সাহরী হলো বরকতময় খাদ্য।
রোযাদারদের জন্য প্রতিদিন সাহরী খাওয়া খাছ সুন্নত মুবারক (৩)
, ৮ই রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১০ আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ৯ মার্চ, ২০২৫ খ্রি:, ২২ ফালগুন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাহরী খাওয়ার জন্য নির্দেশ মুবারক প্রদান করেছেন এবং সাহরী খাওয়ার ফযীলত বর্ণনা মুবারক করেছেন:
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَسَحَّرُوْا فَاِنَّ فِى السَّحُوْرِ بَرَكَةً
অর্থ:- হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, তোমরা ‘সাহরী’ খাও। সাহরীতে অবশ্যই বরকত রয়েছে। (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ)
উপরোক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার থেকে এ বিষয়টি স্পষ্ট যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি রোযাদারদেরকে সাহরী খাওয়ার জন্য নির্দেশ মুবারক দান করেছেন। রোযাদাররা যেন সাহরী খেয়েই রোযা রাখে। কারণ সাহরীতে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে বরকত রয়েছে।
সাহরী যেহেতু বরকতময় খাদ্য তাই এ বিষয়ে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ السُّحُوْرُ أَكْلَةٌ بَرَكَةٌ فَلاَ تَدَعُوْهُ وَلَوْ اَنْ يَجْرَعَ اَحَدُكُمْ جَرْعَةً مِنْ مَاءٍ فَاِنَّ اللهَ وَمَلاَئِكَتَهُ يُصَلُّوْنَ عَلَى الْمُتَسَحِّرِيْنَ.
অর্থ:- হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “সাহরী হল একটি বরকতময় খাবার। তাই কখনো সাহরী খাওয়া বাদ দিও না। এক ঢোক পানি পান করে হলেও সাহরী খেয়ে নাও। কেননা সাহরী গ্রহণকারীদেরকে মহান আল্লাহ পাক তিনি ও উনার হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা স্মরণ করে থাকেন। অর্থাৎ সাহরী গ্রহণকারীদের উপর মহান আল্লাহ পাক তিনি রহমত বর্ষণ করে থাকেন এবং হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা সাহরী গ্রহণকারীদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকেন। ” (মুসনাদে আহমদ শরীফ-১১৪১৬)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَصْلُ مَا بَيْنَ صِيَامِنَا وَصِيَامِ اَهْلِ الْكِتَابِ أَكْلَةُ السَّحَرِ. رَوَاهُ مُسْلِمٌ
অর্থ:- হযরত আমর ইবনুল ‘আছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, আমাদের ও আহলে কিতাবদের (ইয়াহূদী ও খৃষ্টানদের) ছওমের মধ্যে পার্থক্য হলো পবিত্র সাহরীর। (মুসলিম শরীফ ১০৯৬, আবূ দাঊদ শরীফ ২৩৪৩, তিরমিযী শরীফ ৭০৯, মুসান্নাফে ‘আব্দুর রাযযাক ৭৬০২, ইবনু আবী শায়বাহ্ ৮৯১৫, আহমাদ ১৭৭৬২, ১৭৭৭১, ১৭৮০১, ইবনু খুযায়মাহ্ ১৯৪০, ইবনু হিববান ৩৪৭৭, দারিমী ১৭৩৯, আল আওসার লিত্ব ত্ববারানী ৩২০৮, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৮১১৫, ছহীহ আত্ তারগীব ১০৬৪, ছহীহ আল জামি‘ ৪২০৭, নাসায়ী ২১৬৬)।
উপরোক্ত বর্ণনা থেকে এ বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায় যে, রোযা রাখার ক্ষেত্রে সাহরী খেয়ে রোযা রাখাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক। আর সাহরী না খেয়ে রোযা রাখাটা মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক উনার খিলাফ এবং তা বিধর্মীদের সাথে তাশাব্বু হয়ে যায়। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সর্বদা সাহরী খেয়ে রোযা রেখেছেন এবং উম্মতদেরকে নির্দেশ মুবারক দিয়েছেন যে, এক ঢোক পানির মাধ্যমে হলেও যেন তারা সাহরী খেয়ে রোযা রাখে। সুতরাং খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন আমাদের সকলকে সর্বক্ষেত্রে পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার অনুসরণ-অনুকরণ, ইত্তিবা মুবারক করার তাওফীক্ব দান করেন। আমীন!
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (২)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইস্তিঞ্জার আদব ও ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করা সম্পর্কে (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইস্তিঞ্জার আদব ও ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করা সম্পর্কে (১)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রয়োজনে ছুরি এবং চাকু দিয়ে খাবার কেটে খাওয়াও মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
জুতা-মোজা ঝেড়ে পরিস্কার করে পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
চামড়ার মোজা পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০৩)
২৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘পনির’
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০১)
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












