আজ মহিমান্বিত ফাতিহায়ে ইয়াযদাহাম শরীফ!
যা গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, মাহবুবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশের সুমহান দিবস।
পবিত্র ফাতিহায়ে ইয়াযদাহাম শরীফ উনার ফযীলত ও তাৎপর্য অনুধাবনে সরকার ও মুসলমানদেরকে অগ্রণী হতে হবে।
, ১১ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৮ খ্বমীছ ১৩৯১ শামসী সন , ২৭ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রি:, ১১ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) সম্পাদকীয়

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমরা সবাই আল্লাহওয়ালা বা ওলীআল্লাহ হয়ে যাও। ” এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার দ্বারা সাবেত হয় যে, প্রতিটি জিন-ইনসানেরই ওলীআল্লাহ হওয়ার যোগ্যতা রয়েছে। তবে তার জন্য প্রয়োজন একজন হক্কানী, রব্বানী ওলীআল্লাহ উনার পবিত্র হাত মুবারকে বাইয়াত মুবারক গ্রহণ করা। এবং পূর্ববর্তী ওলীআল্লাহ তথা ত্বরীক্বার ইমাম উনাদের প্রতি আলাদা মুহব্বত মুবারক ও শ্রদ্ধা বা নিসবত মুবারক রাখা। সুবহানাল্লাহ!
উল্লেখ্য, পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি মহান আল্লাহ পাক উনাকে এবং উনার হাবীব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং এরপরে উলিল আমর অর্থাৎ সম্মানিত ওলীআল্লাহগণ উনাদেরকে মানার কথা বলেছেন। পবিত্র রবীউছ ছানী শরীফ মাস উনার ১১ তারিখ- যিনি হযরত বড় ওলীআল্লাহগণ উনাদের মধ্যে একজন, যিনি হযরত বড়পীর ছাহেব হিসেবে মশহুর, উনার মহাপবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার সুমহান দিবস হিসেবে সম্মানিত। ফার্সী শব্দে ‘ফাতিহায়ে ইয়াযদাহাম’ শরীফ হিসেবে যে দিবসটি সবার কাছে স্মরণীয়।
আওলাদে রসূল, মুজাদ্দিদে যামান, গাউছুল আ’যম, দস্তগীর হযরত শায়েখ বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ৫৬১ হিজরী সনের পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস হতে কঠিনভাবে মারিদ্বী শান প্রকাশ করেন। ‘তাশারেখে আউলিয়া’ নামক কিতাবে রয়েছে, হযরত শায়েখ আব্দুল ফতেহ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) দিবাগত রাত্রে অর্থাৎ লাইলাতুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) রাত্রে আওলাদে রসূল গাউছুল আ’যম হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি গোসল মুবারক করেন। গোসলান্তে পবিত্র ইশার নামায পড়ে তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মতগণের গুনাহখাতা মাফের জন্য ও উনাদের উপর খাছ রহমত মুবারক নাযিলের জন্য দোয়া মুবারক করলেন। এরপর গায়েব হতে আওয়াজ আসলো, “হে প্রশান্ত নফ্স! আপনি প্রসন্ন ও সন্তুষ্টচিত্তে নিজ প্রতিপালক উনার দিকে প্রত্যাবর্তন করুন। আপনি আমার নেককার বান্দাগণ উনাদের মধ্যে শামিল হয়ে যান এবং বেহেশতে প্রবেশ করেন। ” এরপর তিনি পবিত্র কালিমা শরীফ পাঠ করে তাআয্যাযা (অর্থ বিজয়ী হয়েছেন) উচ্চারণ করতে লাগলেন এবং তিনি ‘আল্লাহ’ ‘আল্লাহ’ ‘আল্লাহ’ বললেন। এরপর জিহ্বা তালুর সাথে লেগে গেল। এইভাবে ৫৬১ হিজরী সনের পবিত্র রবীউছ ছানী শরীফ মাস উনার ১১ তারিখে মাহবুবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, আওলাদে রসূল, গাউছুল আ’যম, মুহিউদ্দীন হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার মহান দরবার শরীফ উনার দিকে প্রত্যাবর্তন করলেন। (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন)।
স্বভাবতই এ দিনের যে তাৎপর্য হাছিলে আমাদেরকে অনুপ্রাণিত হতে হবে, তা হলো- ক্বলব পরিশুদ্ধকরণ তথা ইলমে তাছাউফ অর্জন।
উল্লেখ্য, পৃথিবীর ইতিহাসে তাবৎ উলিল আমরগণ উনাদের মাঝে গাউছুল আযম, মাহ্বুবে সুবহানী, কুতুবে রব্বানী, হযরত শায়েখ বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এক বেমেছাল দৃষ্টান্ত। স্বীয় চলার পথে শয়তানের হাজারো ওয়াস্ওয়াসা যাকে করতে পারেনি চুল পরিমাণ বিচ্যুত। অথচ সেক্ষেত্রে শয়তানের নিজস্ব স্বীকারোক্তিতেই বিবৃত হয়েছে যে, “সে তার ওয়াস্ওয়াসার ফাঁদে ফেলে শত শত আলিম-দরবেশকে বিভ্রান্ত করেছে, হালাল ছুরতে হারাম মত-পথে পরিচালিত করে তাদেরকে যেমন গুমরাহ করেছে, তেমনি তাদের হাজার হাজার অনুসারীদেরও একইভাবে পথহারা করেছে। ”
স্মর্তব্য, পৃথিবীর ইতিহাসে বহু বহু ওলীআল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনারা অতীত হয়েছেন, যাঁদের জীবনী মুবারকে হাক্বীক্বী সুলত্বানুল আযকারের অপূর্ব নিদর্শন ফুটে উঠেছে। আর পবিত্র রবীউছ ছানী শরীফ মাস উনার অন্যতম আলোচিত ব্যক্তিত্ব গাউছুল আ’যম, মুহিউদ্দীন, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, আওলাদে রসূল হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ছোট ইস্তেঞ্জা মুবারক পরীক্ষাকালে দেখা গিয়েছে তা কেবল সুগন্ধযুক্তই নয়, বরং প্রতিটি ফোঁটা হতে স্পষ্টরূপে ‘আল্লাহ’ ‘আল্লাহ’ যিকির ধ্বনিত হচ্ছে। হাক্বীক্বী সুলত্বানুল আযকার জারির এই অপূর্ব দৃষ্টান্তে সে সময়ে চারশত বিধর্মীর পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণই কেবল অমূল্য ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত নয়, বরং এটি অনাগতকালের জন্য এক বিশেষ নছীহত।
আক্ষেপের বিষয়, ক্বলবী যিকির জারিসহ, দশ লতিফার বিষয়, সুলত্বানুল আযকার, বেলায়েতের বিভিন্ন মাক্বাম হাছিল করা ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে আজকে আমাদের মূল্যবোধ একেবারেই শূন্যের কোঠায়।
যাবতীয় নামধারী জাহিরী মালানাগং তথা তাবৎ উলামায়ে সূ’রা এ বিষয়ে বিশেষ গাফলতী ছাড়াও, তল্পীবাহক সিলসিলাধারীর বর্তমান অযোগ্য উত্তরসূরিদেরও এ বিষয়ে বিশেষ দখলহীনতা সামগ্রিকভাবে আমাদের জাতীয় জীবনে ক্বলবী যিকির থেকে সুলত্বানুল আযকার, কাশফ, কারামত ইত্যাদি সম্পর্কে কাঙ্খিত আলোড়ন তথা আবেদন সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হয়েছে।
বলাবাহুল্য, আজ ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত এদেশে, রাষ্ট্রদ্বীন পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার এদেশে গাউছুল আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, মাহবুবে সোবহানী, কুতুবে রব্বানী হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কোনো মূল্যায়ন নেই। নাঊযুবিল্লাহ! অথচ উনি পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার অন্যতম তরীক্বা- সম্মানিত ক্বাদেরিয়া তরীক্বা উনার সম্মানিত প্রতিষ্ঠাতা। কাজেই উনার মূল্যায়ন ব্যতিরেকে কোনো দেশে রাষ্ট্রদ্বীন পবিত্র দ্বীন ইসলাম মূল্যায়িত হতে পারে না। এ বিষয়টি ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত এদেশের সরকার ও রাষ্ট্রদ্বীন পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার সরকারকে স্পষ্ট করে বুঝতে হবে।
মূলত, উনার মুবারক ও মহিমান্বিত জীবনের আদর্শ এটাই প্রতিপাদন করে যে- সব অপসংস্কৃতি ও অপতৎপরতা বিলুপ্ত করে সত্যিকার শান্তি ও সমৃদ্ধি পেতে হলে ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার ও উনার সম্মানিত হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের নেক ছোহবত মুবারকে রাজারবাগ শরীফে আমাদেরকে অবশ্যই আসতে হবে। ইনশাআল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি সবাইকে তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে আরো সোনালী সমৃদ্ধি সম্ভব ইনশাআল্লাহ
২১ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রসঙ্গ: রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম, মুসলমানের দ্বীনি অধিকার, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে পালনের আবহ এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের দায়।
২১ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
দৈনন্দিন ৩২ বার পবিত্র সূরা ফাতিহা শরীফ পাঠ করলেও মুসলমান কি পবিত্র সূরা ফাতিহা শরীফ শুধু পাঠের মধ্যেই আবদ্ধ থাকবে? ফিকির আর আমল কী অধরাই থাকবে?
২০ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ নামের ভয়ঙ্কর ড্রাগ আতঙ্কে সারাদেশ একান্ত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ তৎপরতা এবং জনগণের সচেতনতা দরকার
২০ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
শিশুদের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা মূলতঃ এদেশের শিশু মৃত্যু বাড়িয়ে ও প্রতিবন্ধী তৈরি করে, যা মুসলিম জনসংখ্যার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র সরকারী বেসরকারী পর্যায়ে যুৎপতভাবে এ বিষয়ে সচেতন ও সক্রিয় হতে হবে। ইনশাআল্লাহ!
১৯ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
১০ বর্গকিলোমিটার নারিকেল দ্বীপ রক্ষায় মিথ্যার বেসাতির বিপরীতে ৩ লাখ একর বেদখল বনভূমির প্রতি নিষ্ক্রীয় দর্শকের ভূমিকা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাথে সাংঘর্ষিক শহীদদের সাথে প্রতারণা পরিবেশ উপদেষ্টার সম্যক উপলব্ধি প্রয়োজন।
১৯ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বর্তমান সরকারের অরাজকতায় মধ্যবিত্তরাও এখন পুষ্টি সঙ্কটে ভুগছে মহান আল্লাহ পাক উনার রহমতমূখী প্রবণতার অভাবই এর মূল কারণ কেবলমাত্র খিলাফত আলা মিনহাজিন নুবুওওয়াহ্র পরিক্রমায় খোদায়ী রহমতে সব কিছুতে সচ্ছলতা হাছিল সম্ভব। ইনশাআল্লাহ!
১৮ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নাটক-সিনেমার মাধ্যমে মুসলিম প্রজন্মকে দ্বীন ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। পরকালের কথা স্মরণ করে মুসলিম উম্মাহকে বিধর্মীদের এসব ষড়যন্ত্র থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
১৮ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে উৎপাদন কম হলেও ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না লবণচাষীরা মধ্যস্বত্বভোগী ও সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে ইনশাআল্লাহ
১৭ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
লাখ লাখ মটর আমদানী করে দিলেন, লাখ লাখ পার্টস কিনতে দিলেন, হাজার হাজার ওয়ার্কশপ হতে দিলেন, লাখ লাখ অটো রিকশা তৈরি করতে দিলেন, চার্জের কারেন্ট দিলেন, রাস্তায় নামতে দিলেন, অনেকে ঋণ করে অটো রিকশা কিনেছে তাও জানলেন এখন ইচ্ছে হলো আর অটো রিকশা বন্ধ করে দিলেন? দিচ্ছেনা? দিবেনা? এই স্বৈরাচারিতা আর স্বেচ্ছাচারিতা এবং দায়িত্বহীনতা ও দায়বদ্ধতাহীণতার সরকার ব্যবস্থা চলবেনা, চলতে পারে না।
১৭ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
খাদ্য উপদেষ্টা ফ্যাসিস্ট হাসিনার কায়দায়ই বাংলাদেশে ৬০ লাখ টন গম আমদানির কথা বললো। আমাদের প্রশ্ন, গম আমদানি কেন? উৎপাদন বাড়ানোর পদক্ষেপ নিলে বাংলাদেশ গম রপ্তানীও করতে পারবে ইনশাআল্লাহ!
১৬ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ব্যবসার ওপর আরও চাপ আসছে, সরকারের ন্যূনতম কর প্রায় দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা এতে ক্রেতা-বিক্রেতা তথা গোটা দেশের ব্যবসা হবে ধ্বংসপ্রাপ্ত আর জনগণ হবে ভয়াবহ দুর্দশাগ্রস্ত এবং চরম দরিদ্র। সার্বভৌমত্ব হবে বিপন্ন। সঙ্গতকারণেই এখনই এর অবসান হওয়া দরকার ইনশাআল্লাহ।
১৬ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)