শুধু যুবকরাই নয় এখন এনার্জি ড্রিংকসে বুদ হচ্ছে শিশুরাও কর ফাঁকি দিতে অনেক এনার্জি ড্রিংকস হয়ে গেছে কোমল পানীয় জনস্বাস্থ্য রক্ষা করতে অবিলম্বে এনার্জি ড্রিংকস বন্ধ করতে হবে
এডমিন, ২৩ ছফর শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১১ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ২৬ ভাদ্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) সম্পাদকীয়
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন নামি-দামি শপিংসহ পাড়া-মহল্লার ছোট ছোট দোকানে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন কোম্পানির এনার্জি ড্রিংকস। আর এসবের ক্রেতা ছাত্র-ছাত্রীসহ যুবক-যুবতিরা। প্রতিনিয়ত বাড়ছে এনার্জি ড্রিংকসের ক্রেতা। সরকার জেনেও নিষিদ্ধ করছে না এনার্জি ড্রিংকস।
প্রচ- গরমে তৃষ্ণা মেটানোর পাশাপাশি আড্ডা কিংবা বাসাবাড়ির যে কোনো অনুষ্ঠানে অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে এনার্জি ড্রিংকস ও সফট ড্রিংকস (কোমল পানীয়)। কেউ কেউ ভাত-গোশত, এমনকি পানির মতো গ্রহণ করেন এগুলো। স্কুলের টিফিনে শিশুদের খাবার কিংবা কোমল পানীয় দিয়ে অতিথিকে আপ্যায়ন- যেন মানুষের রীতি বা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বড়দের জন্য এগুলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, অথচ শিশুদের ক্ষেত্রে? এটি নিয়ে কেউ কি চিন্তা করেছেন?
এসব পানীয়ের প্রতি আসক্তির বিষয়টি উঠে আসে জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (নিপোর্ট) বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপে (২০২২)। সেখানে দেশের ৩০ হাজার ৩৭৫টি পরিবারের কাছ থেকে নানা ধরনের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। খাদ্য গ্রহণসংক্রান্ত তথ্য নেওয়া হয় ছয় থেকে ২৩ মাস বয়সী দুই হাজার ৫৭৮টি শিশুর কাছ থেকে। জরিপের ফলে উঠে আসে, ৩২ শতাংশ শিশু তথ্য সংগ্রহের আগের দিন কোমল পানীয় পান করেছেন। ৪৯ শতাংশ শিশু অতিরিক্ত চিনি ও লবণজাতীয় অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়েছেন।
গবেষণায় কোমল পানীয়তে উচ্চ মাত্রার সুগার ও ক্যাফেইনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এনার্জি ড্রিংকসে এর মাত্রা আরও বেশি। সেখানে বলা হয়েছে, ক্যাফেইনের জন্য বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) অনুমোদিত সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্য মাত্রা ১৪৫ পিপিএম হলেও একটি এনার্জি ড্রিংকসে এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে ৩২১.৭ পিপিএম। এ ছাড়া এক বোতল (২৫০ মিলি) কোমল পানীয়তে সিসার মাত্রা মিলেছে যথাক্রমে ০.০৫৩ ও ০.০৪৮ মিলিগ্রাম।
বেশি কোমল পানীয় খেলে শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায়। ফলে ক্যান্সারের সম্ভাবনা বহু গুণ বেড়ে যায়। বেশি ক্যাফেইন শরীরে ঢোকার ফলে তা কিডনি, মূত্রাশয় ও পাকস্থলির ক্যান্সার এবং উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি করতে পারে।
পরীক্ষা করে দেখা গেছে, আমাদের দেশে যে টয়লেট ক্লিনার ব্যবহার করা হয়, সেখানে যে মাত্রার পিএইচ (পাওয়ার অব হাইড্রোজেন) ব্যবহার হয়, কোমল পানীয়তেও একই মাত্রায় এটি আছে। গবেষণায় এটিও দেখা গেছে, টয়লেট ক্লিনার হিসেবে কোমল পানীয় ব্যবহার করলে সমানভাবে টয়লেট পরিষ্কার হয়ে যায়। তার মানে, বুঝতে হবে যে কোমল পানীয়টা শরীরের জন্য কতটুকু ক্ষতিকর।
কোমল পানীয় ও এনার্জি ড্রিংকসে ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব থাকছে, সুন্দর একটা ফ্লেভারও থাকছে। যে কারণে এটি মানুষকে আকর্ষণ করছে। মিডিয়াতেও সুন্দর ও আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে। এগুলো মানুষকে বেশি বেশি টানছে। ছোট বাচ্চারা তো বিষয়গুলো বোঝে না। বাবা-মায়ের দেওয়া টিফিনের টাকা দিয়ে ফাস্টফুডের সঙ্গে কোমল পানীয় খাচ্ছে। দুটোই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
এসব পানীয়ের বিষয়ে আমাদের মধ্যে কোনো সচেতনতা নেই। শিশুরা খাচ্ছে, বাবা-মাও দেখছেন-জানছেন, খাওয়াচ্ছেন...; কিন্তু নিষেধ করছেন না। মানে, নিজেরাও জানেন না এর ভয়াবহতা সম্পর্কে।
বিএসটিআই ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের রাসায়নিক পরীক্ষায় এ ধরনের একাধিক কোম্পানির এনার্জি ড্রিংকস ও পানীয়তে অ্যালকোহলের অস্তিত্ব পেয়েছে। কোম্পানিগুলোর শক্তির কাছে অনেক ক্ষেত্রেই আইনি ব্যবস্থা নিতে পারছে না সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো- এমন অভিযোগ রয়েছে। বিএসটিআই ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলেছে, এনার্জি ড্রিংকসের নামে এ দুটো সংস্থাতো বটেই, সরকারের কোনো সংস্থাই লাইসেন্স প্রদান করে না। অথচ এরপরও বাজারে অনেকগুলো কোম্পানির এনার্জি ড্রিংকস পণ্য রয়েছে। যার কোনোটিতে রয়েছে সরাসরি মাদকের অস্তিত্ব। অনেক বেভারেজ কোম্পানির পানীয়তে অ্যালকোহল না মিললেও রয়েছে ক্যাফেইন ও একান্তবাস উত্তেজক সিনডেনাফিল সিট্রেইট। যা নিয়মিত পানে অঙ্গহানীসহ দুরারোগ্য ব্যাধির ঝুঁকি রয়েছে।
মূলত, মাদকের বিরুদ্ধে একসময় জনগনের মধ্যে একপ্রকার অনুভূতি জাগ্রত ছিলো। যা আজ নেই। তাই সরকারি উদ্যোগে এই এনার্জি ড্রিংকস নামক মাদকের বিরুদ্ধে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার আলোকে প্রচারণা এবং দেশের জনগণের মধ্যে ঈমানী চেতনা জাগ্রত করতে হবে। মাদকবিরোধী ইসলামী মূল্যবোধকে জাগ্রত করতে হবে।
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)