যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, হিন্দুদের পূজায় গিয়েছে, তাদেরকে পূজা করতে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে, সমর্থন করেছে, সম্মতি প্রকাশ করেছে, তাদের সাথে মুছাফাহা ও মুয়ানাক্বা করেছে, তাদেরকে সম্মান করেছে, তা’যীম করেছে, তাদের সম্পর্কে সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করেছে এবং সম্মানসূচক শব্দ দ্বারা সম্বোধন করেছে, বাহ বাহ দিয়েছে এবং বেশি বেশি মূর্তি তৈরী করতে বলেছে এবং বেশি বেশি পূঁজা করতে বলেছে তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (১)
, ০১ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ০১ ছানী আ’শার, ১৩৯২ শামসী সন , ৩০ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রি:, ১৭ বৈশাখ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ক্বওল শরীফ:
نَـحْمَدُهٗ وَنُصَلِّـىْ وَنُسَلِّـمُ عَلـٰى رَسُوْلِهِ الْكَرِيْـمِ وَعَلـٰى وَالِدَىْ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَلـٰى حَضْرَتْ اُمَّهَاتِ الْـمُؤْمِنِيْـنَ عَلَيْهِنَّ السَّلَامُ وَعَلـٰى حَضْرَتْ اَهْلِ بَـيْتِهِ الْكَرِيْـمِ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ. اَمَّا بَـعْدُ
যিনি খ্বাালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّـمَا يَـخْشَى اللهَ مِنْ عِبَادِهِ الْعُلَمٰؤُا
“নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দাদের মধ্যে যাঁরা আলিম উনারাই মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করেন। ”(পবিত্র সূরা ফাত্বির শরীফ: ২৮)
তাহলে এখানে দেখা যাচ্ছে, যাঁদের মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার ভীতি রয়েছেন, মহান আল্লাহ পাক উনাকে যাঁরা ভয় করেন, উনারাই হচ্ছেন আলিম। আর যাদের মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার ভীতি নেই, মহান আল্লাহ পাক উনাকে যারা ভয় করে না, এরা কখনই আলিমের অন্তর্ভুক্ত নয়। তারা যতই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ শিক্ষা করুক না কেন, এরা ওলামায়ে সূ’, দুনিয়াদার আলিমদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
আর সেটাই ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, যিনি বিশিষ্ট তাবিয়ী ইমামুশ শরীয়ত ওয়াত্ব ত্বরীক্বত হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
اِنَّـمَا الْفَقِيْهُ اَلزَّاهِدُ فِـى الدُّنْـيَا اَلرَّاغِبُ فِـى الْاٰخِرَةِ اَلْبَصِيْـرُ بِذَنْۢبِهٖ اَلْـمُدَاوِمُ عَلٰى عِبَادَةِ رَبِّهٖ اَلْوَرِعُ اَلْكَافُّ عَنْ اَعْرَاضِ الْـمُسْلِمِيْـنَ اَلْعَفِيْفُ عَنْ اَمْوَالِـهِمْ اَلنَّاصِحُ لِـجَمَاعَتِهِمْ
“ফক্বীহ্-আলিম হচ্ছেন ঐ ব্যক্তি, যিনি (১) দুনিয়া থেকে বিরাগ, (২) পরকালের দিকে রুজু, (৩) গুনাহ্রে ব্যাপারে সতর্ক, (৪) সবসময়ই মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত-বন্দিগীতে মশগুল, (৫) পরহেযগার, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক অনুসরণ করেন, (৬) মুসলমান উনাদের ইয্যত-সম্মান নষ্ট করেন না, (৭) মুসলমান উনাদের মাল-সম্পদের প্রতি লোভ করেন না এবং (৮) মুসলমান উনাদেরকে সব সময় নছীহত করেন। ” (কুওওয়াতুল কুলূব ১/২৬৩, রূহুল মা‘আনী ৬/৪৬, হাশিয়াতুত ত্বীবী ৭/৪০০, ইহ্ইয়াউ উলূমিদ্দীন ১/৬৫, ক্বওয়াইদুল ফিক্বহ্ ১/১৭১, আত তা’রীফাতুল ফিক্বহিয়্যাহ্ ১/১৬৭, কাশফুল আসরার ১/২৬, খুতবাতুল কিতাবিল মুআওওয়াল ১/১৫৬, রদ্দুল মুহ্তার ১/৮৭, আদ দুররুল মুখতার ১/৩৮, মাওসূআতু কাশশাফি ইস্তি¡লাহাতিল ফুনূন ওয়াল উলূম ১/৪১ ইত্যাদি)
এক কথায় এর অর্থ হচ্ছে- আলিম তিনিই হবেন, যিনি (১) গাইরুল্লাহ থেকে বেঁচে সব সময় মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের মুহব্বতে গরক্ব থাকবেন, (২) উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আদেশ-নির্দেশ মুবারক উনাদের প্রতি সব সময় দৃঢ় থাকবেন, (৩) কোনো অবস্থাতেই মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের আদেশ-নির্দেশ মুবারক থেকে বিচ্যূত হবেন না, (৪) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার উপর ইস্তিক্বামত থাকবেন, (৫) কখনই মুসলমান উনাদের ইয্যত-সম্মান নষ্ট করবেন না, (৬) কখনই মুসলমান উনাদের মাল-সম্পদ, ধন-দৌলত, টাকা-পয়সা, গাড়ি-বাড়ি ইত্যাদির প্রতি উনার কোনো দৃষ্টি থাকবে না, লোভ থাকবে না, মোহ থাকবে না, (৭) তিনি সব সময় মুসলমান উনাদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের দিকে ধাবিত করার জন্য নছীহতে মশগূল থাকবেন। তিনি হচ্ছেন উলামায়ে হক্ব উনাদের অন্তর্ভুক্ত।
এর খিলাফ যারা রয়েছে, তারা ওলামায়ে সূ’। অর্থাৎ ওলামায়ে সূ’দের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- (১) সে সব সময় দুনিয়াতে মশগূল থাকবে, (২) পরকালের কথা সে ভুলেও স্মরণ করবে না, (৩) সে গুনাহ্কে কখনও পরওয়া করবে না, (৪) ইবাদত-বন্দিগীতে সে গাফিল থাকবে, (৫) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক পালন করার ব্যাপারে কোনো গুরুত্বই দিবে না, (৬) সব সময় ধন-দৌলত, টাকা-পয়সা, গাড়ি-বাড়ি, পরের সম্পদ আত্মসাতের জন্য প্রতারণা করে যেভাবেই হোক সেটা হাছিলের জন্য কোশেশ করবে এবং (৭) সে মুসলমান উনাদেরকে সৎ মত, সৎ পথে ধাবিত করার জন্য নছীহত করবে না; বরং তারা মুসলমান উনাদেরকে গোমরাহী ও কুফরী-শিরকীর দিকে ধাবিত করবে। এটা হচ্ছে ওলামায়ে সূ’দের খাছলত বা বৈশিষ্ট।
(চলবে)
-মুহাদ্দিছ মুহম্মদ আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ হতে কুরবানী দেয়া প্রত্যকে উম্মতের জন্যই দায়িত্ব কর্তব্য।
১৮ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
প্রসঙ্গ: পবিত্র হজ্জ পালনের আহকাম
১৮ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
১৮ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, হিন্দুদের পূজায় গিয়েছে, তাদেরকে পূজা করতে সাহায্য-সহযোগীতা করেছে, সমর্থন করেছে, সম্মতি প্রকাশ করেছে, তাদের সাথে মুছাফাহা ও মুয়ানাক্বা করেছে, তাদেরকে সম্মান করেছে, তা’যীম করেছে, তাদের সম্পর্কে সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করেছে এবং সম্মানসূচক শব্দ দ্বারা সম্বোধন করেছে, বাহ বাহ দিয়েছে এবং বেশী বেশী মূর্তি তৈরী করতে বলেছে এবং বেশী বেশী পূজা করতে বলেছে তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (১৪)
১৮ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মসজিদে ইবাদত করতে বাধা দেয়া বা মসজিদ উচ্ছেদ করা কুফরী
১৮ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের কিছু সংক্ষিপ্ত ঘটনা ও ইবরত নছীহত (২)
১৮ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৭ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৭ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যে সকল ওলামায়ে সূ’রা মন্দির ও মূর্তি পাহারা দিয়েছে, হিন্দুদের পূজায় গিয়েছে, তাদেরকে পূজা করতে সাহায্য-সহযোগীতা করেছে, সমর্থন করেছে, সম্মতি প্রকাশ করেছে, তাদের সাথে মুছাফাহা ও মুয়ানাক্বা করেছে, তাদেরকে সম্মান করেছে, তা’যীম করেছে, তাদের সম্পর্কে সম্মানসূচক শব্দ ব্যবহার করেছে এবং সম্মানসূচক শব্দ দ্বারা সম্বোধন করেছে, বাহ বাহ দিয়েছে এবং বেশী বেশী মূর্তি তৈরী করতে বলেছে এবং বেশী বেশী পূজা করতে বলেছে তারা প্রত্যেকেই মূর্তিপূজারী ও মুশরিক হয়ে কাট্টা কাফির ও মুরতাদ হয়েছে (১৩)
১৭ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের কিছু সংক্ষিপ্ত ঘটনা ও ইবরত নছীহত (১)
১৭ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বিছাল শরীফের পরও সম্মানিত শায়েখ বা মুর্শিদ ক্বিবলা উনার প্রতি আদবের অনন্য ও নজীরবিহীন দৃষ্টান্ত
১৭ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)