদি এখন হায়াতে থাকতেন আর আমাকে পেতেন তাহলে তিনিও অবশ্যই আমার অনুসরণ করতেন। সুবহানাল্লাহ! (দারিমী শরীফ, মিশকাত শরীফ, মিরকাত শরীফ)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
প্রসঙ্গ: হজ্জের ফরজ আদায়ে হারাম ছবি তোলাকে সাময়িক বৈধতা প্রদান....
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সুন্নতী কদমবুছি বিষয়ে কওমী মুখপত্রের শরীয়তের খেলাফ বক্তব্যের খন্ডনমূলক জাওয়াব
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কথিত ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ে শরঈ ফতওয়া (১৪)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: হজ্জের ফরজ আদায়ে হারাম ছবি তোলাকে সাময়িক বৈধতা প্রদান....
২৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৬)
২৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৫)
১৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রসঙ্গ: পুরুষ-মহিলা নামায আদায়ের ছহীহ পদ্ধতি
১১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৪)
১০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রসঙ্গ: পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন সম্পর্কে বাতিলদের মনগড়া বক্তব্য খন্ড
০৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত আদম আলাইহিস সালাম ও হযরত হাওওয়া আলাইহাস সালাম উনাদেরকে ‘নাফরমান’ বলা চরম বেয়াদবী ও কুফরী (৩)
০৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
কথিত ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ে শরঈ ফতওয়া (১০)
০২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: পবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন সম্পর্কে বাতিলদের মনগড়া বক্তব্য খন্ডন
২৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












